তৃতীয় দফায় দক্ষিণ ২৪ পরগনার ১৬টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ, দেখে নিন ২০১৬, ২০১৯ এর কী ফল

দক্ষিণ ২৪ পরগনায় মোট আসন ৩১টি। এরমধ্যে দ্বিতীয় দফায় ভোট হয়েছে ৪টি আসনে। মঙ্গলবার অর্থাৎ তৃতীয় দফায় এই জেলার ১৬ কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ। আর চতুর্থ দফায় বাকি ১১টি কেন্দ্রে ভোট হবে।
মঙ্গলবার বাসন্তী, কুলতলি, কুলপি, রায়দিঘি, মন্দিরবাজার, জয়নগর, বারুইপুর পশ্চিম, বারুইপুর পূর্ব, ক্যানিং পশ্চিম, ক্যানিং পূর্ব, মগরাহাট পূর্ব, মগরাহাট পশ্চিম, ডায়মন্ডহারবার, ফলতা, সাতগাছিয়া ও বিষ্ণুপুরে ভোটগ্রহণ।

একনজরে দেখে নেওয়া যাক ২০১৬ আর ২০১৯ এর ভোটে কী ফল ছিল এই কেন্দ্রগুলিতে?

বাসন্তী কেন্দ্রে ২০১৬ সালে তৃণমূলের গোবিন্দ নস্কর পান ৯০,৫২২ টি ভোট। আরএসপির সুভাষ নস্কর পেয়েছিলেন ৭৩,৯১৫ ভোট। ২০১৯ লোকসভায় প্রায় ৫০ হাজার ভোটে এগিয়ে ছিল তৃণমূল।
একুশের ভোটে এই কেন্দ্র থেকে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী শ্যামল মণ্ডল। এই আসনে বিজেপির তরফে দাঁড়াচ্ছেন রমেশ মাজি। লড়াইয়ে আছেন আরএসপির সুভাষ নস্করও।

কুলতলি বিধানসভায় ২০১৬ সালে সিপিএমের রামশঙ্কর হালদার পেয়েছিলেন ৭৩,৯৩২ ভোট। তৃণমূলের গোপাল মাঝি পেয়েছিলেন ৬২,২১২টি ভোট। ২০১৯ লোকসভায় প্রায় ১০ হাজারের লিড আছে তৃণমূলের।

এবারের তৃণমূলের প্রার্থী হলেন গণেশচন্দ্র মণ্ডল। বিজেপির টিকিটে লড়ছেন মিন্টু হালদার। সিপিআইএমের প্রার্থী রামশংকর হালদার।

২০১৬ সালে কুলপি কেন্দ্রে জেতেন তৃণমূলের যোগরঞ্জন সরকার। ২০১৯ সালে ৩৫ হাজারের বেশি ভোটে এগিয়ে রয়েছে তৃণমূল।
এই বিধানসভা আসনে এবারেও তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী যোগরঞ্জন হালদার। বিজেপির প্রার্থী প্রণব মালিক। আইএসএফের সিরাজউদ্দিন গাজি।

রায়দিঘি কেন্দ্রে ২০১৬ সালে জেতেন তৃণমূলের দেবশ্রী রায় (১,০১,১৬১)। পরাজিত হয়েছিলেন সিপিএমের কান্তি গাঙ্গুলি (৯৯,৯৩২)। ২০১৯ সালে এখানে প্রায় ১৩ হাজারের লিড আছে তৃণমূলের।
এই কেন্দ্রে এবার তৃণমূলের প্রার্থী ডাক্তার অলোক জলদাতা। সিপিএমের প্রার্থী কান্তি গাঙ্গুলি। আর বিজেপির প্রার্থী শান্তনু বাপুলি।

মন্দিরবাজার কেন্দ্রে ২০১৬ সালে তৃণমূলের প্রতীকে জয়দেব হালদার জেতেন। ২০১৯ এর পর এখানে প্রায় ২০ হাজারের লিড আছে তৃণমূলের।
এবারও তৃণমূল ভরসা রেখেছে জয়দেব হালদারের ওপর। আইএসএফের প্রার্থী সঞ্চার সরকার। বিজেপির প্রার্থী দিলীপ জটুয়া।

জয়নগর কেন্দ্রে ২০১৬-র বিধানসভা ভোটে তৃণমূলের বিশ্বনাথ দাস ৬৪,৫৮২ ভোট পান। কংগ্রেসের সুজিত পাটোয়ারি পেয়েছিলেন ৪৯,৫৩১টি ভোট। ২০১৯ লোকসভায় এখানে ১৬ হাজারের বেশি ভোটে এগিয়ে তৃণমূল।
একুশের ভোটেও এই কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী বিশ্বনাথ দাস। বিজেপির প্রার্থী রবীন সর্দার। সিপিএমের প্রার্থী অপূর্ব প্রামাণিক।

২০১৬ সালের ভোটে বারুইপুর পশ্চিম আসনে জেতেন তৃণমূলের বিমান ব্যানার্জি। এরপর তিনি স্পিকার হন। লোকসভায় তৃণমূল ৩৫ হাজারের বেশি ভোটে এগিয়ে।
এবারেও এই কেন্দ্রে তৃণমূলের প্রার্থী বিমান ব্যানার্জি। বিজেপির প্রার্থী দেবপম চ্যাটার্জি। সিপিএমের হয়ে লড়ছেন লায়েক আলি।

