দক্ষিণ দিনাজপুরের প্রশাসনিক বৈঠকে খড়্গহস্ত মুখ্যমন্ত্রী! সরকারি কাজের শ্লথতা নিয়ে ধমক জেলাশাসক ও অন্য আমলাদের

দক্ষিণ দিনাজপুরে সরকারি কাজকর্ম অত্যন্ত শ্লথ গতিতে হচ্ছে বলে মঙ্গলবার প্রশাসনিক বৈঠকে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। মঙ্গলবার জেলার গঙ্গারামপুরে প্রশাসনিক বৈঠকে এই ব্যাপারে তিনি জেলাশাসক নিখিল নির্মল থেকে শুরু করে অতিরিক্ত জেলাশাসক-সহ অনেক আমলাকে রীতিমতো ভর্ৎসনা করেন। জেলাশাসককে দাঁড় করিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এই শোন, কাজ না হলে জেলার মানুষ তোমায় কিছু বলবে না। কিন্তু আমাকে ধরবে ওরা। কাজ করতে না পারলে ছেড়ে দাও। কাজ না হলে আমি কিন্তু কাউকে ছেড়ে কথা বলব না। আর অতিরিক্ত জেলাশাসককে তিনি বলেন, আপনি সব কাজে বাধা দেন কেন? আপনি তো সব কাজে ভুল খুঁজে বেড়ান। ওই আমলা তখন আমতা আমতা করে বলেন, আমি তো মাত্র এক মাস আগে এই পদে এসেছি। তা শুনে মমতা সুর নরম করে বলেন, ঠিক আছে। সকলকে নিয়ে কাজ করতে হবে। তাঁর অনুযোগ, কী পরীক্ষা নেব? কোনও প্রশ্নেরই তো উত্তর পাচ্ছি না।
লোকসভা ভোটের পর দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় খোদ তৃণমূলের জেলা পরিষদের সভাপতি জেলা পরিষদের অনেক সদস্যকে নিয়ে বিজেপিতে যোগ দেন। পরে অবশ্য কয়েকজন তৃণমূলে ফিরে আসেন। দলের জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্রই একটা বড় বাহিনীকে দিল্লিতে নিয়ে যান। সেখানেই তাঁরা বিজেপিতে যোগ দেন। এই আবহে জেলা পরিষদে একটা অচলাবস্থা চলছে। তার প্রভাব পড়েছে জেলার দৈনন্দিন কাজকর্মেও।
এদিন বৈঠকের শুরুতেই মুখ্যমন্ত্রী জানতে চান, সভাধিপতি কোথায়? এরপর জেলাশাসকের কাছে তিনি জানতে চান, একশো দিনের কাজ ঠিকমতো হচ্ছে না কেন? পুকুরে মাছ ঠিকমতো ছাড়া হচ্ছে না কেন? জেলাশাসক জানান, অন্য পক্ষ কাজে বাধা দিচ্ছে। ওরা মিটিং-এ আসে না। মমতা বলেন, ওদের বাদ দিয়ে সভা ডাকবে। কারও জন্য তো কাজ আটকে থাকতে পারে না। জেলা পরিষদের সহ সভাধিপতি তো আছেন। আমি দেখছি, একমাত্র দক্ষিণ দিনাজপুর জেলাই অসহযোগিতা করছে। জেলাশাসককে তিনি বলেন, তুমি কিন্তু কিছু দেখছ না। এসব তো তোমারই দেখার কথা। আমি সাত দিন সময় দিলাম। তার মধ্যে সমস্যার সমাধান না হলে আমি কিন্তু ছেড়ে দেব না।
মুখ্যমন্ত্রী জেলার পুলিশ সুপারকেও ধমক দিয়ে বলেন, জেলায় এত পথ দুর্ঘটনা হচ্ছে কেন? তুমি কিছু দেখছ না। সেভ ড্রাইভ, সেফ লাইফ হচ্ছে না এখানে।

 

Comments are closed.