রাফালের থেকেও বড় দুর্নীতি প্রধানমন্ত্রী ফসল বিমা যোজনা, রিলায়েন্সের মুনাফা কোটি কোটি টাকাঃ পি সাইনাথ

রাফালের চেয়েও বড় কেলেঙ্কারি হয়েছে প্রধানমন্ত্রী ফসল বিমা যোজনায়। বিস্ফোরক মন্তব্য সিনিয়র সাংবাদিক পি সাইনাথের। শুধু মন্তব্য করাই নয়, কৃষক আন্দোলনের প্রথম সারির এই সমাজকর্মী রীতিমতো উদাহরণ দিয়ে বুঝিয়েও দিয়েছেন, কেন তিনি ফসল বিমা যোজনায় দুর্নীতির আশঙ্কা করছেন।
বর্তমান সরকার পুরোপুরি কৃষক বিরোধী। ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে প্রধানমন্ত্রী ফসল বিমা যোজনায় দুর্নীতির পরিমাণ রাফালকেও ছাড়িয়ে যাবে, বলে মন্তব্য এই সিনিয়র সাংবাদিকের। রিলায়েন্স এবং এসারের মতো কয়েকটি কর্পোরেটের হাতে দেওয়া হয়েছে বিমা করার সম্পূর্ণ দায়িত্ব। সংবাদ সংস্থা আইএএনএস সূত্রের খবর।
কেন তিনি এমন বলছেন, তা স্পষ্ট করতে গিয়ে মহারাষ্ট্রের উদাহরণ দেন সিনিয়র পি সাইনাথ। তিনি বলেন, প্রায় ২.৮০ লক্ষ কৃষক সোয়া চাষ করেছিলেন। ফসল বিমার কিস্তি হিসেবে একটি জেলায়, কৃষকরা ১৯.২ কোটি টাকা জমা করেছেন। জেলা পিছু রাজ্য সরকার এবং কেন্দ্রীয় সরকার বিমায় ভর্তুকি দিয়েছে ৭৭ কোটি টাকা করে। সব মিলিয়ে একটি জেলা থেকে বিমার প্রিমিয়াম বাবদ রিলায়েন্স ইনস্যুরেন্সের কাছে জমা পড়েছে ১৭৩ কোটি টাকা।
সাইনাথ বলেন, মহারাষ্ট্রে সোয়া ফলন নষ্ট হওয়ার পর বিমার টাকা মিটিয়ে দেয় রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্স। বিমা বাবদ রিলায়েন্সকে একটি জেলায় দিতে হয় ৩০ কোটি টাকা। সিনিয়র সাংবাদিকের প্রশ্ন এখানেই। তাঁর অভিযোগ, এক টাকাও বিনিয়োগ না করে কেবলমাত্র বিমা চুকিয়েই রিলায়েন্সের ভাঁড়ারে ঢুকেছে ১৪৩ কোটি টাকা। এবার সবকটি জেলার হিসেব করে দেখুন, বুঝবেন ঠিক কত টাকার ব্যাপার, বলছেন পি সাইনাথ।
অনিল ধীরুভাই আম্বানী গ্রুপের রিলায়েন্স জেনারেল ইনস্যুরেন্স নিয়ে আগেও বিতর্ক হয়েছে। জম্মু-কাশ্মীরে সরকারি কর্মীদের বাধ্যতামূলকভাবে রিলায়েন্স সংস্থার বিমাই করাতে হবে বলে নির্দেশ দিয়েছিল রাজ্য সরকার। এর পরই বিতর্কের ঝড় ওঠে। সরকারি বিমার সুবিধা থাকতেও কোনও সরকার এভাবে বেসরকারি সংস্থার হয়ে সওয়াল করতে পারে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন তোলে বিরোধীরা। বিতর্কের মুখে রাজ্য সরকারের নির্দেশ খারিজ করেন রাজ্যপাল।
পি সাইনাথের অভিযোগ, ভারতীয় জনতা পার্টির সরকার কৃষক আত্মহত্যার তথ্য গোপন করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। তাঁর মন্তব্য, বর্তমান সরকার চায় না কৃষক আত্মহত্যার তথ্য প্রকাশ্যে আসুক। ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরোর কাছে ১৯৯৫ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত কৃষক আত্মহত্যার তথ্য রয়েছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, এই দু’দশকে দেশে ৩.১০ লক্ষ কৃষক আত্মঘাতী হয়েছেন। কিন্তু তারপর থেকে সরকারিস্তরে আর কোনও তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না, অভিযোগ পি সাইনাথের।

Comments are closed.