রাজ্যে ৩৪ হাজার সরকারি শূন্যপদে নিয়োগ শীঘ্রই, বিধানসভায় ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর

রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দফতরে প্রায় ৩৪ হাজার শূন্যপদ রয়েছে, শীঘ্রই ওই পদগুলিতে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করা হবে, বুধবার বিধানসভায় জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী জানান, রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দফতরে অনেক কর্মচারীর অবসর নেওয়ার কারণে শূন্যপদ তৈরি হয়েছে। সরকারি পরিষেবায় যাতে কোনও ঘাটতি না হয়, তাই শীঘ্রই ওই পদগুলিতে কর্মী নিয়োগ করা হবে।
মমতা বলেন, বিগত কয়েক বছরে প্রচুর সংখ্যক নতুন নিয়োগ হওয়ার পরও, বর্তমানে ৩৩ হাজার ৬৮৭টি পদ খালি রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, এর মধ্যে ১৮ হাজার ৫২৭টি পদ অসংরক্ষিত। যার মধ্যে ১০ শতাংশ আর্থিকভাবে দুর্বল শ্রেণির জন্য। বাকি ১৫ হাজার ১৬০টি পদ সংরক্ষিত। এর মধ্যে তফসিলি জাতির জন্য ৭ হাজার ৪১১টি, তফসিলি উপজাতির জন্য ২ হাজার ২১টি এবং অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির জন্য ৫ হাজার ৭২৮টি পদ রয়েছে। এছাড়াও ১ হাজার ৩৪৭টি পদ প্রতিবন্ধীদের জন্য সংরক্ষিত বলে বিধানসভায় জানান মুখ্যমন্ত্রী।
এছাড়াও, বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা, যে সব স্বনির্ভর গোষ্ঠী ১ বছরের বেশি সময় নথিভুক্ত হয়েছে এবং নিজেদের সদস্যদের ঋণ দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে, তাদের বছরে ৫ হাজার টাকা করে আর্থিক অনুদান দেওয়া হবে। এতে বছরে আনুমানিক ৫০০ কোটি টাকা সরকারের ব্যয় হলেও, রাজ্যের দরিদ্র মহিলাদের স্বনির্ভরতা ও ক্ষমতায়নের জন্যই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে বিধানসভায় জানান মুখ্যমন্ত্রী।
মমতা আরও বলেন, পশ্চিমবঙ্গে ২০১১ সালে ৪ লক্ষ ৭২ হাজার স্বনির্ভর গোষ্ঠী ছিল। ২০১৯ সালে তা এসে দাঁড়িয়েছে ৯ লক্ষ ৬৯ হাজারে। আগে সংশ্লিষ্ট গোষ্ঠীকে ঋণদানের পরিমাণ ছিল ৫৫৩ কোটি টাকা। এখন তা এসে দাঁড়িয়েছে ৭ হাজার কোটিতে। এই স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির মধ্যে ৯৮ শতাংশই মহিলাদের দ্বারা পরিচালিত হয় বলে মন্তব্য করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণার পর অবশ্য বিরোধীদের কটাক্ষ, সরকার ঘটা করে নিয়োগের কথা ঘোষণা করে দিলেও, শেষ পর্যন্ত সরকারি অফিসে কর্মী নিয়োগ আটকে থাকে। বিধানসভায় বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, সরকার এমনভাবেই ডি গ্রেডের কর্মচারি নিয়োগের কথা ঘোষণা করেছিল। কিন্তু আজও সেই পদগুলিতে নিয়োগ হয়নি। পাশাপাশি, সিপিএম বিধায়ক অশোক ভট্টাচার্য প্রশ্ন তোলেন, স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে যে বছরে ৫ হাজার টাকা করে দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছে, তাতে আদৌ কারও কিছু সুবিধা হবে? তিনি বলেন, শিলিগুড়ি পুরসভা ১০ হাজার টাকা করে অনুদান দেয় ওই গোষ্ঠীগুলিকে। যদিও, রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম পাল্টা কটাক্ষ, বামেরা উন্নয়নের কোনও কাজই দেখতে পায় না।

Comments are closed.