পরিকল্পনাহীন লকডাউন কীভাবে বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে ভারত তার উদাহরণ! ট্যুইট অর্থনীতিবিদ কৌশিক বসুর, মোদী সরকারকে খোঁচা প্রশান্ত কিশোরেরও
কেন্দ্রের তরফে ট্যুইট করে দাবি করা হয়েছে করোনা মোকাবিলায় ইউরোপ-আমেরিকার চেয়ে ভালো অবস্থায় আছে ভারত। এবার তা নিয়েই বড়সড় প্রশ্ন তুলে দিলেন অর্থনীতিবিদ কৌশিক বসু ও রাজনৈতিক পরামর্শদাতা প্রশান্ত কিশোর। জোড়া ট্যুইটে তীব্র কটাক্ষ কেন্দ্রীয় সরকারকে।
এশিয়া ও আফ্রিকার সমস্ত দেশের মধ্যে করোনার ক্রুড মর্টালিটি রেট (CMR) এ সবচেয়ে এগিয়ে ভারত। পরিকল্পনাহীন লকডাউন কীভাবে বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে সেটাই পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে। দেশের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে মোদী সরকারের তীব্র সমালোচনা করে ট্যুইট করলেন বাঙালি অর্থনীতিবিদ তথা প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের আর্থিক উপদেষ্টা কৌশিক বসু। অন্যদিকে নির্বাচনী স্ট্র্যাটেজিস্ট প্রশান্ত কিশোরের ট্যুইটবার্তা, গত ১২০ দিনে ভারতে করোনা দৈনিক বৃদ্ধির হার ৭.৫ শতাংশ, যা বিশ্বে সর্বাধিক। আত্মনির্ভর ভারতীয় মডেল এখন সারা বিশ্বে প্রশংসিত, সবাই চাইছে অনুসরণ করতে, মোদী সরকারকে খোঁচা দিয়ে ট্যুইট পিকের।
প্রতি ১০ লক্ষে করোনায় মৃত্যুর হারে (CMR) ভারত এশিয়া ও আফ্রিকা মহাদেশে সবার চেয়ে এগিয়ে, এমনই দাবি করেছেন বিশ্ব ব্যাঙ্কের প্রাক্তন মুখ্য অর্থনীতিবিদ কৌশিক বসু। শুক্রবার ট্যুইটে তিনি লিখেছেন, এশিয়া ও আফ্রিকার মধ্যে অন্যতম সর্বোচ্চ সিএমআর বা ক্রুড মর্টালিট রেট হল ভারতের। একটি পরিসংখ্যান তুলে ধরে তিনি দেখান এ দেশে প্রতি ১০ লক্ষ জনগণের মধ্যে করোনায় মৃত্যুর হার ১৯। যা ফিলিপিন্স, বাংলাদেশ, ইন্দোনেশিয়া, চিন, সবার চেয়ে বেশি। এর জন্য ভারত সরকারের লকডাউন নীতির সমালোচনা করেন বাঙালি অর্থনীতিবিদ। লেখেন, কোনও ব্যাক-আপ ছাড়া একটা লকডাউন কীভাবে দেশের বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে তা স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। যদিও এর মধ্যে কৌশিক বসু আশার কথা শুনিয়েছেন। ট্যুইটে তিনি লেখেন, ভারতে বিশাল বৈজ্ঞানিক প্রতিভা আছে। তবে এই প্রতিভা কাজে লাগানোর ইচ্ছেটাও জরুরি। তাঁর ওই ট্যুইটে আবার মন্তব্য করেন প্রাক্তন সাংবাদিক তথা ফিল্ম প্রযোজক প্রীতিশ নন্দী। তাঁর মত, দেশের সরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবাও ভালো করা জরুরি। যাঁদের পক্ষে বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসায় বিশাল খরচ বহন করা অসম্ভব, তাঁদের জন্য প্রয়োজন ভালো সরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবা।
দেশের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে একাধিকবার কেন্দ্রের মোদী সরকারের তীব্র সমালোচনা করেছেন প্রশান্ত কিশোর। শুক্রবার নিজস্ব ট্যুইটার হ্যান্ডেল থেকে তিনি লেখেন, ভারতে করোনা সংক্রমিতের সংখ্যা ১০ লক্ষ ছাড়িয়ে গেল। মৃত্যু হয়েছে ২৫ হাজারেরও বেশি মানুষের। আর করোনা পজিটিভের হার ৮ শতাংশ। তার উপর গত ১২০ দিনে দৈনিক বৃদ্ধির হার (CDGR) ৭.৫ শতাংশ যা, বিশ্বে সর্বাধিক। এরপরই কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে নিশানা করে পিকে লেখেন, স্বঘোষিত ‘ইন্ডিয়া মডেল’ এখন সারা বিশ্বে প্রশংসা কুড়োচ্ছে। সবাই চাইছে ভারতের করোনা মডেল অনুসরণ করতে।
ভারতে করোনা পরিস্থিতি কি ক্রমেই হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে? দেশে করোনা সংক্রমিতের সংখ্যা ১ মিলিয়ন ছাড়ানোর পরই নতুন করে অক্সিজেন পেয়েছে এই প্রশ্ন। করোনা পর্বে বিভিন্নভাবে সরকারকে পরামর্শ দিয়ে গিয়েছেন অর্থনীতিবিদ কৌশিক বসু এবং আই প্যাকের কর্ণধার প্রশান্ত কিশোর। কিন্তু অভিযোগ তাতে কর্ণপাত করেনি সরকার। এবার লকডাউনকে সরাসরি ব্যর্থ বলে অভিযোগ করে ট্যুইট অর্থনীতিবিদ কৌশিক বসুর।
Comments are closed.