এখনও দেশপ্রেমের প্রমাণ দিতে হবে! মনে হয় রাজনীতিতে না এলেই ভালো হত, বললেন মমতা, দিলেন ভালোবাসার বার্তা
এত বছর ধরে রাজনীতি করেও যখন দেশপ্রেমের প্রমাণ দিতে বলা হয়, তখন মনে হয় রাজনীতিতে না এলেই ভালো হোত। বরানগরের এক অনুষ্ঠানে আক্ষেপ ঝরে পড়ল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গলায়। সোমবার বরানগর থেকে মমতা বলেন, ধর্ম বিদ্বেষ শেখায় না, ধর্ম আর একজনকে ভালবাসতে শেখায়। কিন্তু বর্তমানে দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে তিনি উদ্বিগ্ন বলে জানালেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, আজ যখন ধর্মের নামে একজন আর একজনের গায়ে আগুন লাগায়, বিদ্বেষ ছড়ায়, কারোর ধর্ম-বর্ণ বা পদবি নিয়ে প্রশ্ন তোলে, তখন তার চেয়ে লজ্জার আর কিছু হয় না।
কিছুদিন আগে পুরীর মন্দিরে পুজো দিতে যাওয়ার সময় বাধার মুখে পড়তে হয়েছিল তাঁকে। তাঁকে বলা হয় তিনি হিন্দু নন, তাই মন্দিরে পুজো দেওয়া যাবে না। সেই তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা এদিন প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর প্রশ্ন, কার পদবি কী, কে কোন ধর্মে বিশ্বাসী তা অন্য কেউ ঠিক করে দেওয়ার কে? মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কে কোন ধর্মের, কী খায়, কী পরবে তা নির্ধারণ করে দেওয়ার অপচেষ্টা চলছে। এত বছর ধরে দেশে থাকার পরও দেশপ্রেমের প্রমাণ দিতে বলা হচ্ছে। উদ্বিগ্ন মমতার কথায়, যুগ যুগ ধরে যে সর্বধর্ম সহিষ্ণুতার কথা বলে এসেছেন ভারতের মনীষিরা, সেই একতা, সহিষ্ণুতা আগামীদিনে লোপ পাবে না তো?
মমতা বলেন, ধর্ম মানে ধর্মান্ধতা নয়, ধর্মের ব্যাপ্তি বিশাল। যে যার ধর্মীয় আচার আচরণের মাধ্যমে অন্যের পাশে দাঁড়ানো, সেবা করাই প্রকৃত ধর্ম। যারা ধর্মের দোহাই দিয়ে অন্যের গায়ে আগুন লাগায়, বিদ্বেষ তৈরি করে মানুষে মানুষে, তারা আদতে কোনও ধর্মেরই মানুষ নয়, বলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, বিদ্বেষ দিয়ে কখনও ধর্ম পালন হয় না। বরানগরের অনুষ্ঠানমঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা, ‘আসুন মানুষকে ভালবাসি, এই বাংলাই পারে পথ দেখাতে।’