আমপানে ক্ষতিগ্রস্তদের ত্রাণ বিলিতে দুর্ণীতির অভিযোগে দল থেকে বহিষ্কার হুগলির তৃণমূল পঞ্চায়েত প্রধান

ঘূর্ণিঝড় আমপানে ত্রাণ বিলি নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগে হুগলির গরলগাছা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান মনোজ সিংহকে দল থেকে বহিষ্কার করল তৃণমূল। শুক্রবার দলের জেলা সভাপতি দিলীপ যাদবকে কলকাতায় ডেকে পাঠিয়েছিলেন তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চ্যাটার্জি ও দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি। নথিপত্র খতিয়ে দেখে পঞ্চায়েত প্রধান নরেন্দ্র নাথ সিংহ ওরফে মনোজ সিংহকে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নেয় তৃণমূল।

ঠিক কী নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে মনোজ সিংহের বিরুদ্ধে?

সূত্রের খবর, হুগলির চন্ডীতলা ২ ব্লকের গরলগাছা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান মনোজ সিংয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ, আমপান ঘূর্ণিঝড়ে বাড়ির ক্ষতি হয়েছে দেখিয়ে স্ত্রী মিনতি সিংহের নাম তিনি ক্ষতিপূরণ প্রাপকদের তালিকায় তুলে দিয়েছিলেন। অথচ ঝড়ের দাপটে যাঁদের প্রকৃত ক্ষতি হয়েছে তাঁদের নামই তালিকা থেকে বাদ দিয়ে দেওয়া হয়। শুধু তাই নয়, গরলগাছা পঞ্চায়েতের ১৬৬ জন ক্ষতিগ্রস্তের নামের তালিকা জমা দেন ওই গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান। যার ১০০ টিতে তাঁর নিজের ফোন নম্বর দেওয়া হয়। তাছাড়া সেই তালিকাতে স্ত্রী সহ পরিচিত আরও বেশ কয়েকজনের নাম তুলে দেন ওই পঞ্চায়েত প্রধান। কিন্ত বাস্তবে ঘূর্ণিঝড়ের দাপটে যাঁরা গৃহহীন হয়েছেন তাঁদের নাম এই তালিকা থেকে বাদ রয়ে গেছে।

বিষয়টি নজরে আসে তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ ব্যানার্জির। তিনিই হুগলির তৃণমূল সভাপতি দিলীপ যাদবকে এ নিয়ে অভিযোগ করেন এবং ওই পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে বলেন। এদিকে মনোজ সিংহকে অপরাধ স্বীকার করে পদত্যাগ করতে বলা হলে তিনি তা করেননি বলে তৃণমূল সূত্রে খবর। এরপর বিষয়টি চলে যায় তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির নির্দেশে ওই পঞ্চায়েত প্রধানকে এরপর বহিষ্কার করে তৃণমূল। মুখ্যমন্ত্রী বারবার বলেছেন ত্রাণবিলির ক্ষেত্রে কোনও দলবাজি নয়, কোনও দুর্নীতি নয়, স্বজনপোষণ চলবে না। যদি কেউ দুর্নীতি করে তাঁর বিরুদ্ধে প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে।

হুগলির তৃণমূল সভাপতি দিলীপ যাদবের কথায়, যেখানে আমপান ও করোনার জোড়া ধাক্কা সামলাতে সরকার ও প্রশাসন লড়াই করছে সেখানে ত্রাণ নিয়ে এমন দুর্নীতি দুর্ভাগ্যজনক। নিজের ক্ষমতার অপব্যবহার। অভিযোগ খতিয়ে দেখে শীর্ষ নেতৃত্বের সিদ্ধান্ত মেনেই ওই পঞ্চায়েত প্রধানকে সরানো হয়েছে বলে জানান তিনি। যাদব আরও জানান, হুগলির দাদপুর গ্রাম পঞ্চায়েত থেকেও এমন দুর্নীতির অভিযোগ এসেছে। সেই অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দুর্নীতিগ্রস্তদের দলে কোনও জায়গা নেই বলে মন্তব্য করেন হুগলির জেলা তৃণমূল সভাপতি।

 

 

Comments are closed.