পুরপ্রশাসকের পর এবার জেলা সভাপতির পদও হাতছাড়া জিতেন্দ্রর, কী করবেন?

শুধু বিধায়ক পদে থাকছেন আসানসোলের দাপুটে জিতেন্দ্র তিওয়ারি

দলবদলের মরসুমে তৃণমূল নেতৃত্বকে ঝাঁঝালো আক্রমণ করে একের পর এক পদ ছেড়েছিলেন পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক জিতেন্দ্র তিওয়ারি। জিতেন্দ্র তৃণমূলে থাকবেন নাকি বিজেপিতে যাবেন এ নিয়ে যখন জোর জল্পনা, তখন তাঁর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন আসানসোলের সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। তাই পরিস্থিতি বুঝে নাটকীয়ভাবে তৃণমূল নেত্রী মমতা ব্যানার্জির কাছে ক্ষমা চেয়ে পুরনো দলেই আছেন বলেই জানান জিতেন। কিন্তু দলে থাকলেও আপাতত তাঁকে যে ব্রাত্য হয়েই থাকতে হচ্ছে তা আরও একবার স্পষ্ট হল।

আসানসোলের পুরপ্রশাসকের পদের পর এবার পশ্চিম বর্ধমান জেলা সভাপতির পদেও ফেরানো হল না জিতেন্দ্র তিওয়ারিকে। তাঁর জায়গায় ওই দায়িত্বে আনা হয়েছে অর্ণব মুখোপাধ্যায়কে। এখন প্রশ্ন উঠছে, তৃণমূলে থাকার পরেও কি শীর্ষ নেতৃত্বের আস্থা ফেরাতে পারেননি তিনি? এ নিয়ে জিতেন্দ্র নিজে কী বলছেন? কী করবেন তিনি?

সূত্রের খবর, বিধায়ক পদ নিয়ে আপাতত দলের সাধারণ কর্মী হিসেবে কাজ চালিয়ে যেতে বাধ্য হচ্ছেন আসানসোলের দাপুটে নেতা। দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে ওই পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন তিনি। সেই ইস্তফাপত্র গ্রহণ করেই নতুন জেলা সভাপতিকে বেছে নিয়েছে শীর্ষ নেতৃত্ব। পশ্চিম বর্ধমান জেলা তৃণমূল সংগঠন রদবদলের প্রেক্ষিতে ফেসবুকে জিতেনের প্রতিক্রিয়া, সাধ্যমতো নতুন কমিটিকে সাহায্য করে যাবেন তিনি। যদিও ওই কমিটিতেই রাখা হয়নি তাঁকে। এই পরিস্থিতিতিতে এদিন একটি ফেসবুক পোস্ট করেছেন জিতেন্দ্র। তাতে লিখেছেন, ‘যখন পরিস্থিতি কঠিন হয়ে উঠবে, কঠিনরাই এগিয়ে যাবে।’ অর্থাৎ, দলের ভিতরে তিনি যে কোণঠাসা, পোস্টে তারই ইঙ্গিত মিলছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

গত ১৭ ডিসেম্বর দল ও পদ থেকে ইস্তফা দেন জিতেন্দ্র তিওয়ারি। শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে বিজেপিতে যোগদানের পরিকল্পনা ছিল তাঁর। কিন্তু বাধা হয়ে দাঁড়ান বাবুল সুপ্রিয়। ঘোর প্রতিপক্ষ জিতেন্দ্রকে দলে নিলে কর্মীরা ক্ষুব্ধ হবেন বলে ফেসবুক লাইভে জানান তিনি। এর পরই ড্যামেজ কন্ট্রোলে নামেন জিতেন্দ্র তিওয়ারি। পর দিন কলকাতায় পৌঁছে বৈঠক করেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের সঙ্গে। জানান, সব মিটে গিয়েছে। কিন্তু সব যে মেটেনি তা আগেই টের পেয়েছেন জিতেন্দ্র। টের পেলেন আবার। এর আগে জিতেন্দ্রর পদত্যাগ গ্রহণ করে আসানসোল পুর নিগমের প্রশাসক পদে অমরনাথ চট্টোপাধ্যায়কে নিয়োগ করে তৃণমূল। বাকি ছিল জেলা সভাপতির পদটি। এবার সেটিতেও নতুন লোক বসাল রাজ্য নেতৃত্ব। ফলে জিতেন্দ্রের হাতে এখন কেবল পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক পদ।

Comments are closed.