এয়ারটেল, ভোডাফোন আইডিয়া সহ বেসরকারি টেলিকম সংস্থাগুলিকে তাদের বকেয়া পরিশোধের সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিল শীর্ষ আদালত।
সেই রায় পুনর্বিবেচনার জন্য সুপ্রিম কোর্টের কাছে আবেদন করে কেন্দ্র। যা নিয়ে কেন্দ্রের পাশাপাশি টেলিকম সংস্থাগুলিও সুপ্রিম কোর্টের ভর্ৎসনার মুখে পড়ে। সংস্থাগুলি কি নিজেদের বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাশালী বলে মনে করে? এই প্রশ্ন তোলেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা।
টেলিকম সংস্থাগুলিকে বকেয়া পরিশোধের জন্যে আগামী ২০ বছর বা তারও বেশি সময় দেওয়া হোক অথবা বাকি এজিআর কিস্তির মাধ্যমে পরিশোধ করার অনুমতি দেওয়া হোক, এমনই আবেদন নিয়ে শীর্ষ আদালতে যায় কেন্দ্র। সেই সওয়ালের পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্র এবং টেলি সংস্থাগুলো, দুই পক্ষকেই বুধবার ভর্ৎসনা করল দেশের সর্বোচ্চ আদালত। বিচারপতি অরুণ মিশ্রের ডিভিশন বেঞ্চ মন্তব্য করে, আমরা কি নির্বোধ? এটা আদালত অবমাননা নয়? ক্ষুব্ধ বিচারপতিদের মন্তব্য, এটা আদালতের সম্মানকে অবজ্ঞা করা। এই রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন আদালত অবমাননার সামিল। ডিপার্টমেন্ট অফ টেলিকম (ডট) কে এই আবেদন প্রত্যাহার করতে বলেন বিচারপতিরা।
কেন্দ্রের তরফে এই আবেদনে বলা হয়, টেলিকম সংস্থার মধ্যে যারা বকেয়া পরিশোধের ব্যাপারে দায়বদ্ধ ছিল, তারা ইতিমধ্যেই টাকা মেটানো শুরু করেছে এবং বকেয়া অর্থের বেশ কিছুটা ইতিমধ্যে আদায়ও হয়েছে। কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করলে হিতে বিপরীত হতে পারে বলে মনে করছে কেন্দ্র। সরকারের যুক্তি, এই বিষয়ে টেলিকম সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে কড়া কোনও পদক্ষেপ করলে টেলি যোগাযোগ ও পরিষেবায় প্রভাব পড়বে। এর ফলে যে কেবল দেশের সামগ্রিক অর্থনীতিতেই বিরূপ প্রভাব ফেলবে তা নয়, সারা দেশের গ্রাহকদের স্বার্থও ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে কেন্দ্রের হয়ে সওয়াল করেন আইনজীবী।
যার প্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্ট জানায়, বিল তৈরি হয়েছে, ক্যাগ অডিট করেছে, এখন কীভাবে এই আবেদন গ্রহণ করা হতে পারে? সংস্থাগুলি কি নিজেদের খুব প্রভাবশালী ভাবে? যদি ওরা আদালতকে প্রভাবিত করবে ভাবে, তবে তা ভুল, মন্তব্য ক্ষুব্ধ বিচারপতিদের।
এই সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে কেন কেন্দ্রীয় সরকার পদক্ষেপ করছে না, সে প্রশ্ন তুলে সরকার পক্ষকে ভর্ৎসনা করে শীর্ষ আদালত। বিচারপতিরা এই ঘটনাকে ‘আদালত অবমাননা বলেই মনে করছেন।
গত বছরের অক্টোবর মাসে শীর্ষ আদালত নির্দেশ দেয়, তিন মাসের মধ্যে টেলিকম সংস্থাগুলিকে এজিআর বাবদ ৯২ হাজার কোটি টাকা দিতে হবে কেন্দ্রকে। কিন্তু এখন টেলিকম সংস্থাগুলির হয়েই কেন্দ্রের এই সওয়ালের তীব্র নিন্দা করে বিচারপতি অরুণ মিশ্র বলেন, সরকারের যদি এমন মনোভাব হয়, তাহলে আমরা নিজেদের আলাদা করছি এ ব্যাপারে।
Comments are closed.