দুর্নীতি রোধে সব গ্রাম পঞ্চায়েতে অডিটের সিদ্ধান্ত রাজ্যের, নির্দিষ্ট সময়ে প্রকল্প শেষে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ

পঞ্চায়েত স্তরে দুর্নীতি ঠেকাতে এবার সব গ্রাম পঞ্চায়েতে অডিট করার সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য। সূত্রের খবর, সমস্ত ব্লক অফিসারকে পঞ্চায়েতের কাজের অডিট করে রাজ্য পঞ্চায়েত দফতরে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর। এই অডিট রিপোর্টগুলি বেসরকারি পেশাদার সংস্থাকে দিয়ে পরীক্ষা করাবে রাজ্য সরকার।
জেলা পরিষদে নিয়মিত অডিট হয়। কিন্তু রাজ্যের ৩ হাজারেরও বেশি পঞ্চায়েত থেকে নিয়মিত অডিট রিপোর্ট পায়নি রাজ্য, বলে সূত্রের খবর। তাই স্বচ্ছতার লক্ষ্যে, প্রতি বছর সমস্ত গ্রাম পঞ্চায়েত অডিটের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাছাড়া, ১০০ দিনের কাজ, বাংলার বাড়ি, বাংলার গ্রামীণ সড়ক যোজনা, আনন্দধারার মতো কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের প্রায় ২৫ টি প্রকল্প ও কর্মসূচি গ্রাম পঞ্চায়েতের মাধ্যমে রূপায়িত হয়। এই প্রকল্প রূপায়নে কোনও খামতি আছে কিনা এবং প্রকল্প খাতে বরাদ্দকৃত টাকা খরচের পুঙ্খানুপুঙ্খ হিসেব নেওয়া হবে এই অডিটে।
রাজ্যের বিভিন্ন প্রকল্প থেকে কাটমানি নেওয়ার জন্য খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কোপে পড়েছেন দলীয় নেতা কর্মীদের একাংশ। পাশাপাশি সরকারি প্রকল্পের টাকা প্রকৃতই খরচ হচ্ছে কিনা তা খতিয়ে দেখারও প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছে পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর। এই প্রেক্ষিতেই অডিটের সিদ্ধান্ত। সূত্রের খবর, আগামী সেপ্টেম্বর থেকে অডিট পর্ব শুরু হবে। শুধু অডিট নয়, দুর্নীতি ঠেকাতে এবং নির্দিষ্ট সময়ে প্রকল্প শেষ করার জন্য বেশ কিছু পদক্ষেপ করেছে সরকার। যেমন কোনও উন্নয়ন প্রকল্প শুরু করার আগে তার সার্বিক পরিস্থিতি সরেজমিনে খতিয়ে দেখবেন অফিসাররা। প্রকল্প রূপায়নের সময় নির্দিষ্ট সময় অন্তর ফটো সহ প্রমাণ পাঠানো হবে পঞ্চায়েত দফতরে।
লোকসভা ভোটে তৃণমূলের প্রত্যাশিত ফল না হওয়ায় কারণ খুঁজতে গিয়ে পঞ্চায়েত স্তরে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ সামনে এসেছে। পাশাপাশি, বেশ কিছু পঞ্চায়েতে অনিয়মিত অডিটের কারণে জালিয়াতি, দুর্নীতি ইত্যাদি সমস্যা আরও বেড়েছে বলে মনে করছে রাজ্য সরকার। তাই বিধানসভা ভোটের আগে জনপ্রতিনিধি থেকে সরকারি কর্মচারীদের কাজে স্বচ্ছতা বজায় রাখতে উদ্যোগ নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Comments are closed.