বিজেপি-তৃণমূলের গোপন আঁতাত, বিকল্পের সন্ধানে কেতুগ্রামের বাম প্রার্থী মিজানুল

মিজানুল: সিপিএমের ইস্তেহারই আমাদের ঘুরে দাঁড়ানোর মূল মন্ত্র

এলাকায় তাঁকে সবাই ধীরাজ উকিল নামে চেনেন। কেতুগ্রাম থেকে কাস্তে হাতুড়ি চিহ্নে একুশের নির্বাচনী ময়দানে সিপিএমের তরুণ মুখ মিজানুল কবীর। ২২ এপ্রিল কেতুগ্রামে ভোট। প্রচার করতে করতেই কথা বললেন TheBengalStory এর সঙ্গে।

পেশার কারণেই বহু মানুষের যাওয়া আসা লেগে থাকে আপনার বাড়িতে, এবার আপনি লোকজনের বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন, কেমন সাড়া পাচ্ছেন?

আমরা ১০ বছর ধরে অবরুদ্ধ ছিলাম, সন্ত্রাস করে আমাদের কোনঠাসা করে রাখা হয়েছিল। এখন যখন সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছাচ্ছি অভূতপূর্ব সাড়া পাচ্ছি। দীর্ঘ ১০ বছর পর পুনরায় তাঁরা লালঝাণ্ডা নিয়ে রাস্তায় বেরোতে পারছেন। এ উচ্ছ্বাস ভাষায় ব্যাখ্যা করা যাবে না। বলছেন তরুণতুর্কি সিপিএম প্রার্থী।

২০০৫ সালে কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা অনার্স। পড়ার পাশাপাশি বামপন্থী আদর্শের টানে ছাত্র রাজনীতিতে নাম লেখান। ২০০৯ এ বিদ্যাসাগর ইউনিভার্সিটি থেকে এলএলবি পাশ করেন। বর্তমানে DYFI পূর্ব বর্ধমান জেলা কমিটির সহ সম্পাদক।

আইনের পেশায় থেকেই তো মানুষের জন্য কাজ করতে পারতেন, সরাসরি রাজনীতিতে কেন? উত্তর আসে, দেখুন এখন একটা অস্থির সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে সমাজ। বিরোধীদের তাঁর আক্রমণ, তৃণমূল-বিজেপি সাম্প্রদায়িক মেরুকরণের রাজনীতি করছে। মানুষের ভোটে জিতে দল পাল্টে মানুষের বিশ্বাস নিয়ে খেলছে। সেখানে ব্যবস্থাটাকে পাল্টানোর লড়াই করতে পথে নেমেছি। কারণ বৃহৎ পরিবর্তন রাজনীতি ছাড়া অসম্ভব।

বিজেপি বলছে দীর্ঘ ১০ বছর তৃণমূল সংখ্যালঘু তোষণ করে এসেছে। আপনার কী মনে হয়?

মিজানুলের সাফ উত্তর, সংখ্যালঘু তোষণ আর হল কোথায়! মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন ১০ হাজার মাদ্রাসা বানাবেন, সেখানে ১০ বছরে ২৩৫ টা মাদ্রাসা বানিয়েছেন। মাদ্রাসার শিক্ষকরাও মাইনে পান না ঠিক মত। আর যেটুকু তোষণ বলছেন ওটা বিজেপিকে রাজ্যে জায়গা করে দিতে।

রামের ভোট বামে গিয়েছে এই তত্ত্ব মানতে নারাজ তরুণ প্রার্থী মিজানুল। ২০১৯ এ যে একটা বিরাট অংশ আপনাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে এটা মানবেন তো? আইনজীবীর যুক্তি, মানুষ কখনোই আমাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নেননি। তৃণমূল সন্ত্রাস করে আমাদের মানুষের কাছে পৌঁছতে দেয়নি, আমাদের কথা সাধারণ মানুষকে বলতে দেয়নি। তবে এখন পরিস্থিতি পাল্টেছে। বাম ছাত্র যুবরা রাস্তায় আছে, আত্মবিশ্বাসী শোনায় মিজানুলকে।

মাঝে মাত্র দুটো বছর কেটেছে, রাজ্যে কার্যত গেরুয়া ঝড়, ৭ শতাংশ থেকে সিপিএম ঘুরে দাঁড়াবে বলছেন? প্রার্থী জানালেন, সিপিএমের ইস্তেহারই আমাদের ঘুরে দাঁড়ানোর মূল মন্ত্র। গেরুয়া শিবিরকে কটাক্ষ করে তাঁর মন্তব্য, বিজেপি বলছে রাজ্যে ক্ষমতায় এলে শিল্প আনবে। অথচ সিঙ্গুরে শিল্প তাড়ানোর জন্য মমতা ব্যানার্জির ধরনা মঞ্চে রাজনাথ সিংহের মত বিজেপির শীর্ষ নেতাকে দেখা গিয়েছিল।

সংযুক্ত মোর্চার সরকার তৈরী নিয়ে আত্মবিশ্বাসী মিজানুল বললেন, তৃণমূল বিজেপির মধ্যে গোপন আঁতাত আছে। আজকে বিজেপির ২৯৪ টা প্রার্থীর মধ্যে ১৫৮ টি তৃণমূলের সাপ্লাই করা, ভাবতে পারেন! এ অবস্থা থেকে মুক্তি চাইছে রাজ্যের মানুষ। আর সেখানে আমরাই একমাত্র বিকল্প শক্তি।

Comments are closed.