বাংলার পর বাতিল কেরল, মহারাষ্ট্রের ট্যাবলো, এনআরসি বিরোধিতাই কারণ, উঠছে প্রশ্ন

২৬ জানুয়ারি দিল্লির প্রজাতন্ত্র দিবসে পশ্চিমবঙ্গের পর আরও দুই অ-বিজেপি শাসিত রাজ্যের ট্যাবলো বাতিল করল প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। মাস খানেক আগে বিধানসভা ভোটে বিজেপির হাত থেকে ফসকে যাওয়া মহারাষ্ট্র এবং সদ্য ভোটে হেরে যাওয়া ঝাড়খণ্ডের ট্যাবলো প্রস্তাব বাতিল হয়েছে। এছাড়া এই বাদের তালিকায় রয়েছে এনআরসি হবে না বলে জানিয়ে দেওয়া বিহার এবং কেরলের মতো রাজ্যও।
২৬ জানুয়ারি প্রজাতন্ত্র দিবসে রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল থেকে ৩২ টি এবং বিভিন্ন মন্ত্রক থেকে ২৪ টি ট্যাবলোর প্রস্তাব এসেছিল প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের বিশেষ কমিটির কাছে। তাতে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের প্রস্তাব মেনে নেয়নি ট্যাবলো বাছাই সংক্রান্ত ওই কমিটি। এরপরে এই তালিকা থেকে বাদ গিয়েছে শিবসেনা-এনসিপি-কংগ্রেস শাসিত মহারাষ্ট্র এবং সদ্য বিজেপির হাতছাড়া হওয়া ঝাড়খণ্ড। এই ট্যাবলো বাতিলের ঘটনায় একযোগে কেন্দ্রকে আক্রমণ করেছে তৃণমূল, শিবসেনা, এনসিপি এবং রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি)। তাদের অভিযোগ, এটা কেন্দ্রের প্রতিহিংসামূলক আচরণ।
সব প্রস্তাব খতিয়ে দেখিয়ে রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মোট ১৬ টি ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রকের ছ’টি ট্যাবলো বেছে নিয়েছে দিল্লি। প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের ওই কমিটি জানিয়েছে, দিল্লির রাজপথে প্রজাতন্ত্র দিবস উদযাপনের জন্য যে ১৬ টি রাজ্যের ট্যাবলোর প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে, তার মধ্যে সাতটি অ-বিজেপি শাসিত রাজ্য রয়েছে। কমিটির এক কর্তার দাবি, বাদ পড়া রাজ্যগুলির ট্যাবলোতে নতুনত্ব এবং অভিনবত্ব কিছু নেই। সব কিছু খতিয়ে দেখেই সেগুলি বাদ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে প্রতিহিংসা বা বৈষম্যের কোনও ব্যাপার নেই।
যদিও তৃণমূল নেতৃত্বের অভিযোগ, কেন্দ্রের নাগরিকত্ব ও এনআরসি-র বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি ও তাঁর দলের অবস্থানের কারণেই রাজ্যের ট্যাবলো প্রস্তাব গৃহীত হয়নি। একই অভিযোগে সরব হয়েছে মহারাষ্ট্র সরকারও। এনসিপি নেত্রী সুপ্রিয়া সুলে একে রাজ্যগুলির প্রতি কেন্দ্রের বৈষম্যমূলক আচরণ বলে মন্তব্য করেন। তাঁর কথায়, অ-বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির সঙ্গে বিমাতৃসুলভ আচরণ করা হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গ ও মহারাষ্ট্রের শাসক দলের শীর্ষ নেতৃত্বের অভিযোগ, যে দুই রাজ্য দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিল, ট্যাবলো বাতিল করে সেখানকার মানুষদের অপমান করা হল।
বৃহস্পতিবার এ নিয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েছিলেন তৃণমূল সাংসদরা। সৌগত রায়দের অভিযোগ, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন ও এনআরসি-র বিরোধিতা করার জন্যই এভাবে বাংলার সরকারকে টার্গেট করা হচ্ছে।

Comments are closed.