বাংলার বাড়ি প্রকল্পে কাটমানি বন্ধে উপভোক্তা নিজের ভাগ দেবেন ব্যাঙ্কে, সিদ্ধান্ত রাজ্যের

এই আর্থিক বছরে বাংলার গ্রামাঞ্চলের গরিব মানুষদের জন্য ‘বাংলার বাড়ি’ প্রকল্পে ৮ লক্ষ ৩০ হাজার বাড়ি তৈরির উদ্যোগ নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ১০০ র বেশি পুরসভাতেও এই প্রকল্পের আওতায় বাড়ি তৈরি হবে। অন্যদিকে, কাটমানি নিয়ে যখন রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় তীব্র বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে, তখন এই বিতর্কে রাশ টানতে উদ্যোগ নিল রাজ্য সরকার। বিভিন্ন সরকারি প্রকল্প থেকে কাটমানি নেওয়ার অভিযোগ উঠছে তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে। এই অবস্থায়, শহরাঞ্চলে বাংলার বাড়ি প্রকল্পে যে ৩ লক্ষ ৬৮ হাজার টাকা দেওয়া হবে, সেখানে স্বচ্ছতা আনতে রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের নির্দেশ, সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের উপভোক্তাদের নিজস্ব ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলে তাঁদের অংশের ২৫ হাজার টাকা জমা দিতে হবে। শহরাঞ্চলে এই প্রকল্পে উপভোক্তা প্রতি যে ৩ লক্ষ ৬৮ হাজার টাকা দেওয়া হচ্ছে এর মধ্যে কেন্দ্র দেবে ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা এবং রাজ্যের তরফে দেওয়া হবে ১ লক্ষ ৯৩ হাজার টাকা। এই প্রকল্পে ২৫ হাজার টাকা দিতে হয় উপভোক্তাকে। আগে কাউন্সিলার বা পুরসভাকে ওই টাকা দিতে হতো। কিন্তু বিভিন্ন সময় সেই টাকা জমা করা হতো না বলে অভিযোগ উঠেছে। এই বিভ্রান্তি ও অভিযোগ দূর করতে এবার নতুন নির্দেশিকা দিল রাজ্য সরকার। কোনও কাউন্সিলার বা পুরসভাকে ওই টাকা না দেওয়ার জন্য উপভোক্তাদের উদ্দেশে নির্দেশিকা জারি করছে রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর। এরপর সংশ্লিষ্ট অ্যাকাউন্টে রাজ্য ও কেন্দ্রের টাকা জমা পড়বে। মোট তিন কিস্তিতে এই প্রকল্পে টাকা দেবে সরকার।
তবে শহরাঞ্চলে উপভোক্তাকে ২৫ হাজার টাকা জমা রাখতে বলা হলেও গ্রামাঞ্চলে কোনও টাকা দিতে হয় না। গ্রামাঞ্চলের উপভোক্তাদের তরফে যাতে কোনও অভিযোগ না ওঠে, তা খেয়াল রাখতে ১৫ দিন অন্তর প্রকল্পের কাজ পর্যালোচনা করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরকে।
‘বাংলার বাড়ি’ প্রকল্পে, গ্রামের উপভোক্তাদের দেওয়া হয় ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা এবং জঙ্গলমহলের ক্ষেত্রে ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে বলে ঘোষণা করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা দেয় ৬০ শতাংশ টাকা আর রাজ্য সরকার দেয় ৪০ শতাংশ।

Comments are closed.