ট্রেডমিলে হাঁটতে হাঁটতে বাজেট বানিয়েছি। ইন্ডিয়া টুডে কনক্লেভে সাংবাদিক রাহুল কানওয়ালকে জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। তারপর অনেকেই প্রশ্ন তোলেন, বাজেটের মত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় কী ভাবে ট্রেডমিলে হাঁটতে হাঁটতে বানিয়ে ফেললেন মুখ্যমন্ত্রী?
এবার এই ইস্যুতে সরাসরি মমতা ব্যানার্জিকে সমর্থন করলেন সাহিত্যিক সঙ্গীতা ব্যানার্জি। শনিবার সকাল ১১ টা নাগাদ সঙ্গীতা ব্যানার্জি ফেসবুকে একটি পোস্ট করেন। তাতে তিনি মমতার মন্তব্যকে সমর্থন করে লেখেন, শরীরকে যদি কোনও রিপিটেটিভ মুভমেন্টে রাখা যায় বা এমন কোনও কাজ করা যায় যার জন্য মেধার ব্যবহার করতে হয় না বা অভিজ্ঞতার ব্যবহার করতে হয় না, তখন মন একটা অন্য পর্যায়ে গিয়ে অনেক স্মুদলি চিন্তা করতে সক্ষম হয়।
সঙ্গীতা নিজেও এই পদ্ধতি অবলম্বন করেন বলে জানিয়েছেন। রান্নাবান্না, তরকারি কোটা, এমন কী স্নান করার সময়ও তাঁর মাথায় অনেক লেখার পরিকল্পনা ও প্লট আসে বলে জানিয়েছেন লেখিকা। ব্যাপারটি আরও সহজে বোঝানোর জন্য সঙ্গীতা ব্যানার্জি টেনে এনেছেন আর্কিমিদিসের সূত্র আবিষ্কারের কথা। স্নান করার সময় বাথটবে বসেই ইউরেকা ইউরেকা বলে চেঁচিয়ে উঠে রাজার কাছে দৌড়েছিলেন এই বিজ্ঞানী।
সঙ্গীতা ব্যানার্জি লিখেছেন, উনি যেটা বলেছেন সেটা কোনওমতে অসত্য বলে মনে করি না। ভাবনাগুলো নিশ্চয়ই তখন এসেছে। পরে কাগজে বসিয়ে নিয়েছেন বা আমলাদের নিয়ে বসে আলোচনা করেছেন।
শেষে সঙ্গীতা ব্যানার্জি লিখেছেন, মনে রাখবেন আমরা কেউই extraterrestrial বা ভিনগ্রহের প্রাণী নই।
শহরে আয়োজিত ইন্ডিয়া টুডে কনক্লেভে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির সামনে রাজ্য বাজেট প্রসঙ্গ তুলে ধরেন সঞ্চালক রাহুল কানওয়াল। মুখ্যমন্ত্রী জানান, ট্রেডমিলে হাঁটতে হাঁটতে এবারের বাজেট বানিয়েছেন তিনি। সঞ্চালক পাল্টা প্রশ্ন করেন, ট্রেডমিলে হাঁটতে হাঁটতে কীভাবে বাজেট বানানো সম্ভব?
মমতার জবাব ছিল, আমি হাঁটলে আমার ব্রেনও সঙ্গে হাঁটে।
যে কোনও জনসভায় এক জায়গায় দাঁড়িয়ে ভাষণ দেন না মমতা। তিনি বরাবরই ভাষণ দেওয়ার সময় মঞ্চের এদিক থেকে ওদিক একটানা পায়চারি করতে থাকেন। হাঁটা বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর বড্ড প্রিয়। শরীরচর্চা করার জন্য তিনি এইভাবে হাঁটেন কিনা প্রশ্ন করা হলে মুখ্যমন্ত্রী জানান, ভাষণ দেওয়ার সময় আমি উপস্থিত সকলকেই সম্বোধন করি। দর্শক আসনের প্রত্যেকের চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বলা আমার অভ্যাস।
রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের প্রাত্যহিক জীবনযাপন নিয়ে সকলের কৌতুহল। মমতার কথা মতন, প্রতিদিন ১২ কিলোমিটার ট্রেডমিলে হাঁটার জন্য তাঁর লেগে যায় অন্তত ২ ঘণ্টা। সকাল ৭টা থেকে ৯টা পর্যন্ত ট্রেডমিলে হাঁটেন তিনি। হাঁটতে হাঁটতেই খবরের কাগজ পড়েন। মোবাইলও ঘাটেন। মেসেজ করেন। সেইসঙ্গে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ভাবনাচিন্তাও চলতে থাকে একইসঙ্গে। সবটাই ট্রেডমিলে হাঁটতে হাঁটতেই।
Comments are closed.