কৃষকের পাশে রাজ্য, ৩ মাসে ১২ লক্ষেরও বেশি ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষক কিষাণ ক্রেডিট কার্ডের আওতায়

করোনা পরিস্থিতিতেও উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে অগ্রসর হল মমতার সরকার। মাত্র ৯০ দিনেই রাজ্যের ১২ লক্ষের বেশি ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষক ‘কিষাণ ক্রেডিট কার্ড’ (কেসিসি) গ্রাহক হিসেবে নথিভুক্ত হলেন।

জানা গিয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর নজরদারি এবং অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রের তত্ত্বাবধানে ‘কিষাণ ক্রেডিট কার্ড’ প্রকল্পে এবার যে কৃষকদের নাম নথিভুক্ত হয়েছে, তাঁরা এর আগে কোনও কৃষি ঋণই নেননি। তাই কেসিসি গ্রাহক হিসেবে নাম নথিভুক্ত হওয়ায় চলতি খরিফ মরসুমে ওই কৃষকরা দারুণ উপকৃত হবেন বলে আশাবাদী রাজ্য সরকার।

গত বৃহস্পতিবার স্টেট লেভেল ব্যাঙ্কার্স কমিটির (এসএলবিসি) ভার্চুয়াল বৈঠকে কেসিসি’তে নতুন নাম তালিকাভুক্ত হওয়ার বিষয়টি অনুমোদিত হয়। কেসিসি গ্রাহক বৃদ্ধির কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে রাজ্য সমবায় এবং আঞ্চলিক গ্রামীণ ব্যাঙ্কগুলি।

অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রের নেতৃত্বাধীন এই বৈঠকে অর্থ, পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন, কৃষি, ক্ষুদ্র কুটির ও মাঝারি শিল্প দফতরের অতিরিক্ত মুখ্যসচিব ও প্রধান সচিব ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রীর কৃষি উপদেষ্টা। এসএলবিসি’র পক্ষে রাজ্যের লিড ব্যাঙ্ক পিএনবি’র এগজিকিউটিভ ডিরেক্টর, আরবিআই’এর পূর্বাঞ্চলীয় প্রধান, নাবার্ড সহ বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত এবং বেসরকারি ব্যাঙ্কের প্রতিনিধিরাও ছিলেন এই বৈঠকে। আলোচনায় রাজ্যের এমএসএমই এবং স্বনির্ভর গোষ্ঠী প্রকল্প (এসএইচজি) নিয়েও গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে খবর। এমএসএমই ক্ষেত্রে চলতি আর্থিক বছরে ৯০ হাজার কোটি এবং এসএইচজি ক্ষেত্রে ১৫ হাজার কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হবে বলে ঠিক হয়েছে বৈঠকে।

এসএলবিসি সূত্রেই জানা গিয়েছে, গত জুন মাস থেকে ৩১ অগাস্ট পর্যন্ত নতুন করে মোট ১২ লক্ষ ১১ হাজার কৃষককে কেসিসি গ্রাহক হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। অর্থদফতর সূত্রে খবর, ব্যাঙ্কগুলিকে আগামী ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে এই সংখ্যাকে ২০ লক্ষে নিয়ে যেতে বলা হয়েছে। এখনও কেসিসি’র জন্য সাড়ে পাঁচ লক্ষ আবেদনপত্র ব্যাঙ্কগুলির কাছে আছে। এছাড়া আরও যে ২.৬ লক্ষ আবেদন নানা কারণে বাতিল করেছিল ব্যাঙ্ক, সেগুলি নতুন করে স্ক্রুটিনি করে পাঠানোর জন্য জেলাশাসকদের নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য। মমতার পরামর্শ ছিল গ্রামীণ অর্থনীতি বিকাশের লক্ষ্যে মৎস্যজীবী এবং পশুপালকদেরও কেসিসি’র আওতায় আনা হোক। তাঁর পরামর্শ মেনে মৎস্যজীবী এবং পশুপালকদেরও কেসিসি’র আওতায় আনা হয়েছে। অর্থ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্য সমবায় ব্যাঙ্ক এই পর্বে ৩.০৫ লক্ষ এবং আঞ্চলিক গ্রামীণ ব্যাঙ্কগুলি ৩.০৪ লক্ষ কেসিসি করিয়েছে। মোট ২২টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক বাকি ৫.৯৪ লক্ষ কেসিসি করেছে।

এসএলবিসি সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৯-২০ আর্থিক বছরে রাজ্যের মোট ৬.১৬ লক্ষ স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে মোট ৯ হাজার ২২৫ কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হয়েছিল। চলতি আর্থিক বছরে ঋণ দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ১৫ হাজার কোটি টাকা করার জন্য রাজ্য সরকারের তরফে বলা হয়েছে। ঋণ নেওয়ার জন্য এখনও পর্যন্ত ৪ হাজার ৮০০টি আবেদন জমা রয়েছে বিভিন্ন ব্যাঙ্কের কাছে।

Comments are closed.