মন্দার আঁচে নতুন পণ্য বাজারে আনা স্থগিত রাখল ব্রিটানিয়া

দেশের আর্থিক বৃদ্ধি তলানিতে, অর্থনৈতিক শ্লথতা ও চাহিদার অভাবে গাড়ি, আবাসন, তথ্যপ্রযুক্তি থেকে শুরু করে এফএমসিজি সেক্টর প্রত্যেকেই ভুগছে। কর্মী ছাঁটাই শুরু করেছে দেশের তথ্য প্রযুক্তি সংস্থাগুলি। এই অবস্থায় বাজারে নতুন পণ্য আনতে তারা পিছিয়ে যাচ্ছে বলে জানাল ব্রিটানিয়া ইন্ডাস্ট্রিজ। ব্রিটানিয়ার আশা, আগামী ৯ থেকে ১২ মাসের মধ্যে এই সঙ্কট কাটবে।
ব্রিটানিয়া বিস্কুটের মধ্যে ‘গুড ডে’ এবং ‘টাইগার’, এই দুই ব্র্যান্ড থেকে ৭৫ শতাংশ রাজস্ব আসে। কিন্তু গত কয়েকমাস ধরে গ্রামাঞ্চলে বিস্কুটের চাহিদায় ভাটা চলছে। সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর বরুণ বেরি জানিয়েছেন, গ্রামাঞ্চলের দিকে বিস্কুটের বাজার বেশ খারাপের দিকে। শহরের তুলনায় গ্রামাঞ্চলের এই অর্থনৈতিক শ্লথতার প্রভাব পড়েছে এফএমসিজি সেক্টরে। মার্কেট রিসার্চ সংস্থা নিয়েলসেন জানাচ্ছে, গত সাত বছরে এই প্রথম শহরের তুলনায় গ্রামীণ বৃদ্ধি ব্যাপকভাবে নেমে গিয়েছে এবং এফএমসিজি সেক্টরের বৃদ্ধি গত বছরের তুলনায় অনেকটা নীচে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ছোট বিস্কুট প্যাকেটের মতো ‘ভ্যালু প্রোডাক্ট’ -এর কাটতি কমছে গ্রামাঞ্চলে। আর শহরাঞ্চলের ক্ষেত্রে ভ্যালু প্রোডাক্টের থেকে প্রিমিয়াম প্রোডাক্টের চাহিদা বেশি। এ ব্যাপারে একমত হয়েছেন ব্রিটানিয়ার ম্যানেজিং ডিরেক্টরও। তিনি বলেন, সেলস রিপোর্টেই দেখা যাচ্ছে ভ্যালু প্রোডাক্টের চেয়ে প্রিমিয়াম প্রোডাক্ট বেশি বিক্রি হচ্ছে।
এখন ব্রিটানিয়া, হিন্দুস্তান ইউনিলিভার, আইটিসির মতো সংস্থা, প্রত্যেকেই বিস্কুট, চকোলেট, গুঁড়ো সাবান থেকে কার ফ্রেশনার, সব পণ্যের প্রিমিয়াম প্রোডাক্টের দিকে বেশি নজর দিচ্ছে। ডাবর সংস্থার চিফ এক্সিকিউটিভ মোহিত মালহোত্র জানাচ্ছেন, সামগ্রিক অর্থনৈতিক অবস্থা ও গ্রামাঞ্চলের মন্দা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে সস্তায় পণ্য আনার কথা ভাবছেন তাঁরা। হিন্দুস্তান ইউনিলিভারও  গ্রামাঞ্চলে খুচরো ব্যবসা পড়ে যাওয়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে গত মাসে। সব মিলিয়ে অর্থনৈতিক মন্দায় দেশে এফএমসিজি সেক্টরের অবস্থা যে টালমাটাল তার আরও একবার ইঙ্গিত দিল ব্রিটানিয়া।

Comments are closed.