রাফাল চুক্তি নিয়ে অবশেষে সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা জমা দিল কেন্দ্র

অবশেষে রাফাল চুক্তি সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য মুখবন্ধ করা খামে সুপ্রিম কোর্টে জমা দিল কেন্দ্র। সম্প্রতি রাফাল চুক্তি নিয়ে কংগ্রেস ও বিজেপির মধ্যে কাজিয়া তুঙ্গে ওঠে। প্রসঙ্গত, রাফাল চুক্তি নিয়ে সমস্ত অর্থ সংক্রান্ত তথ্য জানতে চেয়ে দেশের শীর্ষ আদালতে পিটিশন জমা দিয়েছিলেন কয়েকজন মামলাকারী।
সম্প্রতি দেশের শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ-এর নেতৃত্বে তিন বিচারপতি বেঞ্চ কেন্দ্রের কাছে জানতে চায়, কীভাবে কোন পরিস্থিতিতে ৩৬টি যুদ্ধ বিমান কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। কেন্দ্রকে এবিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানাতে বলে শীর্ষ আদালত। পাশাপাশি রাফালের দাম জানানোর নির্দেশ দেন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ। যদিও অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে বেণুগোপাল এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে সওয়াল করেন, রাফাল চুক্তি অনুযায়ী, প্রকাশ্যে দাম জানানো নিয়ম বহির্ভূত।
এর জেরেই শুরু হয়েছিল প্রবল রাজনৈতিক বিতর্ক। তারই মধ্যে সোমবার কেন্দ্র সুপ্রিম কোর্টে একটি সিল করা কভারের মধ্যে রাফাল সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য জমা দিল। ফ্রান্সের ড্যাসল্টের কাছ থেকে ৩৬ টি রাফাল বিমান কিনতে খরচ পড়েছে ৫৯ হাজার কোটি টাকা। সুপ্রিম কোর্ট জানায়, এই মামলাটি নিয়ে আলোচনা হবে আগামী বুধবার। সরকারের জমা দেওয়া তথ্যপঞ্জি থেকে জানা যাচ্ছে, রাফাল জেট নিয়ে ভারতের চুক্তিকারী দলটি ৪ অগাস্ট, ২০১৬ সালে রিপোর্ট জমা দিয়েছিল। অর্থ ও আইন মন্ত্রক ওই চুক্তিটিকে অনুমোদন দেয় ২৪ অগাস্ট, ২০১৬ তে। রাফাল বিমান কেনার প্রতিটি ধাপ সম্পর্কিত তথ্য কংগ্রেসের আমলে ২০১৩ সালে প্রথম দিনের আলো দেখে।
রাফাল চুক্তি সম্পর্কিত সব তথ্য কেন্দ্রকে জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। সেই নির্দেশ মেনেই সোমবার সেই তথ্য তুলে দিল কেন্দ্র। কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়েছে, এক বছর ধরে আলোচনা চলার পর ফ্রান্সের যুদ্ধ বিমান প্রস্তুতকারী সংস্থা ড্যাসল্টের সঙ্গে চুক্তি হয়। আর এই চুক্তি হয়েছে ডিফেন্স প্রকিউরমেন্ট প্রসিডিওর ২০১৩’র নিয়ম মেনে। প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী যশবন্ত সিনহা এবং অরুণ শৌরির রাফাল নিয়ে করা মামলা এদিন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ, বিচারপতি ইউ ইউ ললিত এবং বিচারপতি কে এম জোসেফের বেঞ্চে শুনানি হয়। এদিন এজলাসে রাফাল চুক্তির তথ্য অনলাইনে প্রকাশ করার দাবি জানান আবেদনকারীদের আইনজীবী। প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ জানায়, রাফাল বিষয়ে যে সব তথ্য প্রকাশ্যে জানানো সম্ভব, কেন্দ্রকে অতি অবশ্যই অনলাইনে প্রকাশ করতে হবে এবং মামলাকারীদের কাছে সেই তথ্য তুলে দিতে হবে।

Comments are closed.