অমিত শাহকে বলেছিলাম, যদি মনে করেন রাজ্য পারছে না, আপনারা করোনা সামলানোর দায়িত্ব নিন, পরিযায়ী শ্রমিক ইস্যু তুলে কেন্দ্রকে নিশানা মুখ্যমন্ত্রীর

রাজ্যে নতুন করে করোনা সংক্রমণ ছড়ানোর নেপথ্যে কেন্দ্রের পরিকল্পনার অভাবকে তুলে ধরে তীব্র সমালোচনা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। বুধবার নবান্নে প্রশাসনিক বৈঠকে প্রশ্ন তুললেন রেলের দায়বদ্ধতা নিয়েও। পাশাপাশি বললেন, অমিত শাহকে বলেছিলাম, রাজ্যে এত টিম পাঠাচ্ছেন, যদি মনে করেন আমার সরকার পারছে না, নিজেরা দায়িত্ব নিন, আমার কোনও আপত্তি নেই। কিন্তু অমিত শাহ বলেন, নির্বাচিত সরকার ভাঙবো কী করে?
মমতার প্রশ্ন, আমাকে রাজনৈতিকভাবে বিরক্ত করতে গিয়ে বাংলার মানুষের সর্বনাশ কেন করছেন? বিপর্যয় সামলাবো, না আপনাদের রাজনীতি সামলাবো, প্রশ্ন মুখ্যমন্ত্রীর। এরপরই মমতা ব্যানার্জি বলেন, সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া রুখতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চাইছি।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রথম পর্যায়ে করোনা নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছিল। কিন্তু কেন্দ্র ও রেলের সম্পূর্ণ অপরিকল্পিত পদক্ষেপের কারণে বাংলা সহ একাধিক রাজ্যে নতুন করে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ছে। রাজ্যের সঙ্গে আলোচনা না করে যেভাবে মুম্বই থেকে পরিযায়ী শ্রমিকদের পাঠানো হচ্ছে তাতে বাংলায় করোনা সংক্রমণ বাড়ার প্রভূত আশঙ্কা। কেউ কেউ রাজনৈতিক কারণে সংক্রমণ বাড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে বলেও এদিন অভিযোগ করেন মমতা। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এরপর বাংলায় হাজার হাজার মানুষ করোনা সংক্রমিত হলে তার দায় রেল এবং কেন্দ্রীয় সরকার নেবে তো? মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, এত লোক একবারে চলে এলে পরিকল্পনার সুযোগ থাকে না। তার উপর আমপানে বিধ্বস্ত রাজ্যের পরিকাঠামো। তাই একটু সময় দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু রেল রাজ্যের সঙ্গে কোনও আলোচনা না করেই আচমকা ৩৬ টি ট্রেন ছেড়ে দিয়েছে বলে শুনেছি। এত লোক আসছেন, তাঁদের মধ্যে কতজন সংক্রমিত তার কোনও হিসেব নেই। পাশাপাশি রাজ্য ভাড়ার টাকা দিলেও ট্রেনে কোনও দূরত্ববিধি মানা হচ্ছে না বলেও আক্রমণ করেন মমতা ব্যানার্জি। মুম্বই থেকে করোনা কমাতে গিয়ে বাংলা-বিহারে করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাচ্ছে। যে রেড জোন ছিল সীমাবদ্ধ, তা ছড়িয়ে পড়ছে দেশের ম্যাপজুড়ে। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, দয়া করে গোটা দেশকে রেড জোন বানিয়ে দেবেন না, ওটাকে তিরঙ্গাই থাকতে দিন।
এদিন দেশের ৫ টি রাজ্য থেকে আসা বাঙালির পরিযায়ী শ্রমিকদের বাধ্যতামূলকভাবে সরকারি কোয়ারেন্টিনে রাখার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। এজন্য স্কুল কলেজ নেওয়া হবে, ব্লকে ব্লকে টাস্কফোর্স এই কাজ দেখাশোনা করবে। প্রতি জেলার ডিএমদের নেতৃত্বে তাতে থাকবেন বিডিও, পঞ্চায়েত, জেলা পরিষদ, বিধায়কেরা। সেখানে সবাইকে ১৪ দিন থাকতে হবে। তারপর টেস্ট। রিপোর্ট নেগেটিভ হলে তবেই মিলবে বাড়ি যাওয়ার অনুমতি।

Comments are closed.