শোভনের বিজেপিতে যোগ দেওয়া নিয়ে কটাক্ষ সাংবাদিক সুমন চট্টোপাধ্যায় ও কুণাল ঘোষের, কলকাতার প্রাক্তন মেয়রের সমালোচনা

শোভন চট্টোপাধ্যায়ের বিজেপিতে যোগদান নিয়ে জল্পনা চলছিল অনেকদিন ধরেই। অবশেষে কলকাতার প্রাক্তন মেয়র গত বুধবার বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর তৃণমূল তাঁকে নিয়ে সরকারিভাবে তেমন কোনও প্রতিক্রিয়া না দিলেও, শোভনকে নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় শ্লেষাত্মক পোস্ট করলেন পৃথক চিটফান্ড মামলায় অভিযুক্ত রাজ্যের দুই সাংবাদিক সুমন চট্টোপাধ্যায় ও কুণাল ঘোষ।

ফেসবুক পোস্টে তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদ কুণাল ঘোষ সরাসরি সমালোচনা করেছেন শোভন চট্টোপাধ্যায়ের। সাংবাদিক সুমন চট্টোপাধ্যায় কলকাতার প্রাক্তন মেয়রের সমালোচনা না করলেও বুঝিয়ে দিয়েছেন, বিজেপিতে গিয়েই দুর্নীতির অভিযোগ থেকে মুক্তি পেয়ে জেলযাত্রা ঠেকিয়েছেন শোভন। যদিও ফেসবুকে এই পোস্ট করার পর তা ডিলিট করে দিয়েছেন এই মুহূর্তে চিটফান্ড মামলায় ভুবনেশ্বরের জেলে বন্দি সুমন চট্টোপাধ্যায়।
২০১৬ সালে বিধানসভা নির্বাচনের আগে নারদ ‘স্টিং অপারেশন’ এর একটি ভিডিওতে কলকাতার তৎকালীন মেয়র ও মন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায়কে টাকা নিতে দেখা গিয়েছিল। সেই নারদ কাণ্ডে একাধিকবার শোভন চট্টোপাধ্যায়কে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সিবিআই। সেই সময় বিজেপির আক্রমণের মুখেও পড়েন তিনি। গত প্রায় এক বছর ধরেই দলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ছিল শোভনের, যার জেরে তিনি মেয়র এবং মন্ত্রীর পদ ছেড়ে দেন। অবশেষে চলতি সপ্তাহে তিনি যোগ দেন বিজেপিতে। অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, গ্রেফতার হওয়া থেকে বাঁচতেই বাধ্য হয়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন শোভন।
শোভন বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরদিনই জেলবন্দি সুমন চট্টোপাধ্যায় ফেসবুকে শেষাত্মক ভঙ্গিতে লেখেন, বাবা কেন তাঁর নাম সুমন না রেখে শোভন রাখলেন না। শোভনের বিজেপিতে যোগদান পর্বকে ‘অ্যান্টনি ও ক্লিওপেট্রা’ বলে উল্লেখ করেন তিনি। অনেকেই মনে করছেন, এ কথা লিখে সাংবাদিক সুমন চট্টোপাধ্যায় বোঝাতে চেয়েছেন, দুর্নীতির অভিযোগে তিনি জেলবন্দি, অথচ একই অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও শোভন বিজেপিতে গিয়ে জেলযাত্রা ঠেকালেন। যদিও এই পোস্ট করার পর তা ফেসবুক পেজ থেকে ডিলিট করে দেন তিনি।
সুমন চট্টোপাধ্যায়ের মতো শ্লেষত্মক কটাক্ষ না করে সরাসরিই শোভনের সমালোচনা করেন তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদ এবং চিটফান্ড মামলায় অভিযুক্ত কুণাল ঘোষ। বৃহস্পতিবার ফেসবুক পোস্টে কুণাল ঘোষ লেখেন, ‘শোভনদা আর যাই বলো, নীতির কথা বোলো না।’ মঙ্গলবার দিল্লিতে বিজেপির সদর দফতরে গিয়ে গেরুয়া শিবিরে যোগদান করে তৃণমূলের নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। যা নিয়ে তাঁকে তীব্র আক্রমণ করে কুনাল ঘোষ লেখেন, সারদা মামলায় যখন তিনি প্রেসিডেন্সি জেলে বন্দি, সে সময় তাঁর সাংসদ তহবিলের একাধিক কাজ অন্যায়ভাবে আটকে রেখেছিল কলকাতা পুরসভা। কলকাতার তৎকালীন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের কাছে তাঁর মাকে দিয়ে একাধিকবার ফোন করিয়েও কোনও সাহায্য পাননি বলে অভিযোগ কুণাল ঘোষের। কুণালের আরও অভিযোগ, তাঁর বরাদ্দ করা ৪০ টি নতুন অ্যাম্বুলেন্স থেকে তাঁর নাম মুছে দেওয়া হয়েছিল।

Comments are closed.