এনআরএস কাণ্ডের প্রতিবাদে শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত রাজ্যে ১৭০ জন চিকিৎসকের গণইস্তফা, স্বাস্থ্য ব্যবস্থা বেহাল

চিকিৎসকদের গণইস্তফা শুরু হয়েছিল বৃহস্পতিবার উত্তর ২৪ পরগনার সাগর দত্ত মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এরপর এনআরএস, আর জি কর, এসএসকেএম, উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ সহ রাজ্যের বেশ কিছু হাসপাতালে গণইস্তফা দিতে থাকেন চিকিৎসকরা। সূত্রের খবর, শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত গোটা রাজ্যে ১৭০ জন চিকিৎসক পদত্যাগ করেছেন। পদত্যাগপত্রে সুস্পষ্ট কারণ না জানালেও, সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে ইস্তফা দেওয়া অধিকাংশ চিকিৎসক আঙুল তুলেছেন রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা অবনতি, নিজেদের নিরাপত্তাহীনতা ও সর্বোপরি কাজের পরিবেশ নিয়ে।
একদিকে জুনিয়র ডাক্তারদের অনড় অবস্থান, অন্যদিকে একসঙ্গে এতজন চিকিৎসকের ইস্তফার ফলে রাজ্যের চিকিৎসা ব্যবস্থাই ভেঙে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এনআরএসে রোগী মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ইন্টার্ন চিকিৎসককে নিগ্রহ এবং এর প্রতিবাদে জুনিয়র চিকিৎসকদের কর্মবিরতির ডাকে গত চারদিনে বেহাল রাজ্যের চিকিৎসা পরিষেবা। এক হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতালে দৌড়েও পরিষেবা মিলছে না রোগীদের। উঠছে বিনা চিকিৎসায় সদ্যোজাতর মৃত্যুর মতো অভিযোগ। যদিও আন্দোলনে অনড় চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, দাবি পূরণ না হলে অবস্থান থেকে সরছেন না তাঁরা। জুনিয়র চিকিৎসকদের আন্দোলনের ফলে রোগী পরিষেবার পুরো চাপ গিয়ে পড়েছে সিনিয়র ডাক্তারদের ওপর। কিন্তু প্রবল চাপ, কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তার অভাব এবং সর্বোপরি রাজ্য প্রশাসনের ব্যর্থতার দিকে আঙুল তুলে একের পর এক চিকিৎসক ইস্তফা দিয়েছেন। তাঁরা জুনিয়র চিকিৎসকদের আন্দোলনকে সমর্থন করে দাবি করছেন, মুখ্যমন্ত্রীর নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা এবং চিকিৎসকদের কাজের পরিবেশ ফিরিয়ে দেওয়ার।
এদিকে রাজ্যের জুনিয়র চিকিৎসকদের এই আন্দোলনের আঁচ ছড়িয়েছে সারা দেশে। শুক্রবার দিল্লি, মুম্বই, হায়দরাবাদ, জয়পুর, কেরল, অন্ধ্র প্রদেশ, তেলেঙ্গানা ইত্যাদি রাজ্যের চিকিৎসকরা বাংলার চিকিৎসকদের অবস্থানকে সমর্থন করে একদিনের কর্মবিরতি ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু আগামী সোমবার, ১৭ জুন দেশের সমস্ত হাসপাতালে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে ইন্ডিয়ান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (আইএমএ)। ওই দিন জরুরি পরিষেবা ছাড়া বহির্বিভাগ ও অন্যান্য পরিষেবা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে চিকিৎসকদের সর্বোচ্চ সংগঠন।

Comments are closed.