গুজরাত ভুয়ো এনকাউন্টার কেসে তিন পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দিল বিচারপতি এইচ এস বেদি কমিটি

ভুয়ো এনকাউন্টার মামলায় পুলিশের বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ গুজরাতে।
২০০২ সাল থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত  ১৭ টি ভুয়ো এনকাউন্টার কেসের মধ্যে ৩ টিতে পুলিশ অফিসারদের জড়িত থাকার সন্দেহ প্রকাশ করেছে আদালত।
রিপোর্টের ভিত্তিতে, তিন ভুয়ো এনকাউন্টার কেসে পুলিশের বিরুদ্ধে সন্দেহ প্রকাশ করেছে প্যানেল। সমীর খান, কাশেম জাফর ও হাজি ইসমাইলকে তিনটি আলাদা ভুয়ো এনকাউন্টারে হত্যা করা হয়, বলে সন্দেহ প্রকাশ করেছে বিচারপতি এইচ এস বেদি কমিটি। এই ঘটনায় ৩ পুলিশ ইন্সপেক্টর ও  ৬ জন পুলিশ কর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে।
সমীর খান হত্যার কেসে কে এম বেঘেলা ও টি এ ব্যারট যুক্ত থাকতে পারেন বলে সন্দেহ করছে আদালত। পুলিশের অভিযোগ ছিল, ১৯৯৬ সাল নাগাদ ভারত ছেড়ে পাকিস্তানের সন্ত্রাসবাদী সংগঠন, জইশ-ই-মহম্মদে নাম লিখিয়েছিল সমীর খান। এরপর ভারত এবং নেপালে বেশ কয়েকবার হামলার ছক করে প্রবেশ করেছিল। ২০০২ সালে অক্ষরধাম মন্দির হানায় যুক্ত ছিল সমীর খান। তৎকালীন গুজরাত মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে হত্যা করতে পাকিস্তানি সংগঠন তাকে গুজরাতে পাঠায়। এর আগে, ১৯৯৬ সালে এক পুলিশ কনস্টেবলকে হত্যার ঘটনায় যুক্ত ছিল সমীর খান। তবে কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী, রাষ্ট্রদ্রোহিতায় অভিযুক্ত সমীর খানকে ভুয়ো এনকাউন্টারে মারেন ইন্সপেক্টর কে এম বেঘেলা ও টি এ ব্যারট। সমীর খানের পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করে প্যানেল।
কাশেম জাফর এনকাউন্টার কেসে পুলিশের রিপোর্ট মোতাবেক, ২০০৬ সালে ১৩ ই এপ্রিল আহমেদাবাদের রয়্যাল হোটেল থেকে তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরের দিন জেল থেকে পালানোর পর একটি ব্রিজের তলা থেকে কাশেমের মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এই কেসে বিচারপতি এইচ এস বেদি কমিটি জানায়, কাশেম জাফর যে কোনও অপরাধমূলক কাজে যুক্ত ছিল, তার কোনও সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এই মৃত্যু রহস্যে সাব ইন্সপেক্টর জে এম ভারওয়া ও কনস্টেবল গনেশ ভাইয়ের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ করছে আদালত। তাঁদের বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়, এছাড়া মৃত জাফরের পরিবারকে ১৪ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা বলা হয়।
২০০৫ সালের ৯ ই অক্টোবর স্মাগলিং -এর অভিযোগে হাজি হাজি ইসমাইলকে ধরতে যায় পুলিশ। পুলিশ রিপোর্টে দাবি করা হয়, মারুতি জেন গাড়ি থেকে নেমে পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালাতে শুরু করে ইসমাইল। পুলিশের পাল্টা গুলিতে মৃত্যু হয় তার। কিন্তু তদন্তের রিপোর্টে দেখা গিয়েছে ইসমাইলকে খুব কাছ থেকে গুলি করা হয়। যদি সেও পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালিয়ে থাকে, তাহলে কীভাবে এত কম রেঞ্জ থেকে পুলিশ তাকে গুলি করে প্রশ্ন তোলা হয়। এই কেসে ইন্সপেক্টর কে জি ইদরা, সাব ইন্সপেক্টর এল বি মনপারা, জে এম যাদব, এস কে শাহ ও পি ভ্যাসের বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দেয় আদালত।

Comments are closed.