পৌষমেলা মাঠে পাঁচিল কাণ্ড: সিবিআই চাইল বিশ্বভারতী, বন্ধ ক্লাস, অচলাবস্থা

পৌষমেলার মাঠে পাঁচিল দেওয়াকে কেন্দ্র করে গণ্ডগোলের ঘটনায় এবার সিবিআই তদন্তের দাবি জানাল বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। শুধু তাই নয়, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তরফে দুবরাজপুরের তৃণমূল বিধায়ক নরেশ বাউরি ও বোলপুর পুরসভার দুই বিদায়ী কাউন্সিলর শেখ ওমর এবং সুকান্ত হাজরা সহ মোট ৯ জনের বিরুদ্ধে শান্তিনিকেতন থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। সোমবার পৌষমেলার মাঠে পাঁচিল ভাঙা এবং তাণ্ডবের প্রতিবাদে বুধবার অনশনে বসছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আধিকারিকরা। বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে এক প্রেস বিবৃতিতে এমনই জানানো হয়েছে।
এদিকে তৃণমূল বিধায়ক সহ গণ্ডগোলে জড়িতদের বিরুদ্ধে পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করেছে বলে জানান বীরভূমের পুলিশ সুপার শ্যাম সিংহ। তিনি জানান, ৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পরিবেশ আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী পৌষমেলা প্রাঙ্গণে পাঁচিল দেওয়া হচ্ছিল। এদিকে পরিবেশকর্মীদের একাংশের দাবি, পৌষমেলার মাঠ যে ইটের পাঁচিল দিয়ে ঘিরতে হবে, এমন কোনও নির্দেশই জাতীয় পরিবেশ আদালত দেয়নি। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পৌষমেলার মাঠ ঘেরার ব্যাপারে প্রবীণ আশ্রমিক, পড়ুয়া এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের একটি অংশ আপত্তি জানিয়েছিল। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিজে উপস্থিত থেকে সেই পাঁচিল তোলার কাজ করানোয় ক্ষোভ ও অসন্তোষ তৈরি হয়। এই ঘটনার প্রতিবাদ মিছিলে বীরভূম জেলা তৃণমূল নেতা গগন সরকার সহ পরিবেশ কর্মীরাও পা মেলান। ওই মিছিল থেকেই বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে তাণ্ডব হয় বলে অভিযোগ বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের। তারা আরও জানায়, জেলা শাসক, জেলা পুলিশ সুপার, রাজ্যের মুখ্যসচিব এবং মুখ্যমন্ত্রীর সচিবকে এই গণ্ডগোলের আশঙ্কার কথা আগেই জানানো হয়েছিল। কিন্তু কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি।
তবে বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের দাবি করেছেন, তৃণমূল ওই তাণ্ডবের সঙ্গে কোনওভাবেই যুক্ত নয়। তাহলে তৃণমূল বিধায়ক, কাউন্সিলর প্রমুখকে কেন মিছিলে দেখা গিয়েছিল? অনুব্রতর উত্তর, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী হিসেবে যে কেউই যেতে পারেন। এদিকে প্রতিবাদীদের দাবি, অন্যায় ভাবে পৌষমেলার মাঠ ঘিরে ফেলা হচ্ছিল। তাই এই স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিবাদ। প্রসঙ্গত, পাঁচিল দেওয়ার প্রতিবাদে ‘মেলার মাঠ বাঁচাও, শান্তিনিকেতন বাঁচাও’ নামে একটি মঞ্চও তৈরি হয়েছে। তৃণমূলের দাবি, বর্তমান উপাচার্য রবীন্দ্র-আদর্শকে ধূলিসাৎ করার চক্রান্ত করছেন। তাঁর বিরুদ্ধে স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিবাদ জানাচ্ছেন সমাজের সব স্তরের মানুষ।

Comments are closed.