গত বুধবার বীরভূম সফর থেকে ফেরার পথে বল্লভপুর গ্রামের একটি চায়ের দোকানে চা পান করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। সেই দোকানে রান্না হচ্ছে দেখে নিজেও হাতা- খুন্তি নাড়তে শুরু করেন তিনি। মমতার সেই ছবি পোস্ট করে বিজেপির সাধারণ সম্পাদক কৈলাস বিজয়বর্গীয়র ট্যুইটে খোঁচা দেওয়ার প্রেক্ষিতে শুরু হল নয়া রাজনৈতিক চাপানউতোর। কৈলাস সহ বিজেপি নেতাদের মহিলা বিদ্বেষী বলে তোপ দাগলেন তৃণমূলের মহিলা মন্ত্রী ও সাংসদরা।
ট্যুইটে ঠিক কী লিখেছিলেন কৈলাস? তা নিয়ে তৃণমূল নেতৃত্বেরই বা অভিযোগ কী?
বোলপুরের আদিবাসী গ্রামে মমতার রান্নার ছবি ট্যুইটারে পোস্ট করেছিলে বঙ্গ বিজেপির কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়। ৩১ ডিসেম্বর করা সেই ট্যুইটে বাংলার বিধানসভা ভোটকে সামনে রেখে কৈলাসের কটাক্ষ ছিল, ‘পাঁচ মাস পরে দিদিকে যে কাজ করতে হবে, সেই কাজ তিনি এখনই শুরু করে দিয়েছেন!’ কৈলাসের ট্যুইটের ভাষাচয়ন নিয়ে এই বিতর্কের সূত্রপাত।
শনিবার বিজেপি নেতার ওই ট্যুইট রিট্যুইট করে তীব্র প্রতিক্রিয়া দিলেন তৃণমূলের তিন সাংসদ। দলের তারকা সাংসদ নুসরত জাহানের অভিযোগ, মমতাকে নিয়ে কৈলাসের ওই ট্যুইটে নারী বিদ্বেষ স্পষ্ট! রান্না করা, সংসার গোছানো ছাড়া যে মহিলারা অন্য কিছু করার আকঙ্খা রাখেন, তাঁদের প্রত্যেককে এভাবেই অপমান করে বিজেপি, কটাক্ষ নুসরতের। তিনি আরও লেখেন, বর্তমানে সারা দেশের মধ্যে একমাত্র মহিলা মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিকে এভাবেই টার্গেট করছে বিজেপি। কুৎসা করা হচ্ছে মমতাকে নিয়ে।
তৃণমূল সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার কৈলাস বিজয়বর্গীয়র ট্যুইট রিট্যুইট করে লেখেন, যদি আপনি মহিলা হন এবং সক্রিয় রাজনীতিতে অংশ নেওয়ার ইচ্ছে থাকে, মনে রাখবেন, বিজেপির মহিলা বিদ্বেষীরা আপনাকে রান্নাঘরে ফিরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করবে। এরপর বিজেপি নেতাকে উদ্ধৃত করে কাকলির শ্লেষ, ‘আমি চিন্তা করতে পারছি না কৈলাস বিজয়বর্গীয়র পরিবারের মহিলারা ঠিক কী সম্মান নিয়ে বসবাস করেন!
কৈলাসের ট্যুইট ঘিরে তৃণমূলের আর এক সাংসদ শশী পাঁজার প্রতিক্রিয়া, এটাই বিজেপির আসল চেহারা। বিজেপি সরকারের রাজত্বে কোনও মহিলাই নিরাপদ নন। সেই সঙ্গে রাজ্যের নারী ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রী কৈলাসের উদ্দেশে কটাক্ষ, ফের নারী-বিদ্বেষ হওয়ার আগে নিজের ‘বস’কে মনে রাখবেন। তৃণমূলের মহিলা ব্রিগেডের এই অভিযোগ ও আক্রমণের প্রেক্ষিতে এপর্যন্ত অবশ্য কৈলাস বিজয়বর্গীয়র প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
Comments are closed.