২০১৬ বিধানসভা ভোটে তৃণমূল একাই পেয়েছিল ২১১ টি আসন। তারপর অন্যান্য দল থেকে বেশ কয়েকজন এসেছেন। আবার কয়েকজন বিধায়ক তৃণমূল ছেড়ে অন্য দলে গেছেন। সব মিলিয়ে এখনও তৃণমূলের বিধায়ক সংখ্যা ২২০ এর আশেপাশে।
দরজায় টোকা মারছে আরেকটি বিধানসভা ভোট। সেই ভোটে তৃণমূলের টিকিটে জয়ী প্রার্থীরা সকলেই কি টিকিট পাবেন?
টাইমস নাওকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তৃণমূলের নির্বাচনী কৌশলী প্রশান্ত কিশোর দাবি করেছিলেন, দল ছেড়ে বিজেপিতে ভিড়ছেন যাঁরা, তাঁদের বেশিরভাগই নিজের কেন্দ্রে জেতার মতো অবস্থায় নেই। আর বাকিদের বিরুদ্ধে রয়েছে দুর্নীতি সংক্রান্ত নানা অভিযোগ। তাই গ্রেফতারির ভয়ে বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন বলে মত পিকের।
২০১৯ লোকসভার বিধানসভাওয়ারি ফল অনুযায়ী তৃণমূল এই মুহূর্তে এগিয়ে ১৫৪ টি বিধানসভায়। ১৭ তারিখ মেদিনীপুর কলেজ মাঠে অমিত শাহের সমাবেশে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন প্রাক্তন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী সহ ১০ বিধায়ক। তাঁদের মধ্যে ৬ জন তৃণমূলের। আবার শুভেন্দু পর্বের আগেও কোচবিহার দক্ষিণের তৃণমূল বিধায়ক মিহির গোস্বামী বিজেপিতে যোগ দেন।
এই অবস্থায় প্রশ্ন হল, তৃণমূলের প্রার্থী তালিকায় এবার কারা থাকবেন, কাদের নাম কাটা পড়বে।
লোকসভায় দলের খারাপ ফলের পর তৃণমূলের ভোট কৌশল রচনার ভার নেন প্রশান্ত কিশোর। সেই সময় থেকেই পিকের টিম বাংলার গ্রামে শহরে ঘুরছে। সংগঠনের সমান্তরালভাবে তৈরি হয়েছে রিপোর্ট। দলের শীর্ষ নেতৃত্ব সংগঠন ও পিকের টিমের রিপোর্ট পাশাপাশি রেখে বানাচ্ছেন চূড়ান্ত তালিকা। একেবারে শেষে সেই তালিকা নিয়ে বসবেন তৃণমূল নেত্রী। প্রকাশ হবে বিধানসভায় তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা।
তৃণমূল সূত্রের খবর, রাজ্যের ২৯৪ টি আসনে যে প্রার্থী তালিকা তৈরি হবে তার জন্য মূলত নজর রাখা হচ্ছে প্রার্থীদের সম্বন্ধে কী বলছেন স্থানীয়রা, তার উপর। তেমনই দুর্নীতি বা স্বজনপোষণের অভিযোগ আছে কিনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। জনমানসে প্রার্থীর ভাবমূর্তি কেমন, মূল বিচার্য সেটাই।
জানা যাচ্ছে প্রাথমিক তালিকা তৈরি প্রায় শেষ। সূত্রের খবর, অন্তত ৪০-৪৫ জন জয়ী বিধায়ক এবার টিকিট পাবেন না। তাঁদের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ পেয়েছে শীর্ষ নেতৃত্ব। অভিযোগের সত্যাসত্য খতিয়ে দেখে তাঁদের বাদ দেওয়া হতে পারে বলে তৃণমূল সূত্রে খবর। এছাড়া এলাকায় জনপ্রিয়তা কমলেও সার্বিকভাবে অন্য কোনও অভিযোগ নেই বেশ কিছু তৃণমূল বিধায়কের আসন বদলে যেতে পারে বলে শোনা যাচ্ছে। সেক্ষেত্রে জয় পাওয়া আসন ছেড়ে দিতে হতে পারে কয়েকজনকে। সেখানে দলের পক্ষ থেকে নতুন প্রার্থী দেওয়া হবে। প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে তরুণ প্রজন্মকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। কাজের লোক কিন্তু বয়স বেশি, এমন মানুষকেও বাদ দেওয়া হবে না। মূলত নবীন ও প্রবীণের মেলবন্ধন হতে চলেছে তৃণমূলের প্রার্থী তালিকায়।
ইতিমধ্যেই এনিয়ে পার্টির মধ্যে তুমুল জল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছে। সমস্ত দিক খতিয়ে দেখে কে টিকিট পাবেন আর কে পাবেন না তা নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন মমতা ব্যানার্জি।
Comments are closed.