বৃহস্পতিবার সকালে পাক সেনা সদর দফতরে ইমরান। সন্ত্রাস বন্ধে পাকিস্তান কাজ করবে, রাষ্ট্রসংঘে আশা প্রকাশ ভারতের

পাক সেনাপ্রধান কামার জাভেদ বাজওয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে বৃহস্পতিবার রাওয়ালপিন্ডিতে দেশের সেনা সদর দফতরে গেলেন পাকিস্তানের নতুন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। তাঁর সঙ্গে ছিলেন দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী, বিদেশমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং অর্থ ও তথ্যমন্ত্রী। সরকারিভাবে পাক সেনার তরফে জানানো হয়েছে, প্রতিরক্ষা, অভ্যন্তরীন নিরাপত্তাসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে এদিন সেনার তরফে প্রধানমন্ত্রীকে ‘ব্রিফিং’ করা হয়েছে। এর আগে সোমবার, প্রধানমন্ত্রীর অফিসে গিয়ে ইমরানের সঙ্গে দেখা করে এসেছিলেন পাক সেনাপ্রধান। সরকারিভাবে জানানো হয়েছে, দেশে শান্তি ও স্থিতাবস্থা স্থাপন ও বজায় রাখার লক্ষ্যে এক সাথে কাজ করার ব্যাপারে সহমত হয়েছেন পাক প্রধানমন্ত্রী ও সেনাপ্রধান।
এদিকে এদিন ইমরান খানের দেশের সেনা সদর দফতরে যাওয়ার দিনই ভারতের তরফে আশা প্রকাশ করা হয়েছে, পাকিস্তানের নয়া প্রধানমন্ত্রী দক্ষিণ এশিয়াকে সন্ত্রাসবাদ মুক্ত করার লক্ষ্যে কাজ করবেন। বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি সৈয়দ আকবরউদ্দিন জানান, পাকিস্তানের নব নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী দক্ষিণ এশিয়ায় উন্নয়ন, নিরাপত্তা, শান্তি ও স্থিতাবস্থা বজায় রাখার লক্ষ্যে কাজ করবেন, এটাই ভারত আশা করে। তবেই সন্ত্রাস ও হিংসামুক্ত এক অঞ্চল গড়ে উঠবে।
অন্যদিকে, আগামী মাসের প্রথমেই পাকিস্তান সফরে যাচ্ছেন মার্কিন বিদেশ সচিব মাইকেল পম্পেও এবং মার্কিন সেনাপ্রধান জোসেফ ডানফোর্ড। বুধবার পেন্টাগনে এক সাংবাদিক সম্মেলনে মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব জেমস ম্যাটিস এই খবর জানিয়ে বলেন, পাক সেনাপ্রধান ও পাক বিদেশমন্ত্রীর পাশাপাশি সে দেশের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সঙ্গেও তাঁদের বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। আলোচ্য সূচিতে ‘সন্ত্রাসবাদ’ একটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গা নেবে বলে মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব জানিয়েছেন। সন্ত্রাস মোকাবিলা ও দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তি প্রতিষ্ঠা আমেরিকার কাছে বরাবর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বলে জানিয়েছেন মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব। উল্লেখ্য, ভারত-আমেরিকার মধ্যে প্রথম ‘টু প্লাস টু টক’ আলোচনায় যোগ দিতে আগামী সপ্তাহেই আবার ভারতে আসার কথা রয়েছে মার্কিন বিদেশ সচিব ও প্রতিরক্ষা সচিবের। ভারতে এসে তাঁরা বৈঠক করবেন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা সীতারমণের সঙ্গে।
উল্লেখ্য, পাক প্রধানমন্ত্রীর চেয়ারে বসে ইতিমধ্যেই ভারতকে কাশ্মীরসহ অন্যান্য যাবতীয় দ্বিপাক্ষিক বিষয়ে আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছেন ইমরান। তাঁর শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যাওয়া নভজ্যোত সিং সিধুকে শান্তির দূত হিসাবেও উল্লেখ করেছিলেন তিনি। কিন্তু ভারতের তরফে জানানো হয়েছে, সন্ত্রাসবাদ ও সীমান্ত পেরিয়ে এদেশে হামলার ঘটনা যতক্ষণ না কমছে ততক্ষণ শীর্ষ স্তরে দু’দেশের মধ্যে আলোচনা চলতে পারে না। নব নির্বাচিত পাক প্রধানমন্ত্রীকে নরেন্দ্র মোদী শুভেচ্ছা বার্তা পাঠালেও, এখনই দু’দেশের মধ্যে আলোচনার পরিস্থিতি তৈরি হয়নি বলেই মনে করছে বিদেশ মন্ত্রক। তবে কাশ্মীরে যে পরিস্থিতি চলছে, এই অবস্থান খোদ মার্কিন সেনাপ্রধানের পাকিস্তান সফর নিঃসন্দেহে জল্পনা বাড়িয়েছে।

Comments are closed.