ওসিকে নিয়ে প্রচার! পুরনো ছবি ব্যবহার করে মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ বিজেপির, কমিশনে তৃণমূল

বিজেপির সর্বভারতীয় নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয় একটি ট্যুইট। আর তা নিয়েই তোলপাড় বাংলার রাজনৈতিক পরিমণ্ডল। রাজ্যের ৩ কেন্দ্রে উপনির্বাচনের আগে তৃণমূল সরকার প্রশাসনকে হাতের পুতুল বানিয়ে ইচ্ছেমতো ব্যবহার করছে। গত সোমবার রাতে এই দাবি করে কৈলাস বিজয়বর্গীয় একটি ট্যুইট করেন। সেখানে মধ্য প্রদেশের বিজেপি নেতা দাবি করেন, ২৫ তারিখ যে করিমপুর বিধানসভা আসনে উপনির্বাচন, সেই কেন্দ্রে স্থানীয় থানার পুলিশ আধিকারিককে নিয়ে প্রচারে বেরিয়েছেন স্থানীয় সাংসদ মহুয়া মৈত্র। কৈলাস ট্যুইটে লেখেন, দেখে মনে হচ্ছে, বাংলার পুলিশ তৃণমূলে যোগ দিয়েছে!

বিজেপির এই কেন্দ্রীয় নেতার ট্যুইট প্রকাশ্যে আসতেই তোলপাড় পড়ে যায়। বাংলার এনিয়ে তুমুল হইচই শুরু করে বিজেপি। মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গের নালিশ দায়ের হয় নির্বাচন কমিশনে। অভিযুক্ত পুলিশ আধিকারিককে পত্রপাঠ বদলির দাবি করেন দিলীপ ঘোষরা। সোমবার সন্ধ্যে নাগাদ বঙ্গ বিজেপির মহিলা মোর্চার দায়িত্বপ্রাপ্ত কেয়া ঘোষও একই বিষয়ে ট্যুইট করেন।

সত্যিই কি মহুয়া মৈত্র করিমপুরে দলীয় প্রার্থীর সমর্থনে পুলিশ আধিকারিককে সঙ্গে নিয়ে প্রচার চালাচ্ছেন? তা যদি সত্যি হয়, তাহলে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে কমিশন কি মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে? এই প্রশ্ন যখন ক্রমেই বড় আকার নিচ্ছে, তখনই দেখা যায়, মহুয়া মৈত্র নিজের ফেসবুক পেজে এই ভাইরাল ছবিটির সঙ্গে আরও কয়েকটি ছবি শেয়ার করেছিলেন গত ১৮ অগাস্ট। যখন উপ নির্বাচন ঘোষণা হয়নি, ফলে আচরণ বিধিরও প্রশ্ন ছিল না।

নদিয়ার নাতিডাঙা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের রোগী কল্যাণ সমিতির সভাপতি স্থানীয় সাংসদ মহুয়া মৈত্র। গত ১৮ অগাস্ট সেই উপলক্ষ্যেই সেখানে বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। উপস্থিত ছিলেন রোগী কল্যাণ সমিতির অন্যান্য সদস্যরাও। নিয়ম অনুযায়ী তার মধ্যে ছিলেন চিকিৎসক, বিডিও ও স্থানীয় থানার ইনচার্জ সহ আরও অনেকে। বৈঠক সেরে ফেরার পথে এক মহিলা সদস্যের অনুরোধে মহুয়ারা গিয়েছিলেন তাঁর বাড়িতে মিষ্টিমুখ করতে। সেখানেই তোলা এই ছবিগুলো।

যে ছবিকে উপনির্বাচনের প্রচার বলে চালাতে সচেষ্ট হয়েছিল একটি অংশ। সত্যি-মিথ্যা বিবেচনা না করেই যে ছবি নাগাড়ে ট্যুইট করে গিয়েছেন বাংলার বিজেপি নেতা নেত্রীরা। একই ভুলের ফাঁদে পা দিয়ে মুখ পুড়িয়েছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়। কমিশনে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ অবধি জানিয়ে ফেলেছেন। কিন্তু সত্যি প্রকাশ্যে আসতেই মুখে কুলুপ তাঁদের। মিথ্যাচারের অভিযোগ এনে বিজেপির বিরুদ্ধে কমিশনে অভিযোগ দায়ের করেছেন তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক সুব্রত বক্সী।

এর আগে মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে সংসদে ভাষণ দিতে গিয়ে বিদেশি একটি প্রতিবেদন থেকে তথ্য নিয়ে তা স্বীকার না করার অভিযোগ এনে বিপাকে পড়েছেন বিজেপি ঘনিষ্ঠ নিউজ চ্যানেল জি নিউজের এডিটর-ইন-চিফ সুধীর চৌধুরী। তাঁর বিরুদ্ধে মানহানির মোকদ্দমাও চলছে। এবার মহুয়া মৈত্রকে কেন্দ্র করে ফের মুখ পুড়ল বিজেপির, এমনটাই মনে করছে তৃণমূল।

Comments are closed.