জলে কুমির ডাঙ্গায় বাঘ এর মতো অবস্থায় দাঁড়িয়ে জল থেকে কাঁকড়া তুলে আনেন গীতা মল্লিক! নিজের জীবন সংগ্রামের এক অনবদ্য অধ্যায় দর্শকদের সাথে শেয়ার করেন দিদি নাম্বার ওয়ান এর মঞ্চে এসে, ভাইরাল ভিডিও

জি বাংলা ও স্টার জলসার মতো চ্যানেলগুলিতে ধারাবাহিকের পাশাপাশি অনুষ্ঠিত হয় বিভিন্ন নন ফিকশন শো। আর সেই শো গুলির মধ্যে অন্যতম জনপ্রিয় রিয়েলিটি শো হল দিদি নাম্বার ওয়ান। এই শো এর হাত ধরে বাংলার বিভিন্ন দিদিরা আসেন আর নিজেদের জীবনের লড়াইয়ের অধ্যায় গুলিকে তুলে ধরেন গোটা বাংলার সামনে। দিদিদের জীবনের চড়াই-উৎরাই, ওঠানামা সবটা উঠে আসে গোটা বাংলার কাছে। এই সঠিক বাংলার দিদিদের কাছে একটি ইনস্পিরেশন। এই মঞ্চে আসা দিদিদের কাহিনী শুনে বাংলার অন্যান্য দিদিদের মনেও প্রেরণা জেগে ওঠে। জীবনে লড়াই করার জন্য একটি প্রখর তাগিদ খুঁজে পান তারা।

দিদি নাম্বার ওয়ান এর একটি বিশেষ এপিসোডে উপস্থিত হয়েছিলেন সুন্দরবনের ঝরখালির মেয়ে গীতা মল্লিক। সম্প্রতি খেলতে এসে আমাদের এই দিদি নিজের পেশার কথা বলেন দিদি নাম্বার ওয়ান এর মঞ্চে দাঁড়িয়ে। আর সেটা শুনেই রীতিমতো অবাক হয়ে যান দর্শক থেকে সঞ্চালিকা রচনা নিজেও। গীতা দিদির পেশা কাঁকড়া তোলা, মাছ ধরা। এই পেশায় গীতা দিদি যুক্ত আছেন বিয়ের পর থেকে। গত সাত বছর ধরে এ পেশায় নিযুক্ত তিনি। সরদার মাতলা নদীতে নৌকা চালিয়ে মাছ ধরে জীবনযাত্রা চালিয়ে যান গীতা মল্লিক।

কিন্তু কেন এই পেশা বেছে নিতে হল তাকে? আসলে গীতা দেবী জানিয়েছেন তার স্বামী ছোট্ট একটু জমিতে চাষাবাদ করে সংসার চালান। আর এইভাবে সংসার প্রতিপালন করাটা বেশ কঠিন হয়ে দাঁড়াচ্ছিল দিন দিন। সংসারে একটু সচ্ছলতা আসবে ভেবে এই পেশায় নেমে যান তিনি। সংসারের হাল সামলেও এই চারিপাশে বিপদ ঘেরা পেশায় নির্ভয়ে কাজ করছেন গীতা দেবী।

গীতা দেবী জানিয়েছেন তাকে নৌকো চালানো শিখিয়েছিলেন তার বাবা। আর বিয়ের পরে এই পেশায় নিযুক্ত হয়ে নিজের প্রাণ প্রায় হাতে নিয়ে কাজ করেন তিনি। জঙ্গলে কখনো বাঘ তো জলে কখনো কুমির। চারিপাশেই বিপদসংকুল অবস্থায় দাঁড়িয়ে কাজ করতে হয় তাকে। আল ধরে কাঁকড়া তোলার সময় প্রায় অনেক সময়ই জঙ্গলের থেকে বাঘের গর্জন শুনতে পেয়েছেন তিনি। আবার অনেক সময় কুমিরের মুখে ও পড়ে যেতে হয়েছে তাকে। কিন্তু খুব বেশি সাবধানতা অবলম্বন করে সংসারের প্রয়োজনে নিজের প্রয়োজনে নিজের এইটুকু উপার্জনটিকে টিকিয়ে রাখতে হয়েছে তাকে।

Comments are closed.