দিল্লির হিংসা নিয়ে বুধবার দিল্লি পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন দিল্লি হাইকোর্টের বিচারপতি এস মুরলীধর। কেন্দ্র ও দিল্লি সরকারকে কটাক্ষ করে মন্তব্য করেছিলেন, দিল্লি হাইকোর্টের আওতায় থেকে আরও একটা ১৯৮৪ সালের দাঙ্গা পরিস্থিতি কিছুতেই বরদাস্ত করব না। সেই বিচারপতিকেই রাতারাতি বদলির নোটিস দেওয়া হল পঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্টে।
গত ১২ ফেব্রুয়ারি সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়াম বিচারপতি মুরলীধরের বদলির প্রস্তাব দিলেও দিল্লি হাইকোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশন তার তীব্র বিরোধিতা করেছিল। দিল্লি হাইকোর্টের তৃতীয় সিনিয়র এই বিচারপতি তাঁর বদলির শেষ দিনে দিল্লি হিংসা নিয়ে তাৎপর্যপূর্ণ কিছু মন্তব্য করেছিলেন। তার জেরেই কি তড়িঘড়ি এই বদলি? উঠছে সে প্রশ্নও। বিরোধীরা সমালোচনায় মুখর হয়েছেন। কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা বলেন, রাতারাতি সরিয়েই দেওয়া হল বিচারপতিকে। দাঙ্গাবাজদের ধরতেও যদি এমন তৎপরতা দেখতাম। কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ দাবি করেন, এটা রুটিন বদলি। বিরোধীরা অযথা হই চই করছেন।
আরও জানতে ক্লিক করুন, দিল্লি পুলিশকে কড়া ভর্ৎসনা করে কী বলেছিলেন জাস্টিস মুরলীধর?
বুধবার দিল্লি হাইকোর্টে একের পর এক ভিডিয়ো চলছে। কোনওটিতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুরের ‘দেশ কো গদ্দারো কো, গোলি মারো…’ কোনওটিতে বিজেপি নেতা কপিল মিশ্রর হুমকি, জাফরাবাদ থেকে সিএএ প্রতিবাদীরা সরে না গেলে তাঁরাই সরিয়ে দেবেন, তখন পুলিশের কথাও শুনবেন না। বিজেপি নেতা-মন্ত্রীদের এমন চারটি উস্কানিমূলক ভিডিয়ো ক্লিপ চালিয়ে দিল্লি পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন বিচারপতি মুরলীধর। তাঁর মন্তব্য ছিল, দিল্লি পুলিশের হাল দেখে আমি বিস্মিত। যে বিজেপি নেতারা এমন উস্কানিমূলক মন্তব্য করেছেন তাঁদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করার নির্দেশ দেন তিনি। সেই সঙ্গে কেন্দ্র, দিল্লি সরকার ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর অধীনে থাকা দিল্লি পুলিশের উদ্দেশে একাধিক কড়া মন্তব্য করেছিলেন বিচারপতি মুরলীধর। এরপর বুধবার রাতেই তাঁর বদলির নোটিস চলে আসে। কবে থেকে পঞ্জাব ও হরিয়ানা কোর্টের দায়িত্ব নেবেন, তা জানা না গেলেও ‘দ্রুত’ বদলির নির্দেশ এসেছে।
বুধবার সমাজকর্মী হর্ষ মান্দেরের দায়ের করা এক জনস্বার্থ মামলার শুনানিতে অনুরাগ ঠাকুর, পরবেশ ভার্মা, অভয় ভর্মা ও কপিল শর্মার বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক মন্তব্য করায় দিল্লি পুলিশ কী সিদ্ধান্ত নেবে তা একদিনের মধ্যে জানাতে বলে বিচারপতি মুরলীধর ও বিচারপতি তালওয়ান্ত সিংহের বেঞ্চ।
বিচারপতি মুরলীধরের বদলির পর সেই মামলার শুনানি হবে দিল্লি হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি এন প্যাটেলের বেঞ্চে।
Comments are closed.