২০১৮ ইন্টারন্যাশনাল জুরি অ্যাওয়ার্ড পেয়েছিল কোন কোন পুজো, দেখে নিন এক ঝলকে

গতবার থেকে শুরু হওয়া ইন্টারন্যাশনাল জুরি অ্যাওয়ার্ড নিয়ে এবারও সাড়া পড়ে গিয়েছে কলকাতার পুজো কমিটিগুলোর মধ্যে। এবার কারা পাবে আন্তর্জাতিক বিচারকমণ্ডলীর কাছ থেকে পুরস্কার, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে বারোয়ারি পুজো কমিটিগুলোর মধ্যে চুলচেরা প্রতিযোগিতা। কেউ কাউকে এক ইঞ্চিও জমি ছাড়তে নারাজ। বাকিদের পিছনে ফেলে বিদেশের বিচারকদের হাত থেকে সেরার শিরোপা ছিনিয়ে নিতে বধ্য পরিকর শহরের বারোয়ারি পুজো কমিটিগুলো।

পুরষ্কার দেওয়া হয় মূলত তিনটি ক্যাটেগরিতে ভাগ করে। সেরা সৃষ্টি বা সিগনেচার ক্রিয়েশনের তিনটি ভাগ। প্রথম ভাগে যাদের পুজোর বাজেট ৪০ লক্ষ কিংবা তার ঊর্ধ্বে। দ্বিতীয় ভাগে, যাদের পুজোর বাজেট ২০ থেকে ৪০ লক্ষ টাকা। আর তৃতীয় ভাগে থাকে সেই সব পুজো যাদের বাজেট ২০ লক্ষের কম। এছাড়াও সেরা দৃষ্টিনন্দন পুজো, সেরা আন্তর্জাতিক আবেদন সম্পন্ন পুজো, সোলফুল ক্রিয়েশন, সেরা প্রতিমার পুরস্কার তুলে দেওয়া হয় সংশ্লিষ্ট পুজো উদ্যোক্তাদের হাতে।

এবার একনজরে দেখে নিই, গতবার বাজিমাত করেছিলেন কারা?

সিগনেচার ক্রিয়েশন ১ঃ গতবার সেরা সৃষ্টির প্রথম ক্যাটেগরিতে পুরস্কার পেয়েছিল বেহালা বুড়ো শিবতলা জনকল্যাণ সঙ্ঘ। তাদের থিম ছিল সর্বধর্ম সমন্বয়।

সিগনেচার ক্রিয়েশন ২ঃ  সেরা সৃষ্টির দ্বিতীয় ক্যাটেগরিতে সেরা শিরোপাও গিয়েছিল বেহালাতে। বড়িশা ক্লাবের পুজো মণ্ডপ ২০১৮ সালে সেরার শিরোপা ছিনিয়ে নিয়েছিল। তাদের থিম ছিল বার্ধক্যের যন্ত্রণা।

সিগনেচার ক্রিয়েশন ৩­: সেরা সৃষ্টির তৃতীয় ক্যাটেগরিতে অবশ্য নেই কোনও বেহালার পুজো। তবে পুরস্কার থেকেছে দক্ষিণ কলকাতাতেই। এই বিভাগে সেরা হয়েছিল ট্যাংরা ঘোলপাড়া সর্বজনীন দুর্গা পুজো কমিটি। গতবার তাদের মণ্ডপের বিশেষত্ব ছিল জয়া-বিজয়ার আখ্যান।

ভিজ্যুয়াল ডিলাইটঃ গতবার সেরা দৃষ্টিনন্দন পুজো বিভাগে সেরার তকমা গিয়েছিল উত্তর কলকাতায়। পুরস্কার পেয়েছিল বেলগাছিয়া সর্বজনীন দুর্গোৎসব। তাদের পুজোর বিশেষত্ব ছিল  কাগজের অনুপম কারুকাজ এবং তার সঙ্গে মধুবনি শিল্পের ছোঁয়া।

গ্লোবাল আউটরিচঃ ২০১৮ সালে সেরা আন্তর্জাতিক আবেদন সম্পন্ন পুজোর শিরোপা এসেছিল দক্ষিণ কলকাতায়। নাকতলা উদয়ন সঙ্ঘ গতবার গ্লোবাল আউটরিচে সেরার তকমা ছিনিয়ে নিয়েছিল। গতবার তাদের পুজোর আকর্ষণ ছিল সময়ের বিবর্তন।

এক্সক্যুইজিট আইডলঃ গতবার সেরা প্রতিমার খেতাব গিয়েছিল টালা প্রত্যয়ের হাতে। তাদের প্রতিমা শিল্পসম্মত সৌন্দর্যের আভায় উদ্ভাসিত। দেবী দুর্গার অতুলনীয় সৌন্দর্য দেখে চোখ ফেরাতে পারেননি দর্শকরা। একইভাবে মুগ্ধ হয়েছিলেন ইন্টারন্যাশনাল জুরি অ্যাওয়ার্ডের জুরিরাও। স্বাভাবিকভাবেই টালা প্রত্যয়ের হাতে উঠেছিল সেরা প্রতিমার পুরস্কার।

সোলফুল ক্রিয়েশনঃ ইন্টারন্যাশনাল জুরি অ্যাওয়ার্ডের সর্বশেষ ক্যাটেগরি। উত্তর না দক্ষিণ, কোনদিকে গেল সেই পুরস্কার? লড়াই ছিল হাড্ডাহাড্ডি। মতের অমিল ছিল বিচারকদের মধ্যেও। কিন্তু শেষপর্যন্ত সর্বসম্মতিক্রমে এই পুরস্কার পায় বড়িশা সর্বজনীন। আন্দামানের জারোয়াদের নিয়ে অসাধারণ কাজ, তাদের এনে দিয়েছিল সেরার শিরোপা।

তবে এখানেই শেষ নয়, এমন কিছু পুজো, যারা উদ্ভাবনী ক্ষমতার দিক থেকে অতুলনীয়। বিচারকমণ্ডলী তাদেরও বিশেষ পুরস্কারে ভূষিত করেছেন।

এবার কী হবে? নতুন কোনও পুজো কি এবার চমকে দেবে, নাকি গতবারের ধারা বজায় রেখে এবারও বাজিমাত করবে পুরনোরাই? অপেক্ষা আর মাত্র কয়েকটা দিনের।

Comments are closed.