গত কয়েকদিন ধরে রাজ্য রাজনীতিতে একমাত্র আলোচনার বিষয় শুভেন্দু অধিকারী, নির্দিষ্টভাবে বললে তৃণমূলের সঙ্গে রাজ্যের পরিবহণ, সেচ ও জলসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রীর সম্পর্ক!
এই অবস্থায় জল্পনা ছড়িয়েছে, সত্যিই কি দলের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয়েছে শুভেন্দু অধিকারীর? এই জল্পনায় নয়া মাত্রা যোগ হয়েছে গত ১০ নভেম্বর নন্দীগ্রামে ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির সমাবেশে শুভেন্দু অধিকারীর বক্তৃতা নিয়ে। কারও নাম না করেই সেদিন শুভেন্দু বলেছিলেন, লড়াইয়ের ময়দানে দেখা হবে, রাজনৈতিক মঞ্চে দেখা হবে। সেদিনই বিকেলে নন্দীগ্রামে পাল্টা সমাবেশ করে তৃণমূল এবং সেখানে ববি হাকিম জানিয়েছিলেন, নন্দীগ্রাম আন্দোলনের মূল কাণ্ডারি মমতা ব্যানার্জি।
এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কাঁথিতে অধিকারী বাড়িতে যান তৃণমূলের নির্বাচনী স্ট্র্যাটেজিস্ট প্রশান্ত কিশোর। সেখানে দীর্ঘক্ষণ তিনি শিশির অধিকারীর সঙ্গে কথা বললেও, দেখা হয়নি শুভেন্দুর সঙ্গে। সূত্রেরর খবর, সাম্প্রতিক সময়ে শুভেন্দুর সঙ্গে একাধিকবারই শুভেন্দুর সঙ্গে দেখা করে কথা বলতে চেয়েছেন পিকে। কিন্তু কোনওবারই দু’জনের মুখোমুখি কথা হয়নি। যা থেকে তৃণমূল নেতৃত্বও মনে করছেন, পরিস্থিতি যেদিকে যাচ্ছে তা যে কোনও মুহূর্তে নতুন কোনও দিকে মোড় নিতে পারে। সেই অনুযায়ী সবরকমের চিন্তাভাবনাও করে রাখছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। শুভেন্দু অধিকারী কী করবেন তা নিয়ে কৌতূহলী দৃষ্টিতে তাকিয়ে তাঁরা।
এই অবস্থায় প্রায় প্রতিদিনই রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় রাজনৈতিক কর্মসূচি নিচ্ছেন শুভেন্দু অধিকারী। বৃহস্পতিবার ঘাটালে শুভেন্দুর মুখে শোনা গেল তৃণমূল নেত্রীর কথা। তিনি বলেন, ২০১১ বিধানসভা নির্বাচনের আগে দলনেত্রী তাঁকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন ঘাটাল সহ বিভিন্ন এলাকায়। তাঁর নেতৃত্বে রাজনৈতিক লড়াই হয়েছিল। শুভেন্দুর এই মন্তব্য দলের অন্দরে জল্পনা ও বিভ্রান্তি আরও বাড়িয়েছে। মমতা ব্যানার্জির নাম না করলেও, দলনেত্রীর কথা বলা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন তৃণমূল নেতৃত্ব।
কিন্তু তবুও প্রশ্ন উঠছে, দলের সঙ্গে শুভেন্দুর যে দূরত্ব তৈরি হয়েছে এবং তা কাটাতে প্রশান্ত কিশোর যে উদ্যোগ নিয়েছেন, তাতে কি বরফ গলবে? সূত্রের খবর, আগামী এক সপ্তাহ থেকে ১০ দিনের মধ্যে হয়তো এ ব্যাপারে স্পষ্ট ইঙ্গিত মিলতে পারে যে, সত্যিই পিকের উদ্যোগে বরফ গলল কিনা! এদিকেই এখন তাকিয়ে তৃণমূল শিবির তো বটেই, বিজেপি, সিপিএম এবং কংগ্রেস নেতারাও।
Comments are closed.