বছর ঘুরলেও হয়নি রুল ফ্রেমিং, বিশবাঁও জলে CAA, ১৯ ডিসেম্বর মতুয়াদের সঙ্গে কথা শাহের

সামনের মাস থেকে মতুয়াদের নাগরিকত্ব দেওয়ার কাজ শুরু হবে। ক’দিন আগেই এই দাবি করেছিলেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়। কার্যত একই কথার পুনরাবৃত্তি শোনা গিয়েছিল বনগাঁ সফররত কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শেখাওয়াতের গলাতেও। এদিকে দু’দিন আগেই গোপালনগরের সভা থেকে মমতা ব্যানার্জি দাবি করেছিলেন, মতুয়ারা ভারতেরই নাগরিক। নতুন কোনও সার্টিফিকেটের দরকার নেই। 

এই টানাপোড়েনের মধ্যেই নাগরিকত্ব আইন পাশের ১ বছর পেরিয়ে গেল। এখনও বাকি রুল ফ্রেমিং। 

২০১৯ সালের ১১ ডিসেম্বর রাজ্যসভায় পাশ হয় নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন। ওই আইনবলে বাংলাদেশ, পাকিস্তান, আফগানিস্তান থেকে ধর্মীয় অত্যাচারের জেরে পালিয়ে ভারতে এলে নাগরিকত্ব পাবেন হিন্দু, শিখ, পার্সি, জৈন, বৌদ্ধ ও খিস্টান ধর্মাবলম্বীরা। বাদ মুসলিম। এই ইস্যু নিয়ে বিক্ষোভে উত্তাল হয় দেশ। বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে বৈষম্যের রাজনীতি করার অভিযোগ ওঠে। 

সেই আইন পাশের পর কেটে গিয়েছে গোটা একটি বছর। কিন্তু আইনের রুল ফ্রেমিং এখন পর্যন্ত করে উঠতে পারেনি মোদী সরকার। নিয়ম বলছে, কোনও আইন পাশ হওয়ার ৬ মাসের মধ্যে রুল ফ্রেম বা নিয়ম-বিধি তৈরি করে ফেলতে হয়। কাজ শেষ না হলে আরও ৬ মাস এক্সটেনশন মেলে। তারপর পরিস্থিতি বিচার করে আরও ৩ মাসের এক্সটেনশন। নভেম্বরই যা পেরিয়ে গিয়েছে। এই প্রেক্ষিতে প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি আইন স্রেফ খাতায় কলমেই থেকে যাবে? 

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, মতুয়াদের নিয়ে ইদানীং চিন্তা বেড়েছে বঙ্গ বিজেপির। বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুর বিজেপির সমস্ত সভা সমাবেশ বয়কট করেছেন। মূল কারণ বিজেপি নেতৃত্বের দেওয়া নাগরিকত্বের প্রতিশ্রুতি পালন না করা। 

এর সুযোগ নিতে দেরি করেনি তৃণমূল। গোপালনগরের সভা থেকে মতুয়া সম্প্রদায়ের জন্য কী কী করা হয়েছে তার খতিয়ান তুলে ধরেছেন মমতা। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে হরিচাঁদ ঠাকুরের জন্ম তিথিতে সরকারি ছুটি, মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগের প্রশংসা এসেছে খোদ শান্তনু ঠাকুরের কাছ থেকে। এই অবস্থায় মতুয়া ভোটে কী হাতছাড়া হতে চলল বিজেপির? এই প্রশ্ন যখন মাথা তুলছে তখন জানা গেল ১৯ ডিসেম্বর মতুয়াদের সঙ্গে কথা বলবেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ। সেদিন কী সিএএ নিয়ে বড়ো কোনও ঘোষণা করবেন অমিত শাহ?

রাজনৈতিক মহল বলছে, সিএএ লাগু হলে বাংলায় বিজেপি তার ডিভিডেন্ড তুলতে ঝাঁপিয়ে পড়বে, সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু এখনও যে আইনের নিয়ম-বিধি প্রণয়ন হয়নি, তা নিয়ে ভোটের মুখে গেরুয়া ব্রিগেড কতটা আশাবাদী হতে পারে, সেই প্রশ্ন কিন্তু থাকছেই। এখন সবার নজর ১৯ তারিখ অমিত শাহ কী বলেন তাঁর দিকে।

Comments are closed.