থ্যালাসেমিয়াকে সঙ্গে নিয়েই গরীব পরিবারের ছেলে তন্ময় বাড়িতে বসেই চক দিয়ে বানাচ্ছেন ভাস্কর্য, সরকারি সাহায্যের আর্জি

স্কুলে পড়াশোনার জন্য শিক্ষকরা ব্ল্যাকবোর্ডে ব্যবহার করেন চক। আর্থিক অনটনের কারণে খুব বেশিদূর লেখাপড়া করেননি তিনি। তাই চক দিয়ে শিক্ষক শিক্ষিকারা কীভাবে পড়ান তাও বেশিদিন দেখতে পারেননি তিনি। কিন্তু এই চকই তাঁর জীবনে মোড় ঘুরিয়ে দিল। তিনি দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলার ডায়মন্ডহারবারের নূরপুরের বাসিন্দা তন্ময় পুরকাইত। চক দিয়ে ভাস্কর্য তৈরী করে বিখ্যাত হয়েছেন তন্ময়। দীর্ঘ কয়েকবছর ধরে থ্যালাসেমিয়ার সঙ্গে লড়াই করেও গরীব পরিবারের তন্ময় এখন বেঁচে আছেন ছোট্ট চক নিয়েই।

ছোট্ট একটা চক দিয়েই তিনি সপরিবারে দূর্গা, ব্যাট, কামান সহ যুদ্ধ বিমান তৈরী করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন তিনি। নিজের ইচ্ছাতেই এই শিল্পকলার সঙ্গে জড়িয়ে পড়া। পাননি কারোর কাছে শিক্ষাও। বাবা ও মাকে নিয়ে ছোট্ট পরিবার তন্ময়ের। বাবা মাটি কাটার কাজ করেন মা সাধারণ গৃহবধু। ছোট থেকে শখ ছিল ছবি আঁকা শেখার। কিন্তু টাকার অভাবে সেটাও হয়নি। ২০১১ সালে হঠাৎ মারণ রোগ থ্যালাসেমিয়া ধরা পড়ে তন্ময়ের। খেলা ধূলা বন্ধ হয়ে যায়। চিকিৎসকদের পরামর্শে বাইরে কাজ করাও বন্ধ। তাই বাড়িতেই শুরু হয় শিল্পকলা।

তন্ময় জানিয়েছেন, বাইরে কাজ করতে পারি না, বন্ধুদের সঙ্গে খেলতেও পারি না। তাই ভাবলাম খাতা কলমেই ছবি আঁকব। কিন্তু আঁকার জন্য পেন্সিল, রবার কেনার টাকা ছিলনা। তাই ভাবলাম কম পয়সার চক দিয়েই শিল্পকলা ফুটিয়ে তুলি। চকের পাশাপাশি শোলার কাজও করেন তন্ময়।

তন্ময়ের মা সুষমা পুরকাইত জানিয়েছেন, মা হিসেবে আমি খুশি। তন্ময়কে এই বিষয়ে উদ্বুদ্ধ করেন বন্ধুরা। প্রতিবেশিরাও এখন গর্বিত তন্ময়ের জন্য। কিন্তু গরীব পরিবারের একটাই দাবি, সরকারি সাহায্যের। প্রতিমাসে রক্ত দিতে হয়। পেশায় মাটি কাটার কাজ করে বাবার পক্ষে তন্ময়ের চিকিৎসা চালানো খুব কঠিণ হয়ে পড়ছে। তাই এই শিল্পীর দিকে সরকারি দৃষ্টিপাত চাইছে পরিবার সহ এলাকার মানুষজন।

Comments are closed.