এতদিন রাজ্যপালকে বিজেপির মুখপাত্র ব্যলে কটাক্ষ করছিলেন মমতা ব্যানার্জি সহ তৃণমূল নেতারা। এবার রাজ্যপাল ধনখড়ের সঙ্গে আরএসএসের যোগ নিয়ে সরব হল তৃণমূল।
জগদীপ ধনখড়ের একটি ট্যুইটকে ‘তথ্যপ্রমাণ’ হিসেবে ধরে তাঁর বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ আনল তৃণমূল। রাজ্যপাল পদের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন রাজ্যের শিক্ষা মন্ত্রী তথা তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চ্যাটার্জি থেকে সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদাররা।
কিন্তু ঠিক কী ঘটেছে?
বৃহস্পতিবার রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে প্রশাসনের কঠোর নিন্দা করেন রাজ্যপাল। একটি ট্যুইটে তিনি দাবি করেন, আল-কায়দার মতো জঙ্গি বাহিনী পশ্চিমবঙ্গকে তাদের নিরাপদ ডেরা বলে মনে করছে। রাজ্যে অবাধে গড়ে উঠছে বেআইনি বোমা কারখানা। যা রাজ্যের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার ক্ষেত্রে যথেষ্ট চিন্তার। কিন্তু সেদিকে মমতা ব্যানার্জির প্রশাসনের তেমন নজর নেই বলে অভিযোগ করেন ধনখড়। এমনকী রাজ্য পুলিশের প্রাক্তন ডিজি তথা রাজ্যের নিরাপত্তা উপদেষ্টা সুরজিৎ করপুরকায়স্থ এবং আভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বিভাগের মুখ্য উপদেষ্টা রিনা মিত্রের মতো অবসরপ্রাপ্ত আইপিএসদের রেখে কী লাভ হল, মুখ্য মন্ত্রীরকে ট্যাগ করে সেই প্রশ্নও তোলেন রাজ্যপাল।
ঠিক এখানেই গোলমালের সূত্রপাত। রাজ্যপালের এই ট্যুইট আসলে আরএসএসের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের প্রমাণ বলে দাবি করেছে তৃণমূল। ধনখড়ের ওই ট্যুইটের একটি স্ক্রিনশট নিয়ে বৃহস্পতিবারই ট্যুইট করেন পার্থ চ্যাটার্জি। সেখানে দেখা গিয়েছে, ট্যুইটে সুরজিৎ করপুরকায়স্থ ও রিনা মিত্রকে নিয়োগের চিঠিও এনক্লোজ করেছিলেন রাজ্যপাল। আর সেই চিঠির ছবিতে দেখা যায়, সেটি আরএসএসের জনৈক সদস্য সুধীর তাঁকে পাঠিয়েছেন।
এ নিয়েই বৃহস্পতিবার সন্ধে থেকে রাজ্য বনাম রাজ্যপাল তরজা তুঙ্গে ওঠে। এর পরে যদিও রাজ্যপালের সংশ্লিষ্ট ট্যুইটে আর আরএসএসের কর্মীর নাম আর দেখা যায়নি।
তবে ট্যুইটারে শিক্ষা মন্ত্রী পার্থ চ্যাটার্জি ওই চিঠির ছবিটি দিয়ে লেখেন, কোনও রাজ্যের রাজ্যপাল স্থানীয় রাজনীতি থেকে দূরে থাকবেন, সেটাই বাঞ্ছনীয়। কিন্তু বিজেপির জমানায় তিনি সরাসরি আরএসএসের নির্দেশে কাজ করেন।” তৃণমূল সাংসদ কাকলি ঘোষদস্তিদার ট্যুইটারে লেখেন, ”একজন রাজ্যপাল হিসাবে, আপনি রাজ্য রাজনীতির প্রতি পক্ষপাতহীন দৃষ্টি দেবেন সেটাই আশা করা হয়। কিন্তু ধনখড়জি, স্পষ্টতই সাংবিধানিক পদের প্রতি আপনার কোনও সম্মান নেই। আপনার এই পক্ষপাতিত্ব এখন সবার সামনে বিচারের জন্য উন্মুক্ত! ”
যদিও এই বিতর্কের রেশ কাটতে না কাটতেই শুক্রবার পরপর বেশ কয়েকটি ট্যুইটে ফের পুলিশ এবং মুখ্য মন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে খোঁচা দেন রাজ্যপাল। রাজ্যে সিন্ডিকেট রাজ, পুলিশি সন্ত্রাস চলছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে বলেও সুর চড়িয়েছেন ধনখড়।