একুশের ভোটে হারের পর থেকেই কার্যত গোষ্ঠী দ্বন্দ্বে জেরবার রাজ্য বিজেপি। আর সম্প্রতি দুই কেন্দ্রে ভোটে ভরাডুবির পর সেই দ্বন্দই আরও তীব্র আকার নিল। এতদিন আকার ইঙ্গিতে সুকান্ত শিবিরকে নিজের অসন্তোষ জানান দিলেও বৃহস্পতিবার প্রকাশ্যে রাজ্য সভাপতিকে নিয়ে মন্তব্য করলেন প্রাক্তন। দলে একের পর এক নেতার ইস্তফা প্রসঙ্গে বৃহস্পতিবার দিলীপ ঘোষ বলেন, সুকান্তর অভিজ্ঞতা কম, উনি সবে দায়িত্ব পেয়েছেন। সেই সঙ্গে দিলীপের তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য, যোগ্য লোকেদের বাদ দিলে তো হবে না। আর দলের সর্ব ভারতীয় সহ সভাপতির মন্তব্যে সুকান্ত মজুমদারের প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, বিজেপির কোনও নেতার মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে আমি কোনও উত্তর দিই না।
রাজনৈতিক মহলের মতে, সুকান্ত মজুমদার দায়িত্ব পাওয়ার পরে রাজ্য কমিটিতে বেশকিছু রদবদল করেন। যাতে বাদ পড়েন দলের পুরোনো নেতা তথা দিলীপ ঘোষের গোষ্ঠীর বলে পরিচিত, সায়ন্তন বসু, রীতেশ সহ বেশ কয়েকজন। রাজ্যে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না বলে অনেক আগে থেকেই সরব হয়েছেন বিজেপির আরেক সাংসদ লকেট চ্যাটার্জি। যা নিয়ে রাজ্য বিজেপির ‘আদি-নব্য’ গোষ্ঠীর মধ্যে একটা দ্বন্দ্বের আগুন জ্বলছিলই। উপনির্বাচনে হারের পর সেই আগুনেই যেন ঘী সংযোগ হয়েছে। পুরোনো নেতাদের দায়িত্ব থেকে সরানো প্রসঙ্গে কোনও রাখঢাক না করে এদিন দিলীপ ঘোষ বলেন, এতদিন যাঁরা আন্দোলন করেছেন তাঁদের গুরত্ব দেওয়া উচিত। দলের এই পুরোনো নেতাদের উপর বিশ্বাস করেই মানুষ রাস্তায় নেমেছেন। ওঁদের ভুলে গেলে চলবে না।
উল্লেখ্য উপনির্বাচনে হারের পরই রাজ্য নেতৃত্বকে কার্যত তোপ দেগেছিলেন বিষ্ণুপুরের সাংসদ সৌমিত্র খাঁ, জাতীয় সম্পাদক অনুপম হাজরার মতো নেতৃত্ব। সৌমিত্র খাঁ বলেন, বিজেপির উচিত তৃণমূলের কাছ থেকে শেখা, সেই সঙ্গে তাঁর দাবি এই অবস্থায় দলকে চাঙ্গা করতে চাই দিল্লি দাওয়াই। আর অনুপম বলেছিলেন, রাজ্য নেতৃত্ব তৃণমূল স্তরের কর্মীদের কথা শুনতে চাননা। সেই সময় সরাসরি কিছু না বললেও অনুপমদের অভিযোগকে সমর্থন জানিয়েছিলেন দিলীপ ঘোষ। আর এদিন প্রকাশ্যেই সুকান্ত মজুমদারকে নিয়ে তাঁর মন্তব্য ঘিরে ফের একবার বিজেপির অন্তর্দ্বন্দ নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে আলোচনা শুরু হয়েছে।
Comments are closed.