নন্দনে সিট রাখা নিয়ে চলচ্চিত্র উৎসবে সিনেমা চলাকালীন ধুন্ধুমার, মারপিটে জড়ালেন দুই সাংবাদিক ও এক দর্শক

২৫ তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে বৃহস্পতিবার বেনজির কাণ্ড ঘটল নন্দনে। সিনেমা হলে জায়গা রাখাকে কেন্দ্র করে বচসার জেরে আক্রান্ত হলেন দুই সাংবাদিক। অভিযুক্ত ব্যক্তি সত্যজিৎ রায় ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক বলে জানা গিয়েছে।
ঘটনার সূত্রপাত বৃহস্পতিবার নন্দন ১ এ বিকেল ৫ টার শোতে। এদিন এই পেক্ষাগৃহে বিকেল ৫ টা থেকে দেখানোর কথা ছিল ফ্রান্সের ছবি ট্রুথ। দর্শকদের মধ্যে এই ছবিটি নিয়ে উৎসাহ ছিল তুঙ্গে। দর্শক সংখ্যা বেশি থাকায় এদিন অনেকেই বসার জায়গা পাননি সিটে। সেই থেকেই বচসার সূত্রপাত। অভিযোগ, সিনেমা শুরু হয়ে যাওয়ার পরও এক ব্যক্তি নিজের ব্যাগ দিয়ে একটি সিট দখল করে রেখেছিলেন। এই ঘটনার প্রতিবাদ করেন পূবের কলমের রামিজ আলি আহমেদ এবং গৃহসভা পত্রিকার সাংবাদিক সুরঞ্জন দে। সিনেমা শুরু হয়ে যাওয়ায় তাঁরা জায়গা ছাড়ার অনুরোধ করেন ওই ব্যক্তিকে। শুরু হয় বচসা। এরপরই সেই বচসা গড়ায় হাতাহাতি পর্যন্ত। সিনেমা শুরু হওয়ার পরও জায়গা রাখার নিয়ম নেই সাংবাদিকরা একথা বলার পরই মারমুখী হয়ে পড়েন রোহিতাষ্য মুখার্জি নামে অভিযুক্ত ব্যক্তি। তিনি সত্যজিৎ রায় ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক বলে জানা গিয়েছে। অভিযোগ, ওই দুই সাংবাদিকের গায়েই হাত তোলেন অভিযুক্ত। নাক ফেটে যায় এক সাংবাদিকের। এরপরই চরম উত্তেজনা ছড়ায় পেক্ষাগৃহে। ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে যায় সিনেমা, তার মধ্যেই চলতে থাকে ঝামেলা। ঘটনার খবর পেয়ে নন্দনের ব্যালকনিতে যান উৎসব কমিটির চেয়ারম্যান রাজ চক্রবর্তী এবং পরিচালক হরনাথ চক্রবর্তী। তাঁদের হস্তক্ষেপে আপাত শান্ত হয় পরিবেশ। অভিযুক্তের দাবি, হাতাহাতিতে তাঁর চোখেও আঘাত লেগেছে। যদিও ওই অবস্থাতেই বসে টানা প্রায় পৌনে দুই ঘণ্টা ছবিটি দেখেন ওই ব্যক্তি। মাঝে দুই পুলিশ কর্মী গিয়েও ওই ব্যক্তিকে নিজের জায়গা থেকে ওঠাতে পারেনি।
ঘটনা নয়া মোড় নেয় সন্ধে পৌনে ৭ টা নাগাদ সিনেমা শেষ হয়ে যাওয়ার পর। ইতিমধ্যেই খবরটি পেয়ে নন্দনে যান বহু সাংবাদিক। সিনেমা শেষে তাঁরা অভিযুক্তের সঙ্গে কথা বলতে চান। কিন্তু পুলিশ কথা বলতে ও ছবি তুলতে সাংবাদিকদের বাধা দেয় বলে অভিযোগ। এমনকী মিডিয়ার চোখের আড়ালে অভিযুক্তকে বাইরেও নিয়ে যায় পুলিশ। পরে অবশ্য নন্দন চত্ত্বরে থাকা পুলিশ সহায়তা কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয় ওই ব্যক্তিকে। পরে আক্রান্ত দুই সাংবাদিক ও অভিযুক্ত ব্যক্তিকে শারীরিক পরীক্ষার জন্য এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যায় হেস্টিংস থানার পুলিশ। এই নজিরবিহীন ঘটনায় রাজ্যের মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেনের কাছে মৌখিক অভিযোগ জানানো হয়েছে সাংবাদিকদের তরফে।

 

Comments are closed.