বিকেল ৫ টা বেজে গিয়েছে তখন। কলাইকুন্ডায় বায়ুসেনার বিমানপোত থেকে দিল্লির উদ্দেশ্যে উড়ে গেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বৈঠকস্থল থেকে একে একে বেরিয়ে আসছেন রাজ্যপাল ধনখড়, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দেবশ্রী চৌধুরী, ধর্মেন্দ্র প্রধানরা। সেই সময় বেরোতে দেখা যায় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকেও। স্বভাবত শুভেন্দুকে দেখা মাত্র সংবাদমাধ্যম ঘিরে ধরে তাঁকে। শুভেন্দুও হাসি মুখে বাইট দেন। এবার সেই বাইটে করা মন্তব্য এবং তার ঠিক আধ ঘণ্টার মধ্যে তাঁর করা ট্যুইট, এই দুই নিয়ে ঘনিয়েছে রহস্য।
প্রথমেই জেনে নেওয়া যাক, সংবাদমাধ্যমে কী বলেছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেছিলেন, আমি দেখলাম, মুখ্যমন্ত্রী এসে প্রধানমন্ত্রীকে একটি জ্ঞাপন দিলেন এবং জানালেন তিনি জেলা সফরে রয়েছেন। তাই তাঁর অনুমতি নিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছেন। আজ রাজনীতির সময় নয়। আজ প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে আদায় করে নেওয়ার দিন। ঘড়িতে তখন সাড়ে পাঁচটা বাজতে কয়েক মিনিট বাকি।
তারপর ঘড়ির কাঁটা দৌড় দিয়েছে সন্ধে ৬ টার দিকে। কলাইকুন্ডা ছেড়ে সবাই বাড়ির পথে। সন্ধে ৬ টা বাজার ঠিক ১ মিনিট আগে শুভেন্দুর ট্যুইটার হ্যান্ডলে আচমকাই ট্যুইট-বৃষ্টি। একের পর এক ট্যুইটে বিধানসভার বিরোধী দলনেতা বিঁধেছেন মমতা ব্যানার্জিকে। উপলক্ষ্য, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর গরহাজিরা।
Today is a dark day in India’s long-standing ethos of cooperative federalism, a principle held sacred by PM @narendramodi.
CM @MamataOfficial has shown once again that she is insensitive to the sufferings of the people of West Bengal.
— Suvendu Adhikari • শুভেন্দু অধিকারী (@SuvenduWB) May 28, 2021
তাৎপর্যপূর্ণ ব্যাপার হল, শুভেন্দু যে সময় ট্যুইট করেছেন ঠিক সেই সময় অর্থাৎ বিকেল ৫ টা বেজে ৫৯ মিনিটে কার্যত একই সুরে ট্যুইট করেন রাজ্যপাল ধনখড়ও।
It would have been in interest of State if CM and officials @MamataOfficial had participated in Review Meet with PM.
Difficult to appreciate- No official present in Review Meet and no meeting between PM and CM, much less one to one.
Such confrontation has no place in democracy.
— Governor West Bengal Jagdeep Dhankhar (@jdhankhar1) May 28, 2021
এখন প্রশ্ন হল, মাঝের এই আধ ঘণ্টায় কী এমন ঘটল যে বেমালুম বদলে গেল শুভেন্দু অধিকারীর ভাষা! যে শুভেন্দু প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক সেরে বেরিয়ে চ্যানেলে বাইট দিয়ে বললেন রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে কাজ করতে হবে, সেই তিনি ৩০ মিনিটের মধ্যেই ট্যুইট বৃষ্টি করে মুখ্যমন্ত্রীকে বিঁধতে শুরু করলেন? কী ঘটল এই ৩০ মিনিটে? পাশাপাশি ওই একই সময় কার্যত একই সুরে রাজ্যপালের ট্যুইট। গোটাটাই কি কাকতালীয়? প্রশ্ন এখন সেটাই।
পর্যবেক্ষকদের একটি অংশ দাবি করছে, বিরোধীদের আক্রমণ করতে কার্পেট বম্বিংয়ের মতো বিভিন্ন ব্যক্তিত্বকে দিয়ে একই বিষয়ে ট্যুইট করিয়ে হাওয়া তৈরি করা বিজেপি আইটি সেলের বহুদিনের টেকনিক। এবারও তাই হয়েছে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একটি অংশ মনে করছে, মিটিং থেকে বেরিয়ে শুভেন্দু যা বলেছিলেন সেটা ছিল ব্যক্তি শুভেন্দুর কথা, ৩০ মিনিট পর শুভেন্দুর ট্যুইট দলের লাইন।
Comments are closed.