পুরুলিয়া: বিধায়কের বিজেপি যোগের পরেও জয়ের লক্ষ্যে অবিচল বাম-কংগ্রেস জোট, সদরে সম্ভাব্য কংগ্রেস প্রার্থী হাঁদু ব্যানার্জি
বাম-কংগ্রেস জোটের তুরুপের তাস হয়ে উঠতে পারেন হাঁদু দা
গত লোকসভা নির্বাচনে পুরুলিয়ায় বিজেপির কাছে বড়ো ধাক্কা খেয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস, পাড়ার মোড়ে মোড়ে চায়ের দোকানে বাম-কংগ্রেস জোটের অস্তিত্ব নিয়ে জোর জল্পনা। ঠিক সেই সময় পুরুলিয়া বিধানসভা কেন্দ্রে ২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে দেখা যাচ্ছে এক ভিন্ন চিত্র।
গত ১৯ শে ডিসেম্বর পুরুলিয়া বিধানসভার বাম-কংগ্রেস জোটের নির্বাচিত বিধায়ক তথা পুরুলিয়া পৌরসভার বিরোধী দলনেতা সুদীপ মুখার্জির কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর মেদিনীপুরের জনসভায় বিজেপিতে যোগদান পুরুলিয়া জেলায় বাম-কংগ্রেস জোটের কাছে এক জোর ধাক্কা। গত পুরসভা নির্বাচনে পুরুলিয়া পৌরসভাতে বামফ্রন্টের কাউন্সিলর সংখ্যা শূন্য, কংগ্রেসের টিকিটে জেতার পরে নির্বাচিত বিরোধী দলনেতা বিভাস রঞ্জন দাস সহ একাধিক কাউন্সিলর বছর খানেক আগে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করেছেন, সেই সময় গড় ধরে রাখতে বাম-কংগ্রেস জোটের তুরুপের তাস হয়ে উঠতে পারেন হাঁদু দা, প্রদেশ কংগ্রেসের সম্পাদক শ্রী পার্থপ্রতিম ব্যানার্জি।
ছোটনাগপুর মালভূমির ডিসেম্বরের কনকনে ঠান্ডাতে পুরুলিয়া জেলা তথা সদর শহরে পার্থ প্রতিম ব্যানার্জির নেতৃত্বে এক উষ্ণ রাজনৈতিক আবহ তৈরি করেছেন পুরুলিয়া বিধানসভার বাম-কংগ্রেসের ছাত্র-যুব কর্মীরা।
দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে পুরুলিয়া জেলাতে কংগ্রেসের রাজনীতির সাথে যুক্ত বছর পঞ্চাশের অকৃতদার পার্থপ্রতিম ব্যানার্জি শহর তথা জেলাবাসীর কাছে পরিচিত হাঁদু দা নামে। মানভূম ভিক্টোরিয়া ইনস্টিটউশনের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক শ্রী বিশ্বনাথ ব্যানার্জির কনিষ্ঠ পুত্র পার্থপ্রতিম একসময়ে ২০০০এর গোড়ার দিকে প্রবল বাম আমলে পুরুলিয়া শহর কংগ্রেসের সভাপতি হলেও, তখন থেকেই দল-মত নির্বিশেষে সমাজসেবাই তাঁর জীবনের মূল পাথেয় ছিল। ব্যবসায়ী পার্থপ্রতিম ব্যানার্জি বা কংগ্রেস কর্মীদের প্রিয় হাঁদু দা তখন থেকেই সব দলের কর্মীদের দাদা হয়ে গিয়েছিলেন।
এরপরে কংসাবতী দিয়ে যত জল গড়িয়েছে পুরুলিয়া শহর ছাড়িয়ে হাঁদু দা ক্রমে জেলা রাজনীতি পেরিয়ে পাড়ি দিয়েছেন রাজ্য-রাজনীতিতে। প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির সদস্য থেকে প্রদেশ কংগ্রেস সম্পাদক নির্বাচিত পার্থপ্রতিম ব্যানার্জিকে তিন দশকের বেশি রাজনৈতিক জীবনে কোনও দিন পৌরসভা থেকে শুরু করে বিধানসভা-লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থী হতে দেখা যায়নি।
দলীয় বিধায়কের দলত্যাগের পরেই হঠাৎ অন্তর্মুখী পার্থপ্রতিম ব্যানার্জিকে প্রার্থী হওয়ার জন্য জোরাজুরি শুরু করেন বাম-কংগ্রেসের কর্মীরা। শুরু হয়ে যায় নতুন বছরে শহরবাসীকে পার্থপ্রতিম ব্যানার্জির নামাঙ্কিত ক্যালেন্ডার বিতরণ। দলীয় কর্মী সম্মেলনে বিজেপি থেকে বিক্ষুব্ধ নেতা, কর্মীদের যোগদান অক্সিজেন যুগিয়েছে বাম-কংগ্রেস শিবিরকে। শহর তথা বিধানসভার বিভিন্ন মোড়ে স্থানীয় ছাত্র-যুবকদের চাকরির দাবিতে পার্থপ্রতিম ব্যানার্জি সহ কংগ্রেস নেতৃত্বের ছবি সহ পোষ্টার, বিভিন্ন ক্লাব সংগঠনের সাথে যুক্ত থেকে রক্তদান শিবির থেকে সদ্য প্রয়াতা মাতৃদেবীর স্মৃতিতে দুঃস্থ মানুষদের শীতবস্ত্র প্রদান সহ বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠান ও বিয়েবাড়িতে হাজির হাঁদু দা।
Comments are closed.