বারুইপুর পূর্ব আসনে ২০১৬ সালে জিতেছিলেন তৃণমূলের নির্মল মণ্ডল। লোকসভায় ২৭ হাজারের লিড আছে তৃণমূলের।
এবার এই কেন্দ্রে তৃণমূলের টিকিটে লড়াই করছেন বিভাস সর্দার। সিপিএমের প্রার্থী স্বপন নস্কর। বিজেপির প্রার্থী চন্দন মণ্ডল।

ক্যানিং পশ্চিম কেন্দ্রে ১৬ সালে জেতেন তৃণমূলের শ্যামল মণ্ডল। ২০১৯ সালে এখানে প্রায় ২৩ হাজার ভোটে এগিয়ে আছে তৃণমূল।
একুশের ভোটে এখানে তৃণমূল প্রার্থী পরেশ রাম দাস। কংগ্রেসের টিকিটে লড়ছেন প্রতাপ মণ্ডল আর বিজেপির প্রার্থী অর্ণব রায়।

২০১৬ সালে ক্যানিং পূর্ব কেন্দ্রে তৃণমূলের শওকত মোল্লা পেয়েছিলেন ১,১৫,২৬৪ ভোট। সিপিএমের আজিজুর রহমান মোল্লা পান ৬০,২৩০টি ভোট। লোকসভায় ক্যানিং পূর্ব আসনে ১ লক্ষ ৪৩ হাজারের বেশি ব্যবধানে এগিয়ে তৃণমূল।
এই কেন্দ্রে এবার বিজেপি প্রার্থী কালীপদ নস্কর। তৃণমূল প্রার্থী শওকত মোল্লা আর আইএসএফের গাজী সাহাবুদ্দিন সিরাজী।

২০১৬ বিধানসভায় মগরাহাট পূর্ব থেকে জেতেন তৃণমূলের নমিতা সাহা। ২০১৯ সালে এই কেন্দ্রে ৩৭ হাজার ভোটে এগিয়ে তৃণমূল।
একুশের ভোটে এখানে বিজেপি প্রার্থী চন্দন নস্কর। এবারও তৃণমূল নমিতা সাহাকেই প্রার্থী করেছে। সিপিএমের প্রার্থী চন্দন সাহা।

মগরাহাট পশ্চিম আসনে ১৬-র ভোটে জয়ী হন তৃণমূলের গিয়াসুদ্দিন মোল্লা। লোকসভায় এই আসনে ৫১ হাজার ভোটে এগিয়ে রয়েছে তৃণমূল।
২১-এর নির্বাচনে এই কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী মানস সাহা। তৃণমূলের হয়ে লড়ছেন গিয়াসুদ্দিন মোল্লা। আইএসএফের প্রার্থী মইদুল ইসলাম মোল্লা।

ডায়মন্ডহারবারে ২০১৬ সালে জিতেছিলেন তৃণমূলের দীপক হালদার। বর্তমানে তিনি বিজেপিতে। ২০১৯ সালের লোকসভায় এখানে প্রায় ২৭ হাজারের লিড তৃণমূলের।
এই কেন্দ্র থেকে বিজেপি প্রার্থী করেছে তৃণমূলত্যাগী দীপক হালদারকে। তৃণমূল প্রার্থী পান্নালাল হালদার আর সিপিএমের তরুণ প্রার্থী প্রতীক উর রহমান।

ফলতা বিধানসভায় ১৬ সালে জয়লাভ করেছিলেন তৃণমূলের তমোনাশ ঘোষ। সম্প্রতি করোনায় মৃত্যু হয় তাঁর। ২০১৯ সালে এখানে ৪৪ হাজারের মতো ভোটে এগিয়ে তৃণমূল।
এই কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী শঙ্করকুমার নস্কর। বিজেপির পক্ষে লড়ছেন বিধান পারুই। আর কংগ্রেস প্রার্থী আব্দুর রেজ্জাক মোল্লা।

সাতগাছিয়া বিধানসভায় ১৬ সালের ভোটে জেতেন তৃণমূলের সোনালি গুহ। ২০১৯ লোকসভায় ২৫ হাজার লিড রয়েছে তৃণমূলের। এবার টিকিট না পেয়ে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে গেছেন সোনালি গুহ।
এই কেন্দ্রে এবার বিজেপি প্রার্থী চন্দন পান দাস। তৃণমূল প্রার্থী চন্দ্র নস্কর আর সিপিএম প্রার্থী গৌতম পাল।

বিষ্ণুপুর আসনে এর আগের বিধানসভা ভোটে জেতেন তৃণমূলের দিলীপ মণ্ডল। গত লোকসভার পর এখানে ৪৪ হাজার ভোটে এগিয়ে তৃণমূল।
এই কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী অগ্নিশ্বর নস্কর। তৃণমূল প্রার্থী বিদায়ী বিধায়ক দিলীপ মণ্ডল।

Comments are closed.