আসানসোল পুরসভার বোর্ডের ভুয়ো ছবি ছড়িয়ে ধৃত বিজেপি নেতা, ধৃতদের ছাড়াতে গিয়ে ঝামেলা করে হাজতে সাংসদ সৌমিত্র খাঁ

কয়েকদিন আগে দুর্গাপুজোর বিধিনিষেধ নিয়ে ফেক নিউজ ছড়ানোর অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছিলেন দুই ব্যক্তি। পুলিশ সাবধান করেছিল সোশ্যাল মিডিয়ায় ভুয়ো খবর নিয়ে সজাগ থাকতে। এর মধ্যেই আসানসোল পুরনিগমের ভুয়ো সাইনবোর্ডের ছবি পোস্ট করে গ্রেফতার হলেন বিজেপি যুব মোর্চার রাজ্য সম্পাদক বাপ্পা চ্যাটার্জি। সেই গ্রেফতারির প্রতিবাদে পুলিশ কমিশনারের অফিসের সামনে সমর্থকদের নিয়ে ধরনা দিচ্ছিলেন বিজেপির যুব মোর্চার রাজ্য সভাপতি তথা বিষ্ণুপুরের সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। তাঁদেরও গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

কেন গ্রেফতার হলেন বিজেপি যুব মোর্চার রাজ্য সম্পাদক?

আসানসোল পুরনিগমের সাইনবোর্ডের একাংশের ছবি দিয়ে দাবি করা হয়েছিল তা হিন্দি, ইংরেজি এবং উর্দুতে লেখা হয়েছে, কিন্তু বাংলা উপেক্ষিত। এই ছবি শেয়ার করেছিলেন যুব মোর্চার রাজ্য সম্পাদক বাপ্পা চ্যাটার্জি।

প্রচার করা হয় আসানসোল পুরনিগম নামাঙ্কিত বোর্ডে বাংলা ভাষাকে উপেক্ষা করা হয়েছে। ফেসবুকের বিভিন্ন গ্রুপে ঝড়ের গতিতে ভাইরাল হতে থাকে ওই ছবি। জেলা বিজেপির যুবমোর্চা ও ছোট বড় নেতারা এই ছবিকে হাতিয়ার করে তৃণমূল পরিচালিত পুর বোর্ডের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানাতে থাকে। বিজেপির অভিযোগ, তৃণমূল আসলে বাঙালি সংস্কৃতি বিরোধী। বাংলার কোনও পুরসভা অফিসে বাংলা নাম না থাকা তারই হাতেগরম প্রমাণ। কিন্তু পুলিশ গিয়ে দেখে পুরনিগমের অফিসের বোর্ডে বাংলা রয়েছে। কিন্তু উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ছবির একাংশ ব্যবহার করায় বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে। শুক্রবার রাতেই বাপ্পা চ্যাটার্জিকে ভুয়ো ছবি শেয়ার করার অভিযোগে গ্রেফতার করে পুলিশ।

পুর কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, উপরে থাকা বাংলা হরফ সুকৌশলে বাদ দিয়ে একাজ করেছে বিজেপি আইটি সেল! সেই ছবিই সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করে মানুষকে ভুল বার্তা দেওয়ার অভিযোগে গ্রেফতার হলেন বিজেপি যুব মোর্চার রাজ্য সম্পাদক বাপ্পা চ্যাটার্জি। এদিকে এই গ্রেফতারির প্রতিবাদ করতে গিয়ে বিষ্ণুপুরের সাংসদ সৌমিত্র খাঁ-সহ বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পরে অবশ্য বন্ডের বিনিময়ে ছাড়া পান তিনি।

শুক্রবার পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের ফেসবুক পেজ থেকে আসানসোল পুর নিগমের সঠিক এবং ভুয়ো ছবি দুটোই পোস্ট করে জানানো হয় যে, পুরনিগম ভবনের বিকৃত ছবি যিনি পোস্ট করেছিলেন তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সেই সঙ্গে এও জানানো হয়, যাঁরাই এই ছবিটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ফরওয়ার্ড করেছেন তাদেরও গ্রেফতার করা হচ্ছে। রাজ্য পুলিশের তরফে নেটিজেনদের কাছে আবেদন, ”দয়া করে ভুয়ো বা বিভ্রান্তিকর বিষয় পোস্ট/ফরওয়ার্ড করবেন না।”

কিছুদিন আগেই দুর্গাপুজোর বিধিনিষেধ সংক্রান্ত ভুয়ো নির্দেশিকা ছড়ানোর অভিযোগে দুই ব্যক্তির গ্রেফতারির প্রেক্ষিতে পুলিশ জানিয়েছিল সোশ্যাল মিডিয়ায় ভুয়ো মেসেজ, সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ ছড়িয়ে গত পাঁচ মাসে ২৫৯ জনকে গ্রেফতার করেছে তারা।

Comments are closed.