রাতভর চলল তল্লাশি। এখনও পর্যন্ত মৃত ১৪, নিখোঁজ ১৭০। রবিবার উত্তরাখণ্ডে জোশীমঠের কাছে ধউলিগঙ্গাতে হিমবাহ ফেটে প্রবল জলচ্ছাসের জেরে ভেসে গিয়েছে একের পর এক গ্রাম। হিমবাহের জলের তোড়ে তপোবনের কাছে এনটিপিসির বিদ্যুৎপ্রকল্পটিও ক্ষতিগ্রস্ত। এছাড়াও ক্ষতিগ্রস্থ জোশীমঠ সংলগ্ন এলাকা। সঙ্গে সঙ্গে উদ্ধার কাজে নেমে পড়ে TBP, NDRF, SDRF-এর দল। রাতভর চলে উদ্ধারকাজ। জানা গিয়েছে, খনও পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ১৪ জনের। রেনী গ্রামের কাছে ঋষিগঙ্গা পাওয়ার গ্রিড প্রোজেক্টে ১৫০ জন শ্রমিক কাজ করছিল তারা সকলেই নিখোঁজ।
উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী ত্রিবেন্দ্র সিংহ রাওয়াত জানিয়েছেন, বিভিন্ন সুড়ঙ্গে আটকে রয়েছে শ্রমিকরা। একটি সুড়ঙ্গ থেকে শ্রমিকদের উদ্ধার করা সম্ভব হলেও অন্য সুড়ঙ্গে আটকে থাকা শ্রমিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারা যায়নি। জোরে ডাকা সত্ত্বেও সাড়া পাওয়া যায়নি। প্রশাসনের তরফ থেকে আশঙ্কা করা হচ্ছে ১০০ থেকে ১৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে। জানা গিয়েছে, ঋষিগঙ্গা প্রজেক্ট নিয়ে দীর্ঘদিন আপত্তি জানিয়ে আসছে রেনী গ্রামের বাসিন্দারা। প্রকল্প তৈরিতে এলোপাথাড়ি বিস্ফোরণে নদীখাত আর পাহাড়ের ক্ষতি হচ্ছিল বলে অভিযোগ তুলে আসছিলেন তাঁরা।
এই নিয়ে উত্তরাখণ্ড হাইকোর্টে মামলাও হয়। উত্তরাখণ্ডে বিপর্যয়ের পর গঙ্গার উপর বিদ্যুৎপ্রকল্প তৈরি না করার পক্ষে গিয়ে কথা বলেছেন বিজেপি নেত্রী উমা ভারতী। একটি টুইট করে তিনি একথা জানিয়েছেন। একদা জলসম্পদ, নদী উন্নয়ন বিষয়ক মন্ত্রী ছিলেন উমা ভারতী। সে সময়ও তিনি গঙ্গার উপর বিদ্যুৎপ্রকল্প তৈরি না করার জন্য জানিয়েছিলেন। ১৯৭০ সালের চিপকো আন্দোলনের সময় এই গ্রাম উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিয়েছিল। অথচ রবিবার হিমবাহ বিস্ফোরনে সেই গ্রামই বিপর্যয়ের মুখে। আর ওই ঋষিগঙ্গা প্রজেক্ট লণ্ডভণ্ড।
কয়েকদিন ধরেই চলছিল প্রবল বৃষ্টি। শনিবার রাতেই জারি করা হয়েছিল সতর্কবার্তা। শনিবার রাতেই জোশীমঠে নন্দাদেবীর হিমবাহ ভেঙ্গে পড়ে। রবিবার সকালে সেই ধস আরও ভয়াবহ আকার নেয়। প্রবল বেগে এগিয়ে আসে জলের স্রোত। তপোবন এলাকার রেনি গ্রামে ঋষিগঙ্গা বিদ্যুৎ প্রকল্পের উপর হিমবাহ ভেঙে পড়ার ফলে জলে ভেসে যায় আশেপাশের বাড়ি সহ গোটা এলাকা।
ইতিমধ্যেই মৃতদের পরিবারকে ৪ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী ত্রিবেন্দ্র সিং রাওয়াত। আরও ২ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণের ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। গুরুতর জখমদেরও ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
Comments are closed.