মঙ্গলবার ভার্চুয়াল জনসভা থেকে তৃণমূলকে করোনা এক্সপ্রেসে চাপিয়ে বাংলা ছাড়া করার হুঙ্কার দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। অমিত শাহের সভার পর থেকেই কখনও রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র আবার কখনও রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ওব্রায়েন কিংবা মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, পালা করে পাল্টা আক্রমণ শানিয়েছিলেন বিজেপির দিকে। প্রায় ২৪ ঘণ্টা পর প্রথমবার এ বিষয়ে মুখ খুললেন মমতা। নাম না করে অমিত শাহের দলকে কটাক্ষ করে বললেন, অবিবেচনামূলক দূরভিষন্ধী।
মঙ্গলবার অমিত শাহের করোনা এক্সপ্রেস কটাক্ষ নিয়ে মমতা বলেন, মানুষ পরিযায়ী শ্রমিকদের ট্রেনকে করোনা এক্সপ্রেস বলছে, সেটাই বলেছি। পাশাপাশি মমতা ব্যানার্জির প্রশ্ন, মানুষ জানতে চাইছে, লকডাউনের আগেই এক সপ্তাহ ধরে কেন পরিযায়ী শ্রমিকদের ট্রেনে বাড়ি ফেরানো গেল না? কেন সংক্রমণ যখন বাড়ছে তখন অসহায় শ্রমিকদের জন্য ট্রেনের ব্যবস্থা করা হল? তাতে সোশ্যাল ডিসট্যান্সিংয়ের নিয়মনীতি বালাই নেই।
অমিত শাহ অভিযোগ করেছিলেন, বাংলা ট্রেন চায়নি। পাল্টা মমতা ব্যানার্জি জানান, রাজ্যে মোট ২৫৫ টি শ্রমিক স্পেশাল ট্রেন আসবে। এর মধ্যেই ১১ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিক ফিরে এসেছেন। আগামী কয়েকদিনে আরও ২২ টি ট্রেনে হাজার তিরিশেক মানুষ রাজ্যে ফিরবেন।
বাংলাতেও বিভিন্ন রাজ্য থেকে মানুষ এসে কাজ করেন। লকডাউনের সময় সমস্ত রাজ্য থেকে পরিযায়ী শ্রমিকদের বাড়ি ফেরার ঢল নামলেও, বাংলা থেকে পরিযায়ী শ্রমিকদের বেশিরভাগই ফিরে যেতে চাননি বলে দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, তাহলে মহারাষ্ট্র, গুজরাতের সুরাটে কিংবা দিল্লিতে যাঁরা কাজে গিয়েছিল, তাঁদের গাদাগাদি করে পাঠানো হল কেন? বাংলার সরকার যেভাবে শ্রমিকদের জন্য পরিকল্পনা করেছিল, তা কেন কেন্দ্রের তরফে করা হয়নি? মমতা ব্যানার্জি বলেন, ট্রেনের ফ্রিকোয়েন্সি বাড়িয়ে ৫ বারের জায়গায় ১০ বার চালানো যেতে পারত। কেন তা করা হল না? কেন গাদাগাদি করে শ্রমিক ঠেঁসে সংক্রমণ ছড়ানোর সুযোগ করে দেওয়া হল? প্রশ্ন মমতা ব্যানার্জির।
রাজ্যে যে সমস্ত শ্রমিক ফিরছেন, মানবিকতার খাতিরেই তাঁদের সোয়াব টেস্ট স্টেশনে না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ২-৩ দিন ধরে ট্রেনে চড়ে আসার পর ওই বিপুল সংখ্যক মানুষকে স্টেশনে আটকে রেখে সোয়াব টেস্ট করা মানবিক বলে মনে হয়নি। তাই ৫ রাজ্য থেকে ফেরা প্রত্যেক ব্যক্তিকে ৭ দিনের জন্য বাধ্যতামূলক ইন্সস্টিটিউশনাল কোয়ারেন্টিনে রাখা হচ্ছে। তার মধ্যে রিপোর্ট নেগেটিভ হলে বাড়ি ফিরছেন পরিযায়ী শ্রমিক। টেস্ট রিপোর্ট পেতে দেরি হচ্ছে, এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে মমতা বুধবার আশ্বাস দেন, আশা করছি রিপোর্ট পেতে এবার থেকে আর দেরি হবে না।
Comments are closed.