‘বিজেপি ক্ষমতায় এলে গুলি করে মারবে’, মন্তব্যের জন্য দিলীপ ঘোষকে দায়িত্বজ্ঞানহীন বললেন বাবুল! দুই রাজ্য নেতার সংঘাত প্রকাশ্যে

বঙ্গ বিজেপির ঘরের কোন্দল এবার প্রকাশ্যে। বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের গুলি মারার হুমকির প্রেক্ষিতে ট্যুইট করে এই বক্তব্যের সঙ্গে দলের দূরত্ব তৈরি করলেন আরেক সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। কোনও রাখঢাক না করে রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে বললেন দায়িত্বজ্ঞানহীন।
রবিবার রানাঘাটে দলীয় সমাবেশ থেকে বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা মেদিনীপুরের সাংসদ দিলীপ ঘোষ হুমকি দেন, বিজেপি রাজ্যে ক্ষমতায় এলে উত্তরপ্রদেশ, অসম সরকারের মতো সরকারি সম্পত্তি ধ্বংসকারীদের গুলি করে মারবে। যা নিয়ে তীব্র বিতর্ক শুরু হয়েছে। উঠেছে সমালোচনার ঝড়। এই পরিস্থিতিতে ড্যামেজ কন্ট্রোলে নেমে বিস্ফোরক ট্যুইট করলেন দলে দিলীপ ঘোষের উল্টো লবির লোক বলে পরিচিত আসানসোলের সাংসদ বাবুল।
সোমবার সকাল সাড়ে ১১ টা নাগাদ বাবুল সুপ্রিয় একটি ট্যুইট করেন। ট্যুইটে লেখেন, দিলীপ ঘোষ যা হয়তো বলেছেন, তার সঙ্গে দল হিসেবে বিজেপির কোনও যোগ নেই। এটা তাঁর ভাবনার সংকীর্ণতা এবং উত্তরপ্রদেশ ও অসমের বিজেপি সরকার মানুষকে গুলি করার পক্ষপাতী নয়। দিলীপ দা যা বলেছেন, তা অত্যন্ত দায়িত্বজ্ঞানহীনতার পরিচয়।

বঙ্গ বিজেপির অন্দরে বাবুল-দিলীপ দ্বৈরথ আজকের নয়। বিভিন্ন বিষয়ে এই দুই নেতার মতানৈক্য নিয়ে দলের অন্দরে গুঞ্জন শোনা যায়। কিন্তু দুই সাংসদের দ্বন্দ্ব এতদিন দলের অন্দরেই সীমাবদ্ধ ছিল। রবিবার রানাঘাটের সমাবেশ থেকে দিলীপ ঘোষের এমন চরম বিতর্কিত বেফাঁস মন্তব্য সেই বাঁধটুকুও ভেঙে দিল বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। নিজের দলের রাজ্য সভাপতিকে প্রকাশ্যে দায়িত্বজ্ঞানহীন বলে মন্তব্য করে বাবুল সুপ্রিয় বিজেপির সঙ্গেও এই মন্তব্যের দূরত্ব তৈরির চেষ্টা করেছেন। জানিয়েছেন, কোনও রাজ্যেই বিজেপি সরকার কখনওই মানুষকে গুলি করার নীতি নেয় না। এই মন্তব্য দিলীপ ঘোষের ভাবনার সংকীর্ণতা বৈ আর কিছু নয় বলেও লিখেছেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী।
এ প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষের প্রতিক্রিয়ার জন্য ফোন করা হলেও তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।
অতীতেও দিলীপ ঘোষের একের পর এক মন্তব্য নিয়ে রাজ্য রাজনীতি তো বটেই, আন্দোলিত হয়েছে জাতীয় রাজনীতিও। সম্প্রতি হুটার বাজানো অ্যাম্বুলেন্সের পথ আটকে বিতর্ক বাধিয়েছেন দিলীপ ঘোষ। এরপর রবিবারের মন্তব্য। যেখানে সরাসরি দিয়েছেন মানুষকে গুলি করার হুমকি। রাজনৈতিক মহল মনে করছে, রাজ্য সভাপতির বেফাঁস মন্তব্যের পর কেন্দ্রীয় নেতৃত্বই ড্যামেজ কন্ট্রোলে নামিয়েছে বাবুলকে। অত্যন্ত সচেতনভাবে রাজ্য বিজেপির তারকা মুখ বাবুলকে দিয়ে দিলীপের মন্তব্যের সঙ্গে দলের দূরত্ব রচনায় উদ্যোগী হয়েছে দিল্লির নেতৃত্ব।

Comments are closed.