২৫ মার্চ থেকে ৬৮ দিনের লকডাউনের জেরে কত পরিযায়ী শ্রমিকের প্রাণ গিয়েছে তার কোনও তথ্য সরকারের কাছে নেই। সোমবার বাদল অধিবেশনের প্রথম দিন কেন্দ্র এমনই জানিয়ে দিল সংসদকে। এরকম কোনও তালিকা করা হয় না বলেও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
প্রশ্ন ছিল, কেন্দ্র কি মৃতদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা করবে? উত্তর আসে, তালিকাই যখন নেই তখন আর্থিক সহায়তার প্রশ্ন উঠছে কোথা থেকে!
শ্রম মন্ত্রকের এই জবাবের পরই মোদী সরকারের বিরুদ্ধে একযোগে আক্রমণ শানায় বিরোধীরা। এবার এই ইস্যুতে মোদী সরকারকে বিঁধলেন তৃণমূল সাংসদ অভিষেক ব্যানার্জি। একটি ট্যুইটে এই সংক্রান্ত একটি খবর শেয়ার করে ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ লিখেছেন, পরিযায়ী শ্রমিকদের জীবন কিংবা অর্থনৈতিক অবস্থা সম্বন্ধে বিজেপি সরকারের জ্ঞানের ভাঁড়ার বিলকুল শূন্য। নরেন্দ্র মোদী কিংবা বিজেপির অন্য নেতাদের গালভরা ভাষণগুলো যে কেবলই কথার কথা, তা আজ স্পষ্ট। আপনাদের অমানবিকতার শেষ কোথায়?
৪ ঘণ্টার নোটিসে দেশজুড়ে লকডাউন জারির পর সবচেয়ে বিপদে পড়েছিলেন পরিযায়ী শ্রমিকরা। জাতীয় সড়কের ধার দিয়ে তাঁদের সারিবদ্ধভাবে বিহার, উত্তরপ্রদেশ, বাংলার ঘরে ফেরার চিত্র সকলের মনেই ছাপ ফেলেছে। হাজার হাজার কিলোমিটার পায়ে হেঁটে পাড়ি দিতে গিয়ে ঝরে গিয়েছে কত প্রাণ। ক্লান্তিতে রেল লাইনের উপরই ঘুমিয়ে পড়ে ট্রেনে কাটা পড়ে মৃত্যু হয়েছে কত মানুষের। রাস্তায় বিপজ্জনকভাবে লরিতে যেতে গিয়ে দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে আরও বহু দরিদ্র মানুষের। কিন্তু সে বিষয়ে কোনও তথ্য নেই কেন্দ্রের হাতে।
সেই ইস্যু তুলে ধরে অভিষেক ব্যানার্জি কৌশলে মোদীকে খোঁচা দিলেন। সেই সঙ্গে প্রশ্ন তুললেন, অমানবিক রাজনীতির শেষ কোথায়? পরিযায়ী শ্রমিকদের সমস্যার শুরু থেকেই বাংলার মমতা ব্যানার্জি সরকার ঘোষিতভাবে পরিযায়ী শ্রমিকদের পক্ষে। ট্রেন ভাড়া মকুব থেকে শুরু করে রেশন, সরকারের দাবি সমস্ত করা হয়েছে। এই প্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে এই মন্তব্য বিজেপি সরকারের গরিব বিরোধী মুখকেই প্রকাশ্যে এনে ফেলেছে। ট্যুইটে মোদীকে খোঁচা দিয়ে সেই ইস্যুকেই আরও একবার তুলে ধরলেন অভিষেক ব্যানার্জি। এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।
Comments are closed.