এবার কবিতার মাধ্যমে নাম না করে দলত্যাগী তৃণমূল নেতাদের এবং রাজ্যের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে তাৎপর্যপূর্ণ বার্তা দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর আগেও নোটবন্দি থেকে শুরু করে একাধিক রাজনৈতিক বিষয় কবিতার মাধ্যমে নিজের মত জানিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী। কিন্তু সামগ্রিকভাবে রাজ্যের পরিস্থিতি এবং নিজের দলের নেতাদের বার্তা দেওয়ার জন্য মুখ্যমন্ত্রী এবার যে কবিতা লিখেছেন, তা এই সময়ে রাজনৈতিকভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করছে তৃণমূল শিবির। ‘দমকা হাওয়া’ নামে লেখা এই কবিতা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ফেসবুক পেজে পোস্ট করেন।
লোকসভা ভোটে তৃণমূলকে শক্ত চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে বিজেপি। রাজ্যের ১৮ টি লোকসভা আসন দখলের পাশাপাশি তৃণমূলের সংগঠনেও সরাসরি আঘাত হেনেছে বিজেপি। একাধিক বিধায়ক এবং বিভিন্ন স্তরের তৃণমূল নেতা দিল্লিতে গিয়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। শোভন চট্টোপাধ্যায়ও বিজেপিতে যোগ দেওয়ার জন্য মঙ্গলবার বিকেলেই দিল্লি রওনা দিয়েছেন। ঠিক সেই সময়ই নিজের লেখা কবিতা ফেসবুকে পোস্ট করেন মুখ্যমন্ত্রী। দলত্যাগীদের বিঁধে কবিতা লিখলেন তৃণমূল নেত্রী। পাশাপাশি বার্তা দিলেন, বিজেপির যে হাওয়া বইছে বলে প্রচার চলছে তা আসলে দমকা হাওয়া এবং কালের নিয়মেই তা থেমে গিয়েছে।
‘দমকা হাওয়া’ কবিতায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লিখেছেন, ‘একটা দমকা হাওয়া এল, এত ধরাধরি, এত দরাদরি? প্রয়োজন ছিল কি?’ রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের অনুমান, দলবদলের প্রবণতার বিরুদ্ধেই এই লাইন লিখেছেন মমতা। তারপরই তৃণমূল নেত্রী লিখেছেন, ‘ধৈর্য না অধৈর্য- কোনটা দামি? ভয় পেলে? ভাবলে ফুরিয়ে যাবে? দমকা হাওয়া ছাড়বার আগেই তোমরা ছারখার’! মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, যাঁদের হৃদয় দুর্বল তাঁরা দমকা হাওয়ায় ভয় পেয়েছেন, গড়াগড়ি খেয়েছেন। তাতে তাঁদের মুখোশটা খুলে গেল। কিন্তু সেই হাওয়াও থেমে গেল।
রাজ্যে বিজেপির আগ্রাসী রাজনীতিকে দমকা হাওয়া হিসেবেই অভিহিত করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যাঁরা সেই দমকা হাওয়ায় ভয় পেয়ে আত্মসমর্পণ করেছেন (পড়ুন বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন), তাঁদের উদ্দেশে তীব্র কটাক্ষ ঝরে পড়েছে মমতার কলমে। কবিতার শেষে তিনি লিখেছেন, দমকা হাওয়া চলে গেলো, কিন্তু চিনিয়ে দিয়ে গেলো, ভয় পেয়ে তাড়াতাড়ি পগার পার হওয়ার চেষ্টা করলেন কারা। এর মাধ্যমে ঠিক কাদের কথা মমতা বলতে চেয়েছেন, তাও জলের মতো পরিষ্কার।
Comments are closed.