ভিমা কোরেগাঁওয়ে হিংসার ঘটনায় মাওবাদী যোগের অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া সমাজকর্মীদের উপর থেকে যত দ্রুত সম্ভব ফৌজদারি মামলা প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে। মঙ্গলবার এনসিপি প্রতিনিধিদলকে এমনই আশ্বাস দিয়েছেন মহারাষ্ট্রের নয়া মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে।
২৮ নভেম্বর মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী পদে বসার পরই উদ্ধব ঠাকরে রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতরকে নির্দেশ দেন সবুজ নিধনের প্রতিবাদে পথে নামা অ্যারে কলোনির প্রতিবাদীদের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া সমস্ত ফৌজদারি মামলা প্রত্যাহার করার। তারপরই এনসিপি নেতাদের প্রতিনিধিদলকে মুখ্যমন্ত্রীর এই আশ্বাস। প্রসঙ্গত, ভিমা কোরেগাঁও মামলায় সমাজকর্মী এবং মানবাধিকার কর্মীদের গ্রেফতারির পর নিজে প্রতিবাদে সোচ্চার হয়েছিলেন উদ্ধব। তিনি এখন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী।
২০১৮ সালের ২ ও ৩ জানুয়ারি ভিমা কোরেগাঁও সংঘর্ষের ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগে বেশ কয়েকজন সমাজকর্মীর বিরুদ্ধে পুলিশ প্রশাসন ফৌজদারি অপরাধের একাধিক মামলা দায়ের করেছিল। এনসিপি প্রতিনিধিদলের সদস্য বিধায়ক প্রকাশ গজভিয়ে বলেন, সেই মামলা যে পুরোপুরি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত তা দিনের আলোর মত পরিষ্কার। তাই আমরা মুখ্যমন্ত্রীকে অনুরোধ করেছি মামলা প্রত্যাহার করতে, তিনি তা মেনে নিয়েছেন।
এনসিপির পাশাপাশি মহারাষ্ট্রের প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বও আরবান নকশাল তকমা দিয়ে ভিমা কোরেগাঁও হিংসায় যুক্ত থাকার অভিযোগে মানবাধিকার এবং সমাজকর্মীদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা প্রত্যাহার করে নেওয়ার পক্ষপাতী। কংগ্রেসের রাজ্যসভার সদস্য কুমার কেতকরের দাবি, দিল্লিতে বসে থাকা রাজনৈতিক প্রভুদের হুকুম তামিল করতে গিয়ে পুলিশ প্রশাসন এই মামলাগুলো সাজিয়েছিল।
সূত্রের খবর, আইনি পথে মামলার নিষ্পত্তি চাইছে শিবসেনা। তাড়াহুড়ো করে কোনও আইনি প্যাঁচে ফেসে যেতে রাজি নন উদ্ধব ঠাকরে। তাই সব কিছু দেখে শুনেই ইতিবাচক পদক্ষেপ করা হবে। এনসিপি প্রতিনিধিদলকে এমনই আশ্বাস দিয়েছেন ঠাকরে। পাশাপাশি মহারাষ্ট্রের রাজনীতির অন্দরের গুঞ্জন, রিভিউয়ের পাশাপাশি মামলায় পুণে পুলিশের ভূমিকাও খতিয়ে দেখার দাবি উঠতে শুরু করেছে শিবসেনারই অন্দরে এবং এই দাবিতে পরোক্ষে সমর্থন রয়েছে মাতুশ্রীর বাসিন্দার।
তবে সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ ব্যাপার হল, সম্প্রতি একটি হিন্দি নিউজ চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এনসিপি প্রধান শরদ পওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন জাস্টিস ব্রিজমোহন লোয়া মৃত্যু রহস্যের পুনর্তদন্ত হতে পারে।
আগেই মোদীর স্বপ্নের বুলেট ট্রেন প্রকল্প নিয়ে নেতিবাচক অবস্থান নিয়েছিল মহারাষ্ট্র সরকার। এবার ভিমা-কোরেগাঁও, অ্যারে কলোনি এবং লোয়া মামলার পুনর্তদন্তের ইঙ্গিত। সব মিলিয়ে এক অচেনা খাতে মহারাষ্ট্রের রাজনীতি।
Comments are closed.