বাবুল সুপ্রিয়র বিরুদ্ধে মামলায় হাইকোর্টে ধাক্কা খেলেন মহুয়া মৈত্র। বুধবার বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়র বিরুদ্ধে তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রর দায়ের করা অভিযোগের প্রেক্ষিতে পুলিশের দেওয়া চার্জশিট খারিজ করে দিল কলকাতা হাইকোর্ট।
এক টেলিভিশন চ্যানেল আয়োজিত বিতর্কসভায় বিজেপি মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় তাঁর সম্পর্কে ‘মর্যাদাহানিকর’ মন্তব্য করেছেন বলে অভিযোগ জানান কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ। বাবুলের বিরুদ্ধে তিনি আলিপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। বুধবার কলকাতা হাইকোর্ট সেই মামলা খারিজ করে দেয়।
আদালতের রায় বাবুলের পক্ষে গেলেও বিচারপতি বিবেক চৌধুরী বলেন, একজন জনপ্রতিনিধি তাঁর আচরণে ভদ্র হবেন এটাই কাম্য। মন্তব্য করার সময় তাঁকে অনেক সংযত থাকতে হয়। এক্ষেত্রে মহিলা সাংসদদের বিরুদ্ধে মন্ত্রীর করা ওই মন্তব্য অবশ্যই তার সম্মানহানি করেছে। বিচারপতির মন্তব্য, আশা করা যাচ্ছে ভবিষ্যতে মন্তব্য করার ক্ষেত্রে তিনি আরও সতর্ক হবেন। মহুয়া মৈত্র প্রয়োজনে ফের আদালতের দ্বারস্থ হতে পারবেন বলেও জানিয়ে দিয়েছেন বিচারপতি চৌধুরী।
হাইকোর্টের রায়কে বড় জয় হিসেবে দেখছে বিজেপি। মহুয়ার দায়ের করা মামলা খারিজকে ‘মিথ্যা অভিযোগের বিরুদ্ধে খুব বড় জয়’ বলে বর্ণনা করছেন বাবুল ঘনিষ্ঠরা। এ বিষয়ে মহুয়া মৈত্রের কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
ঠিক কী ঘটেছিল?
বছর তিনেক আগে একটি টেলিভিশন চ্যানেলের বিতর্কসভায় মহুয়ার বক্তব্যের প্রেক্ষিতে তাঁকে কটাক্ষ করতে গিয়ে বাবুল বলেন, “মহুয়া আর ইউ অন মহুয়া”, অর্থাৎ, “মহুয়া আপনি কি মহুয়া খেয়ে আছেন?” উত্তেজক পানীয় হিসেবে পরিচিত মহুয়া। তাই বিতর্কসভায় বাবুলের ওই মন্তব্যের ঘোরতর প্রতিবাদ করেন তৃণমূল সাংসদ। আলিপুর থানায় বাবুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন তিনি। যার প্রেক্ষিতে একজন মহিলার সম্মানহানির অভিযোগে বাবুল সুপ্রিয়কে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৫০৯ ধারায় অভিযুক্ত করে চার্জশিট দেয় পুলিশ। মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের আদালত বাবুলের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানাও জারি করে। এর পর বাবুল কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন এবং ‘মহিলার মর্যাদাহানি ঘটানো’র অভিযোগ খারিজ করার আর্জি জানান। বাবুলের বিরুদ্ধে জারি হওয়া গ্রেফতারি পরোয়ানা স্থগিত হয়।
মন্ত্রীর বিরুদ্ধে জারি হওয়া ৫০৯ ধারার মামলাটি আদালত গ্রাহ্য অপরাধের পর্যায়ে পড়ে। সেই চার্জশিটটি বুধবার খারিজ করে দিল আদালত। রায়ে বিচারপতি জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর করা ওই মন্তব্যে একজন মহিলা সাংসদদের সম্মানহানি হলেও এক্ষেত্রে ৫০৯ ধারা প্রযোজ্য নয়। তাই চার্জশিটটি খারিজ হতে বাধ্য।
রায় ঘোষণা হতেই বাবুল তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডলে তা তুলে ধরেন। তিনি নিজে একে বড়ো জয় হিসেবে দেখছেন। তবে মহুয়া মৈত্র আদালতের এই রায় মেনে নেবেন নাকি উচ্চতর আদালতের দ্বারস্থ হবেন তা এখনই স্পষ্ট নয়।
Comments are closed.