লোকসভা ভোটে রাজ্যে ১৮ আসনের কাঁধে চেপে ২০২১ বিধানসভায় বাজিমাত করতে চাইছে বিজেপি। ভোটের আগে সংগঠনের জোর পরখ করে নিতে গ্রাম বাংলায় ঘুরছেন অমিত শাহ। গরিব আদিবাসী কর্মীর বাড়িতে অমিত শাহের পাত পেড়ে খাওয়ার ছবি ইন্টারনেটে ঘুরছে। এই অবস্থায় বাঁকুড়ায় সাংগাঠনিক বৈঠকে এমন একটি মন্তব্য করেছেন শাহ, যা নতুন করে তৃণমূলের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়েছে। বিড়ম্বনায় পড়েছে বাম শিবির।
বৃহস্পতিবার বাঁকুড়ার দলীয় সভায় অমিত শাহ যা বলেছেন, গত লোকসভা ভোটের ফল বেরোনোর পর থেকে তা শোনা যেত রাজ্যের তৃণমূল নেতাদের মুখে। বাংলায় বিজেপির রাতারাতি এমন বাড়বাড়ন্তের কারণ হিসেবে তৃণমূলের দাবি ছিল বাম ভোট রামে গিয়েছে। বৃহস্পতিবার তৃণমূলের দাবিতে কার্যত সিলমোহর দিয়ে অমিত শাহ বলে দিলেন, গত লোকসভা ভোটে সিপিএমের অনেকেই বিজেপিকে সাহায্য করেছিল।
সুযোগ হাতছাড়া করেনি রাজ্যের শাসক দল। তৃণমূলের বর্ষীয়ান নেতা সুব্রত মুখার্জি বলেন, আমরা শুরু থেকে বলে আসছি লোকসভায় বিজেপির সাফল্য একা বিজেপির নয়। এতদিন পরে অমিত শাহ নিজে তা বলে দিলেন। সিপিএমের কাজ হল মুখে বিজেপি বিরোধিতা আর তলায় তলায় বিজেপিকে ভোট ট্রান্সফার। বাঙালি সিপিএমের স্বরূপ চিনেছে বলেই তাকে উৎখাত হতে হয়েছে মমতা ব্যানার্জির হাতে, বলেন রাজ্যের মন্ত্রী সুব্রত মুখার্জি।
গত লোকসভায় রাজ্যে বিজেপি পেয়েছে প্রায় ৪১ শতাংশ ভোট। অথচ এতদিন বাংলায় বিজেপি পেয়ে এসেছে কমবেশি ১০ শতাংশ ভোট। তৃণমূলের প্রশ্ন, তাহলে বিপুল বাড়তি ভোট এল কোথা থেকে? রাজ্যে বাম ভোটের একটা অংশ যে বিজেপির ঝুলিতে ঢুকেছে তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই কিন্তু অমিত শাহ যেভাবে মন্তব্যটি রাখলেন, তাতে প্রশ্ন উঠছে, তিনি কি এ কথা বলে রাজ্য রাজনীতিতে সিপিএমকে পুরোপুরি অপ্রাসঙ্গিক করে তুলতে চাইছেন, যাতে লোকসভার সমর্থনে ভাঁটা না পড়ে?
অমিত শাহের উদ্দেশ্য যাই থাক, তাঁর মন্তব্য যে তৃণমূলের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়েছে তা স্পষ্ট। অমিত শাহের মন্তব্যের কী জবাব আসে আলিমুদ্দিন স্ট্রিট থেকে সেটাই এখন দেখার।
Comments are closed.