রাজ্যে ১২ টি হটস্পট বা করোনাপ্রবণ এলাকা চিহ্নিত, দেখে নিন কোথায় এই জায়গাগুলি! এখানে বাড়তি নিষেধাজ্ঞা

করোনাভাইরাসের মোকাবিলায় অন্যান্য রাজ্যের মতো পশ্চিমবঙ্গেও বেশ কয়েকটি করোনাপ্রবণ এলাকা বা ‘হটস্পট’ চিহ্নিত হল। শনিবার রাজ্য প্রশাসনের তরফে মোট ১২ টি এলাকাকে করোনা হটস্পট হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এই ১২ টি জায়গাকে সম্পূর্ণ লকডাউনের আওতায় আনার পরিকল্পনা চলছে। কোন কোন সেই জায়গা?
কলকাতার আলিপুর, পণ্ডিতিয়া রোড, নয়াবাদ এবং দমদমকে হটস্পট এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এছাড়াও সল্টলেক, মহেশতলা,
হাওড়ার শিবপুর, সালকিয়া, পূর্ব মেদিনীপুরের হলদিয়া ও এগরা, নদিয়ার তেহট্ট এবং উত্তরবঙ্গের কালিম্পংকে হটস্পট হিসেবে ঘোষিত হয়েছে।
প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, গত তিন সপ্তাহের মধ্যে যে সমস্ত এলাকা থেকে করোনা আক্রান্তের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে, সেই সব এলাকাকেই হটস্পট হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এই সব এলাকা থেকে বেরনো ও ঢোকার পথগুলি চিহ্নিত করে সিল করে দেওয়ার কাজ চলছে। সাধারণ লকডাউনের থেকে সম্পূর্ণ লকডাউন আরও কঠিন হবে বলে জানিয়েছেন মুখ্য সচিব রাজীবা সিনহা।
যদিও শনিবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে ‘হটস্পট’ শব্দ নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। যে এলাকা থেকে করোনা আক্রন্তের খবর পাওয়া গিয়েছে সেগুলিকে ‘সেনসিটিভ’ বা স্পর্শকাতর জায়গা হিসেবে দেখে স্যানিটাইজ করার কথা বলেছেন। তিনি আগেই জানিয়েছিলেন, রাজ্যে ১১ টি পরিবার থেকেই ৬০ জনের বেশি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। সেখানে কমপ্লিট লকডাউন করা হচ্ছে।
ওই জায়গাগুলিতে বাজার-দোকান বন্ধ রাখা হবে। শুধুমাত্র খোলা থাকবে হাসপাতাল ও ওষুধের দোকান। নিত্যপ্রয়োজনীয় কোনও সামগ্রীর দরকার পড়লে পুলিশ-প্রশাসন এবং স্থানীয় পুরসভা থেকে সাহায্য করা হবে। সেই সঙ্গে ওই এলাকাগুলির বাসিন্দাকে ওয়াকিবহাল করা, লকডাউন মেনে চলার ব্যাপারে প্রশাসনকে ভার দেওয়া হয়েছে বলে শনিবার জানান তিনি।
যে ১২ টি জায়গাকে প্রাথমিকভাবে হটস্পট হিসেবে দেখছে রাজ্য প্রশাসন, এই এলাকাগুলি থেকে খুব প্রয়োজন ছাড়া কেউ অন্যত্র যেতে পারবেন না। সে ক্ষেত্রে পুলিশ-প্রশাসনের অনুমতি নিতে হবে। ‘হটস্পট’ সংলগ্ন এলাকাকে ‘ক্লাস্টার’ হিসাবে চিহ্নিত করা হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত করোনায় রাজ্যে মৃত্যু হয়েছে ৫ জনের। আক্রান্তের সংখ্যা সংখ্যা ৯৫ জন। ভারতের অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় এই পরিসংখ্যান উদ্বেগজনক না হলেও, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে গোড়ায় আটকে দিতে চাইছে রাজ্য প্রশাসন। সে কারণে ‘হটস্পট’ এলাকাগুলিতে করোনাভাইরাসের ‘র‌্যান্ডম টেস্ট’ করা হবে। যেহেতু ওই এলাকাগুলি থেকে কাউকে বাইরে বেরতে দেওয়া হবে না, তাই সংক্রমণও অনেকটাই আটকানো যাবে বলে মনে করছে প্রশাসন। এ ক্ষেত্রে ‘ভিলওয়াড়া মডেল’ অনুসরণ করা হবে।
হটস্পট এলাকাগুলিতে কেউ নিয়মের তোয়াক্কা না করলে, তাঁদের বিরুদ্ধে আইনত ব্যবস্থা নেওয়া হবে পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছে রাজ্য প্রশাসন।

 

Comments are closed.