খারিজ তদন্ত রিপোর্ট, নয়া অভিযোগে গোরখপুর কাণ্ডে কাফিল খানের বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ যোগীর

গোরখপুরের বিআরডি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সাসপেন্ডেড চিকিৎসক কাফিল খানের বিরুদ্ধে নতুন করে তদন্ত শুরুর নির্দেশ দিল উত্তর প্রদেশ সরকার। ২০১৭ সালের অগাস্ট মাসে অক্সিজেনের অভাবে ৬০ শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় অভিযুক্ত কাফিল খানকে ক্লিনচিট দিয়েছিল পূর্বতন তদন্তকারী কমিটি। ফের ৭ টি অভিযোগের তদন্ত করবে সরকার গঠিত নতুন কমিটি।
কাফিল খানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, কর্তব্যে অবহেলা, প্রাইভেট প্র্যাকটিসের মতো একাধিক অভিযোগ আনে যোগী আদিত্যনাথের সরকার। যদিও তদন্তকারী কমিটি তাঁকে নির্দোষ বলে জানায়। রিপোর্টে এও বলা হয়, সেদিনের ঘটনায় কাফিল খানের ভূমিকা ছিল প্রশংসনীয়। রিপোর্টে বলা হয়, বেসরকারি সংস্থাকে টাকা না দেওয়ায় অক্সিজেনের সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু প্রথম থেকেই উত্তর প্রদেশের বিজেপি সরকার তা অস্বীকার করে এসেছে। খোদ মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ চিকিৎসক কাফিল খানকে দায়ী করছেন। এই প্রেক্ষিতে আগের রিপোর্ট অগ্রাহ্য করে কাফিল খানের বিরুদ্ধে নতুন করে তদন্ত শুরু করছে যোগী আদিত্যনাথ সরকার।
উত্তর প্রদেশের মেডিকেল এডুকেশনের মুখ্য সচিব রজনীশ দুবে জানিয়েছেন, আগের কমিটির রিপোর্টে কয়েকটি ঘটনা বাদ গিয়েছে। সরকার সেই দিকগুলি খতিয়ে দেখার জন্য নতুন করে তদন্ত করছে। তাঁর কথায়, চিকিৎসক কাফিল খানকে ক্লিনচিট দেওয়া হয়েছে এমন অনুমান করার কোনও কারণ নেই। রজনীশ দুবে জানান, আগের তদন্তকারী কমিটিকে কাফিল খান জানিয়েছেন, ঘটনার সময় তিনি শিশু ওয়ার্ডের দায়িত্বেই ছিলেন না। কিন্তু কয়েকটি রিপোর্ট থেকে জানা গিয়েছে, তিনি ওই সময় নোডাল অফিসার হিসাবে কাজ করছিলেন। এই সব দিকগুলি চূড়ান্ত রিপোর্টে পর্যালোচনা করা হবে বলে জানান উত্তর প্রদেশের মেডিকেল এডুকেশনের মুখ্য সচিব। পাশাপাশি তাঁর এও অভিযোগ, প্রথম তদন্তকারী কমিটির রিপোর্ট ফাঁস করে মিডিয়ায় ভুয়ো তথ্য ছড়িয়েছেন অভিযুক্ত চিকিৎসক। যে চার দফা অভিযোগ উঠেছিল কাফিল খানের বিরুদ্ধে, তার মধ্যে একটি হল প্রাইভেট প্র্যাকটিস। রজনীশ দুবের দাবি, তদন্ত রিপোর্টে প্রমাণিত হয়েছে তিনি সিনিয়র সরকারি চিকিৎসক হয়েও একটি বেসরকারি হাসপাতালে কাজ করতেন। ইংরেজি দৈনিক টাইমস অফ ইন্ডিয়ার রিপোর্ট অনুযায়ী, রজনীশ দুবে জানিয়েছেন, কাফিল খানের বিরুদ্ধে মোট ৭ টি অভিযোগের তদন্ত করছে নতুন কমিটি।
৯ মাস জেল খাটা ও বরখাস্ত হওয়া চিকিৎসক কাফিল খান অভিযোগ করেছিলেন, তদন্তকারী কমিটি তাঁকে ক্লিনচিট দেওয়ার পরও তিনি কাজে যোগ দিতে পারেননি। শিশুমৃত্যুর দায় এড়াতে যোগী সরকার তাঁকে বলির পাঁঠা করছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। অন্যদিকে, উত্তর প্রদেশ সরকার জানায়, হাসপাতালে অক্সিজেনের কোনও ঘাটতি ছিল না। জাপানি এনসেফেলাইটিস সহ বিভিন্ন অসুখে ভুগে শিশুদের মৃত্যু হয়।

Comments are closed.