ডাউন সিনড্রোমকে থোড়াই কেয়ার, বাবার হাত ধরে এভারেস্ট জয়ের পথে ৭ বছরের খুদে 

দরকার মনের জোর আর পাহাড় প্রমাণ আত্মবিশ্বাস। তাহলেই সব অসম্ভব সম্ভবে পরিণত হয়। বহু প্রচলিত এই কথাগুলি ফের একবার সত্যি করে দেখাল ইন্দোরের বাবা ছেলের জুটি। সাত বছরের খুদে অবিনাশ তিওয়ারিকে সঙ্গে নিয়ে এভারেস্টে চড়ছেন পেশায় তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী আদিত্য তিওয়ারি। বাবা ছেলের জুটির কাজে হতবাক গোটা বিশ্ব। 

জন্ম থেকেই আর পাঁচটা বাচ্চার থেকে আলাদা অবিনাশ। শরীরের বয়স বাড়লেও  মনের বয়স বাড়েনি। চিকিৎসকদের কথায় অবিনাশ ডাউন সিনড্রোমে আক্রান্ত। কিন্তু তাতেও দমে যাননি বাবা আদিত্য তিওয়ারি। একরত্তিকে সঙ্গে  নিয়েই স্বপ্ন দেখেছিলেন এভারেস্ট জয়ের। ভাবনা মাথায় আসাতেই ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে কোমর বেঁধে নেমে পড়লেন আদিত্য। শুরু করে দিলেন পৃথিবীর সর্বচ্চ শৃঙ্গ জয়ের প্রস্তুতি। অবিনাশকে সঙ্গী করে এপ্রিলের ১৩ তারিখ যাত্রা শুরু করেছেন আদিত্য। 

সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া এক সাক্ষৎকারে আদিত্য জানিয়েছেন, যাত্রা শুরুর ৬ মাস আগে থেকে আমরা প্রস্তুতি নিতে শুরু করি। আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে যাত্রাপথে প্রত্যেকটি ক্যাম্পে দুই থেকে তিন দিন থাকব। তারপর অবিনাশের শারীরিক অবস্থা দেখে আবার চড়া শুরু করব। তিনি আরও বলেন, গাইড এবং শেরপাও সঙ্গে রাখছি আমরা, সেই সঙ্গে এয়ার লিফ্ট সাপোর্টেরও ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে অবিনাশের শরীরের কথা ভেবে। 

এভারেস্টের যে বেস ক্যাম্পের উদ্দেশ্যে আদিত্যরা রওনা দিয়েছেন, সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে তার উচ্চতা ৫,৩৬৪ মিটার। আদিত্যর কথায়, ডাউন সিমড্রমে আক্রান্ত কোনও শিশু এর আগে ওই উচ্চতায় পৌঁছাননি। যদিও এই প্রথম নয়, এর আগেও জীবনে একাধিকবার ছক ভেঙে নজির সৃষ্টি করেছেন আদিত্য। মাত্র ২৬ বছর বয়েসে অবিনাশকে দত্তক নিয়েছেন তিনি। একজন সিঙ্গেল ফাদার হিসেবে অবিনাশকে দত্তক নিতেও দীর্ঘ আইনি লড়াই করেছেন। অবশেষে ২০১৬ সালে অবিনাশকে দত্তক নেন তিনি। 

কিন্তু এত ঝুঁকি নিয়েও কেন এই এভারেস্ট অভিযান? আদিত্য জানাচ্ছেন, বিশেষভাবে সক্ষম শিশুদের নিয়ে সমাজের তথাকথিত ধারণা পাল্টাতে চান তিনি। প্রমাণ করতে চান, বিশেষভাবে সক্ষমরাও ট্রেকিংয়ের মতো কাজ বাকিদের মতোই করতে সক্ষম। এর আগেও ছেলে অবিনাশকে নিয়ে জম্মু কাশ্মীরের গুলমার্গ, পেহেলগাঁওতে গিয়েছেন আদিত্য, পাড়ি দিয়েছেন লাদাখেও।    

 

Comments are closed.