মৃত্যুদণ্ড অপরাধ কমাতে সাহায্য করেছে এরকম কোনও তথ্য নেই: কলকাতা হাইকোর্ট

গুরুতর অপরাধের ক্ষেত্রে অনেক সময়ই মৃত্যুদণ্ডের দাবি ওঠে এই দেশে। আদালত মনে করলে প্রতি বছরই বহু অপরাধের ক্ষেত্রে অপরাধীকে প্রাণদণ্ডের নির্দেশও দেয়। সম্প্রতি হায়দরাবাদে পশু চিকিৎসককে ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের পর এই ধরনের অপরাধের ক্ষেত্রে দোষীদের দ্রুত মৃত্যুদন্ডের দাবি ফের জোরালো হতে শুরু করেছে।
কিন্তু এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে এবার মৃত্যুদণ্ড নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করল কলকাতা হাইকোর্ট। সম্প্রতি এক অপরাধীর মৃত্যুদণ্ডের সাজা কমানোর আবেদন উঠেছিল কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচি এবং বিচারপতি শুভ্রা ঘোষের ডিভিশন বেঞ্চে।
এই মামলার শুনানি চলাকালীন বিচারপতিরা বলেন, মৃত্যুদণ্ড যে সমাজে অপরাধ কমাতে সাহায্য করেছে এরকম কোন তথ্য নেই। বিষয়টি জোর দিয়ে বলা যায় না।
জানা গিয়েছে, হেরোইনের মতো মাদক পাচারে অভিযুক্ত আনসার রহমানন্দ নামে এক ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ড দেন জেলা ও সেশন কোর্টের অতিরিক্ত বিচারপতি। নিজের রায়ে তিনি বলেন, এই ব্যক্তি এর আগেও একই কাজ করে ধরা পড়ে সাজা পেয়েছে, কিন্তু তার শোধরানোর কোন লক্ষণ না থাকায় তার মৃত্যুদণ্ডই প্রাপ্য।
মৃত্যুদণ্ডের এই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আবেদন জানায় আনসার। সেই আবেদনের শুনানিতেই বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতিরা এই মন্তব্য করেন। তাঁরা বলেন, আবেদনকারীকে মৃত্যুদণ্ড দিলে সে দৃষ্টান্ত সামনে রেখে অন্যরা এই অপরাধ বন্ধ করে দিতে পারে, আবার নাও পারে। মৃত্যুদণ্ড অন্যদের অপরাধ কর্মে লিপ্ত হতে বাধা দেয়, এরকম কোনও তথ্য আদালতের সামনে নেই। এর থেকে ওই অপরাধীকে নির্দিষ্ট এনডিপিএস ধারায় ৩০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়াই শ্রেয় বলে মনে করছেন বিচারপতিরা। তাঁদের মতে, এর ফলে অন্তত ৩০ বছর পর জেল থেকে ছাড়া পেয়ে এই অভিযুক্তের অপরাধে জড়িত হওয়ার সম্ভাবনা কমবে।

 

Comments are closed.